Monday, July 9, 2012

কলকাতার গলিনামচা -- সুশোভন প্রামাণিক


শঙ্খ ঘোষ আর কলকাতার গলিকে কেমন যেন আমার সমার্থক মনে হয়। প্রথম লাইনেই এমন কথা দেখে নিতান্তই ঘেঁটে ঘ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা
যথেষ্ট। কিন্তু সত্যি বলতে কি, তাঁর লেখা এবং কবিতার চলমানতার মধ্যে অনেকখানি অংশ জুড়ে আছে গলি, বা কলকাতার গলি। তাঁর গদ্য সংগ্রহে 'কবিতার মুহূর্ত'তে তিনি বলেন 'আমি গদ্য লিখি শান্ত হয়ে বসে, আর কবিতার ভাবনা গুলো মাথায় নাড়া চাড়া করে রাস্তাঘাটে বা গলির বাঁকে বাঁকে নানা জিনিস দেখতে দেখতে' সবার আগেই তো মনে পড়ে সেই লাইন গুলো
'একলা হয়ে দাঁড়িয়ে আছি / তোমার জন্যে গলির কোণে / ভাবি আমার মুখ দেখাবো / মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে'
বা শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের কবিতার একটা খণ্ডাংশ...
‘পুরোনো গলির মধ্যে মজ্জমান মাতালের হাসি/ আত্মীয় বর্জিত ন্যাকরা চোরা ছায়া কিংবা পাতকুয়ো সাহসী বর্ষার তৈরি চটঢাকা জানলাতে ঝুল / মনে পড়ে মাকে কিংবা বাবাকে বকুল’
গলিময় কলকাতায় একই ভাবে সব গলিতে নির্ভীক বেড়ালেরা ঘুরে বেড়ায়। বারান্দায় ছাদগুলোয় একই রকম জামাকাপড় শুকোয়। কলকাতা যতটা রাজপথের, তার থেকে অনেক বেশি গলির। উত্তর বা দক্ষিণ ভেদাভেদ না করেই শোভাবাজার, শ্যামবাজার, বেলগাছিয়া, কুমোরটুলি, বাগবাজার থেকে একবারে দক্ষিণে ঢাকুরিয়া, গড়িয়াহাট বা যাদবপুর - গলির সংখ্যা কম নয়।
এক সময় এই অদম্য গলি-প্রেমে পড়ে কলকাতার সব থেকে প্রাচীন গলি খোঁজার চেষ্টা করেছিলাম। বাগবাজার, কালীঘাট আর শিয়ালদহ অঞ্চলের গলি প্রতিযোগিতার দৌড়ে অন্যদের থেকে অনেক এগিয়ে। কারণ কলকাতার সব থেকে প্রাচীন পায়ে চলা পথ, যাকে 'ওল্ডপিলগ্রিম রোড' বলা হত, সেটা বাগবাজার গঙ্গার ঘাট থেকে শুরু করে বর্তমান রবীন্দ্র সরণী হয়ে বেন্টিঙ্ক স্ট্রিট, জওহর লাল নেহেরু রোড, মুখার্জি রোড, শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রোড হয়ে পূর্ণ সিনেমা হলের পাশ দিয়ে কালীঘাট রোড হয়ে কালীঘাট মন্দিরে গিয়ে শেষ হত।
তখনকার একমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম ছিল জলপথ। নৌপথে আসা তীর্থযাত্রীদের যেহেতু হাঁটা শুরু হত বাগবাজার ঘাট থেকে, সেহেতু এই দুটো অঞ্চলে একটা জনবসতি গড়ে উঠেছিল। আর সেই সময় জনবসতি মানেই গলি। ঠিক একই ভাবে শিয়ালদহ অঞ্চলের জনবসতি গড়ে ওঠে। কারণ, কলকাতার ব্যবসায়ীদের বর্তমান জি.পি.ও থেকে শুরু করে লালবাজার স্ট্রিট, বৌবাজার স্ট্রিট থেকে বৈঠকখানা অঞ্চলে এসে একটা অঞ্চলে শেষ হত। সেখানে একটা বাড়িতে ছিল ব্যবসায়ীদের আস্তানা।
আবার সেই কবিতার সরণীতে আসি। শঙ্খ ঘোষ লিখেছেন 'এ কলকাতার মধ্যে আছে আর এক কলকাতা/ সেটা দেখতে শিখুন' এই পঙক্তি পড়ে খুশি তে মন ঝলমল করে উঠেছিল। মনে হয়েছিলো তিনিও আমার মত গলির পথিক।
আমার গলি ভ্রমণের সূত্রপাত কৈশোরের রঙ ছড়ানো দিনে। সবে কৈশোর শেষে গলার স্বর পাল্টেছে, পৌরুষের লক্ষণ গুলো ক্রমশ গাঢ় হচ্ছে আর সেই সাথে সিগারেট ফোঁকার দিন শুরু হয়েছে। নেশাটা কে একটু জাঁকিয়ে ধরার চেষ্টা করছি। তাই বড়রাস্তা ছেড়ে সুখটান দেওয়ার জন্যে গলিপথের পথিক হওয়া শ্রেয় মনে হল। এস.এন ব্যানার্জি ধরে তালতলা হয়ে বাঁ দিকের ড. লেনে ঢুকে পড়লেই চিন্তা শেষ, ধোঁয়ার স্বর্গরাজ্য। সেদিন এক বিচিত্র জগতে সন্ধান পেলাম, বলা ভালো নতুন এক জগতের সম্মুখীন হলাম। যে জগতের সাথে রোজকার আমার দেখা জীবনযাপনের, সমাজের কোন মিল নেই। তারপর থেকে 'গলি সাফারি' আমার একটা নেশায় পরিণত হল। সিগারেট এর নেশাটা সঙ্গী মাত্র। কিন্তু দ্বিতীয় নেশাটা মজ্জায় মজ্জায় জাঁকিয়ে ধরল।
বেগার বক্স লেন, গোলতলা লেন, রথতলা, ধর্মতলা বাজার স্ট্রিট- হাঁটতে হাঁটতে এক সময়ে মনে হত ভারতীয় উপমহাদেশের অন্য এক দেশে যেন 'হাজার বছর ধরে পথ হাঁটিতেছি'
এবার একটু গলির ইতিহাসের দিকে চোখ রাখি। পুরানো কলকাতার ইতিহাস থেকে জানা যায় ১৭০৬ সালে সুতানুটি, কলকাতা, গোবিন্দপুরে গলির সংখ্যা ছিল মাত্র দুটো। ১৭২৩ এ গলির সংখ্যা ছিল ৮ টি। ১৭৪৬ সালে বড় গলি ছিল সংখ্যা ছিল ৪৬ এবং ছোটো গলির সংখ্যার ছিল ৫৪। এভাবে গলির সংখ্যা ক্রমশ বাড়তে থাকে ১৭১৭ সালে মোঘল সম্রাট ফারুক শাহের আমলে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কে কলকাতা সংলগ্ন ৩৩ টা গ্রাম কেনার অনুমতি দিয়েছিলেন। যদিও শহরায়নের যুগে আজ ৩৩ টা গ্রাম হারিয়ে গেছে। কিন্তু বেশিরভাগ নামে আজ-ও কিছু রাস্তা বা গলি বয়ে চলেছে সেই পুরনো ঐতিহ্যের ইতিহাস। যেমন সুরা লেন, চৌরঙ্গী লেন, সিমলা স্ট্রিট, কাঁকুড়গাছি রোড, ট্যাংরা রোড। মার্কুড ও বেলি সাহেবের বানানো তৎকালীন কলকাতার ম্যাপে এই গলিগুলির উল্লেখ তখনও ছিল।
দক্ষিণ কলকাতার গলি-কালচার কে টেক্কা দিয়ে বেড়েছে উত্তর ও মধ্য কলকাতার গলি-কালচার। সারা পৃথিবীতে খাদ্য-বিলাস ও খাদ্যাভ্যাস নিয়ে দাদাগিরি করা বাঙালির অভ্যেস, কিন্তু বহির্বিশ্বে কেউ জানলো না যে কলকাতার খাদ্য-বিলাস কি জিনিস। কলকাতায় এক সময়ে নয়জন বিখ্যাত খানসামার নামে গলি ছিল। ছকু খানসামা লেন, চমরু খানসামা লেন, পাঁচু খানসামা লেন, করিম বক্স খানসামা লেন, নিমু খানসামা লেন, মিসরী খানসামা লেন, পিরু খানসামা লেন, গদাই খানসামা লেন। আর আমাদের প্রিয় শহরে ফলের নামে যত গলি আছে পৃথিবীর আর কোথাও আছে কি? যেমন নারকেল বাগান, কলাবাগান, বেলতলা।
খাবার দাবারের কথা বলতে গিয়ে মনে হল আমাদের কলকাতার অলিতে গলিতে কিন্তু খাবারের পীঠস্থান। রকমারি খাবার- মিষ্টির দোকান, আলুর চপ, ঘুগনি, ডিম সেদ্ধ, মোমো আরো নানা রকমের খাবারে আমাদের রসনার পূর্ণ তৃপ্তির জন্যে আমরা হেঁটে বেড়াই, হেঁটে বেড়াচ্ছি। অথচ আমরা, বাঙালিরা নিতান্ত ঘরকুনো। আর এই নিয়ে বাঙালির প্রবল আত্মশ্লাঘা। তা না হলে প্রাচী সিনেমার পাশের কচুরি দোকান বা ডিম গলি বা পরোটা গলি কবে বিশ্ব খাদ্য-মানচিত্রে স্থান করে নিত। এই ফাঁকে আরো দুটো কথা বলে রাখি, লেক মার্কেটের পাশের গলির চপের দোকান যেখানে স্বয়ং সুনীতি কুমার চট্টোপাধ্যায় নিত্য 'খরিদ্দার' ছিলেন; বলরাম ঘোষ স্ট্রিটের প্যান্থেরাসের দোকান বা নলিনী সরকার স্ট্রিট দিয়ে ঢুকে হাতিবাগান গলির পেছনে চায়ের দোকান; আবার লেক মার্কেটের ভেতরে রাঁধু বাবুর চায়ের দোকানে উত্তম কুমার থেকে কলকাতা ভ্রমণে আসা রাজ কাপুর প্রত্যেকেই এক সময়ে নিয়ম করে চা খেতে আসতেন।
গলির প্রেম নিয়ে মনে হয় যেন- আমাদের ছোটো গলি চলে এঁকে বেঁকে \ বাঁকে বাঁকে ঘিরে তার অনুভূতি থাকে। আমাদের এক বিখ্যাত কলমচি/সাহিত্যিক বলেছিলেন-
'বাঙালিরা প্রেমিক-প্রেমিকারা হাঁটতে হাঁটতে যতদিন না সমস্ত গলি শেষ করে ফেলে ততদিন বিছানায় যায় না'
প্রেম করার সময় সকলের কেমন একটা যেন বিশ্বাস থাকে (এমনকি আমারও ছিল) যে গলি দিয়ে হাঁটলে তাদের আর কেউ দেখতে পাবেনা। তাই তারা বিয়ের আগে বড়রাস্তা দিয়ে কম, গলি দিয়ে বেশি হাঁটে। শুধু তাই নয়, নিতান্ত দূরত্ব কমানোর জন্যে, নতুন রাস্তা চেনার জন্য অথবা উদ্দেশ্যহীন ভাবে হেঁটে বেড়ানোর জন্য, অন্তহীন হেঁটে চলাই গলির লক্ষ্য। আর এ সবের আদর্শ জায়গা হলো ভবানীপুর অঞ্চলে সুবিন্যস্ত গলির ঝাঁক। যেমন কান্সারিপারা লেন থেকে গোবিন্দ বোস লেন সেখান থেকে মদন পাল লেন, বিজয় বোস লেন সেখান থেকে কাটোয়া খাটি লেন, তেলিপাড়া রোড, রূপনারায়ণ নন্দন লেন, কুণ্ডুপাড়া লেন হয়ে নন্দন রোড। অথবা টালিগঞ্জ থানার পাশ দিয়ে প্রতাপাদিত্য রোড থেকে কৃত্তিবাস লেন। কেওড়াতলা শ্মশান, চেতলা ব্রিজের আগে যে বাস্তুহারা বাজারের গলি বা হিউং রোড।
গলি যে সব সময় ভালো দিকে নিয়ে যায় তা নয়। মাঝে মাঝে বিড়ম্বনাও হয়। একবার শিয়ালদহ-এর ডিম গলিতে আর একবার সোনাগাছি তে পর পর দুবার। আমার মগজের গলি-মানচিত্রের জি.পি.এস সিস্টেম ফেল করেছিল। ফলস্বরূপ বড় রাস্তায় আসি এবং শর্টকাট করতে গিয়ে প্রায় এক কিলোমিটার বেশি হাঁটতে হয়। আর দ্বিতীয়বার পুলিশের তাড়া খেয়েছিলাম।
গলির একটা আটপৌরে মানচিত্র যেন মাথার মধ্যে সব সময় হেঁটে বেড়ায়। আমার চোখ বন্ধ করলেই যেটা মনে পড়ে, সেটার আয়তন অনেকটা ইংরেজি অক্ষর এল (L) এর মত। একটা জায়গায় আচমকা গলিটা শেষ হয়ে যায়, যাকে বলে অন্ধ গলি। নকশাল আন্দোলনের সময়ে এই অন্ধগলির ভূমিকা ছিল অসামান্য। আন্দোলনকারীরা পুলিশকে ঠকিয়ে এই গলিতে এনে ফেরার রাস্তা বন্ধ করে একের পর এক বোমা ছুড়ে যেত।
সব মিলিয়ে এক একটা গলি প্রায় ১০০ ফুট লম্বা, কোন কোন জায়গায় পাঁচ ফুট মত চওড়া। গলিতে তিন চারটে মুখ বন্ধ ড্রেন থাকে। পড়শিদের মধ্যে নিয়মিত বাক্যালাপ না থাকলেও, ড্রেন উপচে পড়লে সবাই চিত্কার করে। সকাল বিকেল একটা জলপড়া কল থাকে, সেখানে লম্বা লাইন। গলির বউ থেকে বৌদিদের জাতীয় পোশাক নাইটি। আর ওই কলেই তাদের গণস্নান থেকে শুরু করে বাসন মজা কাপড় কাচা সবই চলে। সকাল সন্ধ্যে ঝামেলা চলে উনুন ধরানো বা আঁচ দেওয়া নিয়ে। কারণ উনুনের ধোঁয়া একতলার বাসিন্দাদের জীবনে ঝুল-কালি ভরে দিচ্ছে বলে চিত্কার শুরু হয়।  কিছু কাল পরে সেই অশান্তি আরো চরমে ওঠে- কেউ উনুনে জল ঢেলে দেয় কেউ উনুন ভেঙে দেয়।
প্রত্যেক গলিতে দাপিয়ে ক্রিকেট ফুটবল খেলা হয়। যতই বাসিন্দাদের আপত্তি থাক, 'কুছ পরোয়া নেহি'। তাই বল কারোর বাড়ির কাঁচ ভাঙ্গে, কারোর টব উল্টে দেয়, কারোর বেড়ালের গায়ে গিয়ে লাগে। পাড়ার সুন্দরীরা যখন রাস্তা দিয়ে যায় তখন খেলার সংলাপ পাল্টে যায়। কেউ বলে 'খেলা থামা রে! উনি যাবেন' মেয়েটি হন হন করে মাথা নিচু করে হাটতে থাকে আর বাকিরা একটু... অনেক সময় খেলা থামে না। 'যেতে হলে খেলার মধ্যে দিয়ে যাও, এখন হবেনা'। এইরকম গলি ক্রিকেটে লোকজন যখন ফুলহ্যান্ড বল করত তখন অবাক হয়ে দেখতাম আর ভাবতাম- ওয়াসিম আক্রম বা কোর্টনি ওয়ালস কি এর থেকেও জোরে বল করে? গলির জায়মান আবছায়া আলোর মধ্যে কত লোক যে শ্যাডো প্র্যাকটিস করে তখন তাদের ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্নের সাক্ষী থাকা অন্য অভিজ্ঞতার জন্ম দেয়, যা কেবল ওই মনকেমন-এর বিকেলগুলো জানে।
গলি ক্রিকেটে মোটামুটি একটা আইন আছে (আই.সি.সি অনুমোদিত নয়) যেটা 'ওয়ান ওয়াল ক্যাচ' নামে একটা আউট। অর্থাৎ একটা বল যদি দেওয়ালে লেগে ফিল্ডারের হাতে আসে সে আউট।
রবিবার সকালগুলোতে গলি ক্রিকেটের উন্মাদনা ক্যারিবিয়ান বিচ ক্রিকেট বা অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট কে হার মানাবে। গলিতে আরো দুটো খেলা আছে গলির মোড়ে তাসের আড্ডা আর ক্যারাম। প্রত্যেক গলির কিছু পেটেন্ট মুদি-দোকান থাকে যেখানে মাসকাবারি বাজার করতে এসে অনেকের দেখা অনেকের চোখা-চোখি হয়।
গলির পাশে রকের আড্ডা বাঙালির রন্ধ্রে থাকা এক অভ্যেস তবে আজ সে আড্ডা পি.এইচ.ডি-এর বিষয় হয়ে উঠতে চলেছে। কারণ কলকাতার গলির সাধারণ ধর্ম থেকে আড্ডার প্রসঙ্গ ক্রমশ উবে যাচ্ছে।
সারাদিন  ধরে গলিতে ফেরিওয়ালার হাঁক। কখনো বাসনওয়ালি, কখনো ফুলওয়ালি, শিলকাটা, শান দেওয়া, মালাই, বরফ, সকালবেলা বা বিকেলে বোষ্টমির কেত্তন। আর ঘুমনোর আগে সবাই জানতে পারত 'ফুল লোড' হয়ে আশা হারু-কা, বুড়িদির বাবাকে বোঝাচ্ছে যে ভদ্র সমাজে বাস করতে গেলে নিজের স্ত্রী কে কোন গালাগালগুলো শোনাতে হয়, আর কোনগুলো উচ্চারণ করতে নেই । অথবা তুমুল ঝামেলা শোনা যায়, পরেরদিন সকালে গর্বিত মুখের গিন্নি কলে এসে বলেন 'কাল আমার সোয়ামি একটু ডিরিন্ক করে এসে আমায় একটু মারছেল তাই...'
অবশেষে থামতেই হবে। হ্যাঁ গলি রোম্যান্সের অধরা মাধুরী কিন্তু কম নয়। আবছায়া অন্ধকারে দাঁড়িয়ে হঠাৎ জড়িয়ে ধরা বা ঠোঁটে ঠোঁট ছুঁয়ে যাওয়ার অনুভূতি অন্যরকম। বিশের মেয়ের সঙ্গে বেমলার ছেলের একতলা দোতলার মধ্যে প্রেম ও পরিণয়, পাশের বাড়ির পন্টের সঙ্গে চড়ু-র একই গল্প। বরযাত্রী আর কন্যাযাত্রীদের মধ্যে কে কোথায় যাবে এই নিয়ে সূক্ষ্ম কনফিউশন থাকায় 'বাড়ি থেকে পালিয়ে' (ঋত্বিকের সিনেমা নয়, গলির বিয়ের ধরন) যেত এবং এক মাথা সিঁদুর মেখে ফিরে আসত।
এত ঘুরেও এখনও, আজও একটা প্রশ্নের উত্তর হাতড়ে চলেছি। সব গলিতেই কি নৈঃশব্দ্য আর অন্ধকার একরকম?

About Us | Site Map | Privacy Policy | Contact Us | Blog Design | কথা তো বলার জন্যেই