Monday, June 25, 2012

দশগোল্লা -- আগন্তুক


প্রতিভাদেবীর আসনে আসীন হবেন কে? নানা মুনির(!) নানা মত। তবে যত মত তত পথ কিন্তু দেখা যাচ্ছে না। বাঙালির
যাত্রাভঙ্গ করতে নিজের নাক কাটতেও রাজী আরেক বাঙালি। শেষ অবধি বেশ ‘মুলায়ম’ দাওয়াই দিলেন দিল্লীশ্বর। জন্মশত্রু ফেসবুককে কাজে লাগিয়েও সুবিধে হলো না ‘ইস্ট’ ইন্ডিয়া কোম্পানির। যদিও নব্য ব্র্যান্ড অ্যাম্বাস্যাডারের বুলি এখনও দিদির মুখে “পিকচার অভি বাকী হ্যায়...”
চাকরিবাকরি-উন্নয়নে, ব্যবসাপত্রে ফেল। থাকার মধ্যে থাকল শুধু সোনার আই পি এলো। দুইমাস ধরে সব কাজ ছেড়ে হাড্ডাহাড্ডি ফাইট- সোনার ফসল উঠলো ঘরে, জিতল শেষে নাইট। মহাকরণে বিজয়োৎসব কাজকর্মে ব্রেক- উত্তরীয়, ফুলের বৃষ্টি, হাতে হাতে ‘সন্দেক’। শেষ খবরে শুনতে পেলুম উতল হল মন- কলকাতাতে ফুটবলেতেও নামছে নাকি ডন।
বিশ্বজোড়া বেকারত্বের সমস্যা ঘুচলো বলে। ইন্টারনেটে কর্মখালি’র বিজ্ঞাপন। চাকুরীদাতা সংস্থাঃ আল কায়দা। ট্রেনিং সেন্টারঃ পাকিস্থান, আফগানিস্থান, ইরান ও ফ্রান্স। পোস্টিং: ভারত, আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও ইজরায়েল এ। দায়িত্বঃ ইসলাম বিরোধী সন্দেহভাজনদের জাহান্নম যাত্রা করানো। বেতনঃ অফুরন্ত পুণ্য এবং বেহেস্তে হুর(পরী)দের ‘পরিষেবা’।
টাকার নোটে চশমা চোখে উঁকি মারতেন মিষ্টি- নো মনোপলি, চলবে নাকো এইসব অনাসৃষ্টি। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বলল ‘বাপু’ আর কতকাল হবে? ময়লা নোটে মুখ দেখানোর সবাই সুযোগ পাবে। শিবাজী থেকে পণ্ডিতজী ভারতগর্ব যারা- এমনকী সেই বংশগুণে আসবেন ইন্দিরা। ডলার ক্রমেই উঠছে বেড়ে টাকার বাজারে ফাঁকি- টাটা বিড়লার মুখ সেঁটে দেখি সুবিধে হচ্ছে নাকি।
আগে জানা ছিল লজ্জাই নাকি নারীর ভূষণ। এখন দেখা যাচ্ছে বসন-ভূষণ এসবই নারীর লজ্জা। খানের টিম জেতায় তাই সেই লজ্জা ত্যাগ করলেন পুনম কাপুর। ধোনির টিম জিতলে, ওবামা ভোটে হারলে বা গাছের পাতা নড়লেও তিনি অন্য কিছু করতেন বলে মনে হয় না। বিদেশ আগতা সানি লিওন-সাবধান! প্রতিদ্বন্দ্বীর অভাব নেই এখানেও।
মেডিকেলে র‍্যাঙ্ক আছে-ভালো ছেলে অতি। প্রাইভেট প্র্যাকটিসে কিবা আছে ক্ষতি? রুগী আসে ফিরে যায় শুনে ঠাঁই নাই। সয়ে সয়ে জনগণ দিলেন ধোলাই। অভিমানে ডাক্তার সুকুমারমতি- পুরোন অস্ত্র আছে ‘কর্মবিতি’। ‘বাবা-বাছা’ বৃথা গেল বৃথা অনুনয়। হুমকিতে কাজ হল মন্ত্রের প্রায়। ছাঁটাই করব নাকি? সরকার হাঁকে। মুখ বুজে কাজে ফিরে গেল একডাকে।
রাজ্যপাট উঠে যেতেই রাজ-পারিষদদের অবস্থা করুণ। মমতামাখানো শক্তিশেলে লক্ষ্মণ জেলে। কবর ফুঁড়ে উঠে আসছে পুরোন সব মামলা। বচনবাগীশ অনিল বসুও বিষম বিপাকে। বিরোধী নেত্রীর চরিত্র নিয়ে অকথা কুকথা বলেছিলেন একদা, আর তাকেই কিনা দুর্নীতির অভিযোগে বহিষ্কার করল ‘কৃতঘ্ন’ পার্টি। বুর্জোয়া চক্রান্ত- নিঃসন্দেহে।
কথায় বলে “(কু)কর্ম করিয়া যাও, ফলাফলের (দুঃ)চিন্তা করিও না”। এই দেববাক্যি স্মরণ করেই ‘রাজা’মশায় দু-তিন(হাজার কোটি) টাকা পকেটে পুরেছিলেন। শেষরক্ষা হয়নি। মন্ত্রিত্ব খুইয়ে হাজতবাস সেরে ঘরে ফিরলেন এই সেদিন। তবে রাজকীয় প্রত্যাবর্তনই বটে। ২০ কিলো ওজনের ফুলের মালায় বরণ করল জনতা। প্রেরণার উৎস হিসেবে কি?
রেখার পর শচীন। রাজ্যসভার সাংসদ পদে শপথ নিলেন। হাসিমুখে ছবি তুললেন। তারপর সরকারের বদান্যতা প্রত্যাখ্যান করে করদাতার পয়সায় তৈরি বিলাসবহুল বাংলো ফিরিয়ে দিলেন। স্পষ্টই জানালেন অপচয়ের বিরোধী তিনি। অমনি সাড়া পড়ে গেল দিকে দিকে। উক্ত অপচয়কারীরা সাফাই গাইলেন নানা রকমের। কেউ বললেন জনসংযোগ কারো অজুহাত দূরত্ব- ঠাকুরঘরে কে রে?...
সোনার মেডেল ছিল, ছিল যশ-খ্যাতি, লুকোন খবর ছিল গোপনীয় অতি। ক্রীড়াবিদ নামে তারে জেনেছিল দল-বারবার দিনরাত ফাঁকিতে সফল। বিজ্ঞান কুপোকাৎ, যুক্তিও বাজিমাত। নারী নাকি নর তিনি সাক্ষাৎ। হৈ হৈ চারদিক, ইতিউতি ধিক্‌ ধিক্‌। দেখেশুনে ভয় হয়, মনে পড়ে কবিতায় “এতো মেয়ে মেয়ে নয়……নিশ্চয়”

About Us | Site Map | Privacy Policy | Contact Us | Blog Design | কথা তো বলার জন্যেই