Monday, June 4, 2012

নোনা গল্প -- অরুণাচল

কৃতজ্ঞতা: লিঙ্ক
জানলায় শপিংমলের
উঁকি দিই। সন্ধ্যা হলে।
শহরের বাবু-বিবির
সাজানো স্বপ্নশিবির।
ওখানে ঠাণ্ডা হাওয়ায়
খুঁজলে সব পাওয়া যায়।
আলোরা দেখাচ্ছে নাচ;
শব্দ? মধ্যে তো কাঁচ!
জানলা ময়লা হবে –
কাচে নাক ঘষলো বুঝি!
দারোয়ান মারতে এলো
আমি নই রাজা উজির।
মা শুয়ে আর. জি. করে,
মেঝেতে নোংরা ঘরে।
হাতে সূচ স্যালাইন টানে।
কি জখম? কুমির জানে।
রাত্তির ভোরের বাঁকে –
আঁধারে সূর্য লাগে,
তখুনি জোয়ার আসে,
থই থই কলোচ্ছাসে।
নোনা জল নদীর উঠোন
মীন ভাসে একটা দুটো
কাদাতে হাঁটু গাঁথা –
দুহাতে জালের দড়ি,
জোয়ারের উল্টো মুখে
হেঁটে যায় শুভঙ্করী।
কমিরও তক্কে ছিলো,
রাত্তির খিদের বাঁকে,
মা যখন ধরছিল মীন,
জাপটে ধরলো মা কে।
ধরা কি অতোই সোজা!
মরণের ধূর্ত্ত চোখে,
বিঁধে যায় মায়ের লড়াই।
নদীটি উজাড় শোকে।
রক্তে রক্ত মেশে,
সে কুমির পালায় শেষে।
সাথে যায় আধখানা পা।
প্রাণটা দারুণ হাঁপায় –
নিঃশ্বাস তাল বেতালে,
শহরেরে হাসপাতালে।
তাইতো থাকছি পড়ে
তোমাদের এই শহরে।
মা আমার অঙ্গবিহীন
আর তো ধরবে না মীন।
এবারে জোয়ার বেয়ে,
হাঁটবে মায়ের মেয়ে।
কাদাজল ঢেউকে ঠেলে
যদি মীন আবার মেলে!
নোনা জল জন্মভূমির
সাপ আর কামট, কুমির,
থাকে থাক। জীবন আছে!
সেঁকে নিই পেটের আঁচে
দুহাতে একখানা জাল
পেলে ফের যুদ্ধ কামাল!
সেই জাল খুঁজবে বলে,
তোমাদের শপিং মলে
উঁকি দ্যায় সুন্দর বন
হে শহর!
অবাক হলে?
_____________________________________________________________________
সত্যিটা: মা (এঁর কাজ ছিল নদীর বুক থেকে 'মীন' অর্থাৎ বাগদা চিংড়ির বাচ্চা সংগ্রহ করা) কুমীরের কামড়ে আহত হয়ে আর.জি.করের বারান্দায় শুয়ে। সঙ্গে তাঁর অসহায় মেয়ে...
--------------------------------------------------------------------------------------------------------

অনেক বছর আগে (২০০৪-০৫ নাগাদ) আমরা কিছু অত্যুৎসাহী বালক একটি পত্রিকা প্রকাশ করি। সেটি একমেবাদ্বিতীয়ম। তার নাম ‘ঐকিক’। এই কবিতাটি সেখানেই প্রথম প্রকাশিত। 

About Us | Site Map | Privacy Policy | Contact Us | Blog Design | কথা তো বলার জন্যেই