Thursday, August 23, 2012

একা-দশী -- আগন্তুক

সখী বিচার কাহারে বলা? সে কি শুধুই টাকার খেলা? তোমরা যে শুধু ফেসবুকে কর নিন্দে ও কানাকানি। তাই গোসা করে দিদিমণি নাহয় একটু ধমকে দিয়েছে, নাহয় করেছে মানা, তাই বলে দেখ একি অবিচার! দিতে হবে জরিমানা? শুনতে পেলুম মহাকরণে - বিচারের বাণী “নীরবে” গোপনে। না জানি কি করে চুপচাপ বসি- কান্না? নাকি সে অট্টহাসি?

একের পর এক নারী নির্যাতনের ঘটনায় দেশ ও রাজ্যের সমাজ বিপর্যস্ত। মানুষ আবার
তার আদিম রিপুর দাসানুদাস। মান এবং হুঁশ দুই-ই খুইয়ে “প্রকৃতি” এবং “প্রত্যয়” উভয় দিকেই কাঙাল। কাজেই হাতে রইল পেন্সিল, থুড়ি হাতকড়ি। চাপান-উতোর, কোর্ট-কাছারি এবং কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি। রমণীকুল যে তিমিরে সেই তিমিরেই

এক জাতি এক প্রাণ- মিথ্যে সাম্যগান ট্রেন ভরা উদ্বাস্তু ফিরছে আপন ‘দেশ’। মিছে আশ্বাস বৃথা অনুনয় ভয় শুধু বিদ্বেষ। পাক সন্ত্রাস-বন্দুকে নয়, অন্তর্জাল- সেখানেও হয়। গুজব ছড়িয়ে দাঙ্গা বাধানো সত্যি ভীষণ সোজা। সংবিধানের বড় বড় বুলি-গণতন্ত্রের বোঝা। নিজের মধ্যে কতটা আঁধার, কতটুকুই বা আলো? তার চেয়ে বরং পরের ঘাড়ে দোষ চাপানোই ভাল।

তোমার ‘পতাকা’ দাও যারে তারে বহিবারে দাও শক্তি। মডেল ‘গেহেনা’ শক্তি প্রদর্শন করলেন ভালোভাবেই। শুধুমাত্র পতাকা পরিধান করে লজ্জা(!) নিবারণ(!) করলেন। তেরঙ্গার ফাঁক থেকে উঁকি দিল মধ্যযুগীয় (বলা ভালো প্রস্তরযুগীয়) ‘স্বাধীনতা’। নড়ে চড়ে বসল গোটা দেশ। হাতকড়ি নিয়ে ধেয়ে এল দেশরক্ষীরা। মুখরোচক স্বাধীনতা দিবস উপভোগ করলেন দেশবাসী।

ব্যাট ছেড়ে দিয়ে হঠাৎ করেই গোসাঘরে দোর বন্ধ। সিনিয়রদের প্রবল নিন্দে হিংসায় তারা অন্ধ। বুড়ো বয়সেতে আর কেন বাবা, কচিকাঁচাদের বিভীষণ- শুনতে শুনতে বিরক্ত হয়ে বানপ্রস্থের decision নির্বাচকরা হতবাক আর বিস্মিত জনগণ-এখনও বিঁধছে শক্তিশেল, চলছে সে রামায়ণ। পাত্রটুকুই বদলেছে শুধু- নাম “V.R.S” লক্ষ্মণ।

দিল্লি শ্মশানঘাটে No Vacancy নোটিশ। যে সে শ্মশানঘাট নয়, এ যে রাজঘাট সেখানে ‘শক্তিস্থল’, ‘বীরভূমি’ ইত্যাদি বহুবিধ নামে চিতাবশেষ অধিকার করে স্বমহিমায় বিরাজ করছেন গান্ধী পরিবার। ঐ ‘রাজ’পরিবার বহির্ভূতরাই বা ছাড়েন কেন। দেশের ‘সেবা’ তো তারাও করেছেন। কাজেই কেবা ‘আগে’ প্রাণ করিবেক ‘দান’- তারই লাগি কাড়াকাড়ি। বিরক্ত দিল্লি পৌরসভা তাই নতুন শ্মশানের সন্ধানে।

আবার শারদোৎসব সমাগত। মুখে হাসি নেই প্রথম বাঙালি রাষ্ট্রপতির। রাইসিনা ছেড়ে মিরিটির বাড়িতে এবার চণ্ডীপাঠ নাকি প্রশ্নের মুখে। দশভুজার স্তুতি কতটুকু হয় জানা নেই- কিন্তু সংবাদমাধ্যমের খোরাক হয় যথেষ্টই। তাহলে কি রাইসিনাতেই সকাল সকাল ‘অকাল’বোধন? প্রাক্তন চাণক্যর সহাস্য জবাব- তাহলে একমাত্র দশভুজাই বোধহয় বাঁচাতে পারেন ‘ইমপিচমেন্টের’ হাত থেকে। দুগ্‌গা দুগ্‌গা।

মূল্যবৃদ্ধি হচ্ছে বলে- দিল্লি’র পরে রাগ কর? তোমরা যে সব মুখ্যু মানুষ চাষির খাবার লুঠ করো-তার বেলা? আনাজ পত্র আক্রা হলেই কৃষকের ঘরে লক্ষ্মী- এটুকু জাননা? স্বার্থপর, তোমাদের আর দোষ কি? মন্ত্রীমশাই, আর যেসবের দাম বাড়তিছে নিত্য, মনে তো হয় না-চাষির স্বার্থে, তোমারই বাড়ছে বিত্ত- তার বেলা?

মহা ধূমধামে স্কুলশিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা হল রাজ্যে। শেষে প্রশ্ন এলনা, বিশৃঙ্খলা। একগাদা অভিযোগ এবং কিছু কেন্দ্রে আবার পরীক্ষার ঘোষণা, এর পরেরটুকুও সবার জানা। এই নিয়ে একটি জনস্বার্থ মামলা, এবং ‘মামলার ফল’- আবার পরীক্ষা। সম্ভবতঃ ঘটতে চলেছে এটিই। পরীক্ষাও হলো- নিয়োগের বালাই-ও থাকলো না। স্ফীত হলো শুধু ভোটব্যাঙ্ক।

১০
সংসদ ক্রমাগতই laughing club হওয়ার দিকে। নতুনতম খোরাক দিলেন সংসদীয় কার্যমন্ত্রী। স্কুল পালানো গ্রাম্য বালকের মত চুপিচুপি উপাধ্যক্ষকে বলতে গিয়েছিলেন-“আর কেন স্যার, আজকের মতো ছুটি দিন”- উন্নত মাইক্রোফোনের ঠেলায় শুনে ফেললো গোটা দেশ। যাক, কাজ নিয়ে নাটক করার চাইতে এই বরং ভাল- দেশবাসীর অভিমত।

About Us | Site Map | Privacy Policy | Contact Us | Blog Design | কথা তো বলার জন্যেই