Wednesday, June 21, 2017

সান্দাক্‌ফু-র পথে: প্রথম কিস্তি -- তিতাস

আশ্বিনের শেষে ফুরিল বাজনা-বাজি। মন খারাপ। পুজোর ছুটি শেষ, তবুও কোথাও ঘুরতে যাওয়া হলো না। অনেকদিনই হয়নি। শীতের ছুটিতে না হয় কোথাও একটা যাওয়া যাবে! খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম আমার কিছু বন্ধুরা মিলে যাচ্ছে বরফের দেশে, জানুয়ারি মাসে। গন্তব্য দোদিতাল, গাড়োয়াল রেঞ্জ, উদ্দেশ্য ট্রেকিং। সুযোগ পেয়ে আমিও জুড়ে গেলাম। এই দলের সাথে আগেও একবার ট্রেকিং এ গিয়েছিলাম, Vally of Flowers এ। এবার এলাহাবাদ থেকে যাত্রা শুরু ছয়'ই জানুয়ারি। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকেই আমার দিন গোনা শুরু। কিন্তু ভাগ্যদেবতা ঠিক প্রসন্ন ছিলেন না। নতুন বছরের প্রথম দিনেই শীতলাদেবী দিলেন আশীর্বাদ। শীতের আমেজের মধ্যে বসন্তের উপদ্রব! আমার ঘুরতে যাওয়া বাতিল, বাকি বন্ধুরা যথা সময়ে রওনা দিলো। বসন্তের প্রকোপে সাময়িক ভাবে কাবু হয়ে ঠিক করলাম, সুস্থ হলেই বেরিয়ে পড়বো, কোথাও একটা। সপ্তর্ষিদা’র (Himalaya Trekkers এর কর্ণধার) সাথে কথা বলে ঠিক হলো, সান্দাক্‌ফু যাবো। ব্যবস্থা পুরোটাই করবে Himalaya Trekkers। ভালোই হবে, এই সুযোগে একটু বাড়িও (শিলিগুড়ি) ঘুরে আসা যাবে। ঘরের কাছেই, তবুও কোনোদিন আর যাওয়া হয়ে ওঠেনি। ঘুরতে যাবার আনন্দে শরীরও সুস্থ হয়ে উঠল খুব তাড়াতাড়ি। চব্বিশে জানুয়ারি ট্রেন ধরলাম শিলিগুড়ির উদ্দেশ্যে। সব ঠিক, পঁচিশে বাড়ি, আর ছাব্বিশে সকাল-সকাল হিমালয়ের পথে। সপ্তর্ষিদা’র থেকে জানতে পারলাম, সঙ্গে আরো তিনজন সহযাত্রী। অজিত আর এইমার আসছে ব্যাঙ্গালোর থেকে, আর মধুরা মুম্বাই থেকে। অচেনা সহযাত্রীদের সাথে, আপাত-একাকী এই আমার প্রথম “অ্যাডভেঞ্চার”! বেশ রোমাঞ্চকর!

২৬শে জানুয়ারি: শিলিগুড়ি থেকে চিত্রে

একা একা ভ্রমণের তৃপ্তি যে কতোটা, সেটা আগে কখনো অনুভব করিনি। আজকে সারাদিনই মনের মধ্যে একটা অচেনা শিহরণ খেলা করে গিয়েছে। সকালবেলা বাড়ি থেকে বেরোতে বেরোতে আটটা। যাবো মানে-ভঞ্জন হয়ে চিত্রে। আজকে ওখানেই থাকতে হবে, বাকিদের সাথে ওখানেই দেখা হবে। শিলিগুড়ির তেনজিং নোরগে বাসস্ট্যান্ড থেকে ভাড়ার জিপ নিলাম পশুপতির উদ্দেশ্যে। ভারত-নেপালের সীমান্ত পশুপতি, মিরিক পার করে আর পনেরো কিমি। পশুপতি পৌঁছতে দুপুর বারোটা বেজে গেলো। আকাশ বেশ পরিষ্কার, মিরিকের পথে গাড়ি থেকেই ‘ঘুমন্ত বুদ্ধ’র (Sleeping Buddha) দেখা মিলেছে। এই সৌন্দর্য ভাষায় বলা যায় না, পর্যটক মাত্রই জানেন। সফর বেশ ভালোই হবে মনে হচ্ছে, অন্তত পূর্বাভাস তাই বলছে। পাহাড়ের মায়াময় ফুরফুরে বাতাসে মন বেশ আহ্লাদিত, দৈনন্দিন জীবনের চিন্তা-ভাবনা ততক্ষণে মনের গভীরে লুকিয়ে পড়েছে। পশুপতি থেকে ভাড়ার মারুতি ভ্যান পেয়ে গেলাম, নামলাম সুখিয়াপোখরি। সেখান থেকে স্থানীয় ভাড়া গাড়িতে পনেরো মিনিটের মাথায় পৌঁছে গেলাম মানে-ভঞ্জন। পাহাড়ের গায়ে ছোট্ট একটা গ্রাম, একদিক ভারতে আর অন্যদিকটা নেপালে। আমাদের গাইডের সাথে এখানেই দেখা হওয়ার কথা। ঘড়িতে তখন দুপুর দেড়টা। একটু এদিক-সেদিক খোঁজ নিয়ে পরিচয় হলো তেন্‌জির সাথে, ইনিই আমাদের গাইড। মানে-ভঞ্জন থেকে চিত্রে তিন কিমি পথ। স্থানীয় ভাড়া গাড়ি পাওয়া যায়, আবার হেঁটেও যাওয়া যায়। ঠিক করলাম ট্রেকিং এ যখন এসেছি, তখন হেঁটেই যাবো। বাকি ট্রেকারদের সাথে বেশ গল্প করতে করতে বেরিয়ে পড়লাম। তেন্‌জি থেকে গেলো মানে-ভঞ্জনেই। মধুরা আজ দার্জিলিং থেকে আসছে, ওকে নিয়ে তেন্‌জি গাড়িতে চলে আসবে চিত্রে। অজিত আর এইমার আসবে বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে, ওদের পৌঁছতে পৌঁছতে বিকেল হয়ে যাবে। আজকের পথ মাত্র তিন কিমি হলেও বেশ চড়াই, প্রথমে একটু অসুবিধাই হচ্ছিল। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই অ্যাডভেঞ্চারের নেশায় বুঁদ হয়ে শরীরে নতুন বল পেলাম। পথে কিছু স্থানীয় মানুষজনের সাথে আলাপও হলো। তারাও আজ সবাই মিলে যাচ্ছে চিত্রে, ছাব্বিশে জানুয়ারির পিকনিক আছে কিনা! এইভাবে গল্প-গুজবে দু’ঘণ্টা লেগে গেলো চিত্রে পৌঁছতে। চিত্রেকে লোকালয় না বলে লোকালয়ের প্রেতচ্ছায়া বলা ভালো। থাকার মধ্যে পাহাড়ের কোলে দু-তিনটে বাড়িঘর আর একটি প্রাচীন বৌদ্ধমঠ। তেন্‌জি আর মধুরা আগেই চলে এসেছে গাড়ি নিয়ে। এখানে আমাদের থাকা Hawk’s Nest নামের এক হোমস্টে তে। থাকার ব্যবস্থা বেশ ভালো, মানুষজনও খুব অতিথি পরায়ণ। হোমস্টের সামনের ফাঁকা মাঠে তখন ছাব্বিশে জানুয়ারির পিকনিক বসেছে, বেশ হইচই। এক কাপ চা খেয়ে, একটু জিরিয়ে নিয়ে, তেন্‌জি আমাদের নিয়ে গেলো বৌদ্ধমঠ দেখাতে। চিত্রের এই বৌদ্ধমঠটি বাকি মঠগুলোর মতোই, তবে আয়তনে বেশ বড়। একটু বেলা পড়ে আসতে, আমরা তিনজনে মিলে সামনের একটা ছোট পাহাড়ের মাথায় উঠলাম, সূর্যাস্ত দেখবো বলে।

সূর্যাস্ত১ - চিত্রে
ততক্ষণে দিনের তাপমাত্রা অনেক কমে গিয়েছে, মাঝেমাঝেই হাড় কাঁপানো একটা বাতাসের ঝটকা কানের পাশ দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে। এই পাহাড়ের মাথায় দাঁড়িয়ে দূরে কোনো এক শহরের সান্ধ্যকালীন রোশনাই চোখে পড়লো, দার্জিলিং হবে হয়তো।
দিগন্তে তখন গোধূলির লাল আভা আর দূর-পাহাড়ের নীল-সবুজ রঙ খেলা করে বেড়াচ্ছে। রঙ-বেরঙের বৌদ্ধ প্রার্থনা-পতাকাগুলোও নেচে-খেলে বেড়াচ্ছে বাতাসের তালে তালে। ছবি আঁকতে পারলে এখানেই রঙ-তুলি নিয়ে বসে পড়া যেতো, ঘণ্টার পর ঘণ্টা। বিশ্বপ্রকৃতির এই শান্ত অথচ অব্যক্ত প্রতিকৃতি ফেলে কোথায় আর যেতে ইচ্ছে করে! সর্বক্ষণের সাথী ক্যামেরাটি সঙ্গেই ছিলো, ছবিও তুলে নিলাম কয়েকটা। যদিও সেগুলি প্রকৃতির এই সৌন্দর্যের সুবিচার করতে পারবে কিনা, জানা নেই!
সূর্যাস্ত২ - চিত্রে
নিচে নামতে নামতে খেয়াল হলো অন্ধকার প্রায় ঘনিয়ে এসেছে, ঠাণ্ডাও পড়েছে তেমনি! এসে দেখি বাকি ট্রেকাররা মিলে কিছু শুকনো কাঠ ও গাছের ডালপালা জোগাড় করে বেশ বনফায়ার এর আয়োজন করেছে। কনকনে ঠাণ্ডার মধ্যে আগুনের এই উত্তাপ বেশ আরামপ্রদ। আকাশে তখন শতকোটি তারা একসাথে ঝিকমিক করছে। আজকাল শহুরে পরিবেশে একসাথে এতো তারার দেখা মেলা ভার।
চিত্রে
ঘণ্টা খানেকের মধ্যে দেখি এইমার আর অজিতও এসে পড়লো, সরাসরি বাগডোগরা থেকে গাড়ি নিয়ে। পরিচয়ও হলো খুব তাড়াতাড়ি। রাতে খাবার টেবিলে সবাই মিলে বেশ একটা আড্ডা বসলো আমাদের, আমাদের মানে মধুরা, এইমার, অজিত, তেন্‌জি আর আমি। অজিত আর এইমার ইঞ্জিনিয়ার, চাকরি সূত্রে বাঙ্গালোরে। মধুরা মুম্বাইতে থাকে, ওখানেই মাইক্রোবায়োলজিতে মাস্টার্স করছে। রাতেই ঠিক হলো, কাল সকাল ঠিক আটটায় যাত্রা শুরু করবো। কালকের গন্তব্য টুমলিং, চিত্রে থেকে প্রায় নয় কিমি।

২৭শে জানুয়ারি: চিত্রে থেকে টুমলিং

সফরের দ্বিতীয় দিনেই প্রকৃতি আমাদের এতো আপন করে নেবে, ভাবতে পারিনি। প্রথমবার পাহাড়ের কোলে তুষারপাত চাক্ষুষ করার যে আনন্দ, তা কথায় প্রকাশ করতে পারবো না, তাই কিছুটা হলেও ক্যামেরাবন্দি করে সুবিচারের চেষ্টা করেছি। সারাদিন পাহাড়ের গায়ে হেঁটে চলা, বিকেলের তুষারপাত, রাতের আড্ডা, গানবাজনা- সব মিলিয়ে জমজমাট ছিলো আজকের দিন।
সূর্যোদয় - চিত্রে
ভোরবেলা তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে দেখি, আকাশের মুখ ভার। কালকের মতো ঝলমল পরিষ্কার নয়, ভালোই মেঘ জমেছে আকাশের কোণে। চারিদিকে একটা প্রশান্তির ছোঁওয়া, কালকের সেই চপলতা আজ সকালে উধাও। মনে হলো শহরের কোলাহল থেকে শত-যোজন দূরে, এই স্নিগ্ধ ভোরের জন্যেই তো এখানে আসা! মনের মধ্যে ঘুম ভেঙে উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে হারিয়ে যাওয়া শৈশব, রবি ঠাকুরের বলাই এর কথা হঠাৎ মনে পড়ে যায়। সকালের এই বিস্ময় কাটিয়ে, বেরোতে বেরোতে প্রায় ন’টা বেজে যায়। চিত্রে থেকে সান্দাক্‌ফু অবধি সরাসরি মোটরগাড়ির রাস্তা আছে, প্রায় তিরিশ কিমি ব্যাপী। ভারত-নেপাল সীমান্ত বরাবর চলে গিয়েছে এই রাস্তা, মাঝেমাঝে ভারতে আবার পরক্ষণেই নেপালে। সে এক অনন্য অনুভূতি।
টুমলিং এর পথে১
পঞ্চাশ-ষাঠের দশকে তৈরি পুরোনো কিছু ল্যান্ড-রোভার চরে বেড়ায় এই রাস্তায়, অনেকটা সেই বিমলের জগদ্দলের মতো। আমরা এই রাস্তা ধরেই কিছুটা এগিয়ে পাশের পায়ে-চলা পথে উঠে এলাম। এই পথে মোটরগাড়ির রাস্তার মতো অত বাঁকও নেই, আবার ধুলোবালি আর গাড়িঘোড়ার ঝামেলাও নেই। তবে চড়াই ভালোই আছে। তখন আমার আত্মবিশ্বাসের পারদ একশো ছুঁইছুঁই, সবার আগে হেঁটে চলেছি পাহাড় ডিঙিয়ে, সাথে এইমার। অজিত মাঝে, আর শেষে মধুরার সাথে তেন্‌জি।
টুমলিং এর পথে২
দূরে তখন মেঘের ফাঁক দিয়ে উঁকি দিচ্ছে বরফে ঢাকা হিমালয়। এভাবে প্রায় ছয় কিমি চলার পর আমরা এসে পৌঁছলাম এক ছোট্ট জনবসতিতে, নাম মেঘমা। আকাশে তখন মেঘেদের দল খেলা শুরু করেছে, বৃষ্টি আসন্ন। ঘড়িতে বাজে প্রায় একটা।
মেঘমা
তেন্‌জির কাছ থেকে জানলাম, আজ আমাদের দুপুরের খাওয়া এখানকারই এক স্থানীয় হোটেলে। এখানেই আলাপ হয় বর্ফির সাথে। বর্ফি পারিশ্রমিকের বিনিময়ে ব্যাগপত্র বয়ে দেওয়ার কাজ করে। ওর আসল নামটা আর জানা হয়নি। সারা পাহাড় ওকে এই নামেই চেনে। কানে শুনতে আর কথা বলতে পারে না বলেই হয়তো ভালোবেসে সবাই এই নাম দিয়েছে, ওই রণবীর কাপুরের সিনেমা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে। কথা বলতে না পারলেও ওর চোখে-মুখে একটা তীব্র অভিব্যক্তির প্রকাশ লক্ষ্য করেছিলাম। একটুতেই কি প্রাণ খুলে হাসতে পারে লোকটা! কিছুক্ষণের আলাপেই মনে হয় যেন কতকালের চেনাশোনা! এরকম খাঁটি মানুষ আর কখনো দেখবো কিনা জানি না।

মেঘমা থেকে রাস্তা দু’ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছে। ডানদিকের ভাগ উঠে গিয়েছে টংলুর দিকে, আর আমরা যাবো বাঁদিক দিয়ে। এখান থেকে আর প্রায় দু’কিমি গেলেই টুমলিং
টুমলিং এর পথে৩
বর্ফিকে পেয়ে আমরা আর অপেক্ষা করলাম না মধুরা আর তেন্‌জির জন্য। এইমার, অজিত আর আমি তাড়াতাড়ি বেরিয়ে পড়লাম, পথপ্রদর্শক বর্ফি। দু’কিমি পথ যেতে আমাদের সময় লাগলো মাত্র এক ঘণ্টা। টুমলিং এও থাকার ব্যবস্থা বেশ ভালো। অজিত, এইমার আর আমি একই ঘরে ছিলাম। আমাদের এই লজ্ এর সামনে থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে পাওয়ার কথা, কিন্তু এখন সবই মেঘে ঢেকে আছে। সুযোগ পেয়ে আমরা এই ছোট্ট জনবসতির এদিক-সেদিক ঘুরে-ফিরে দেখে নিচ্ছিলাম। কিছুক্ষণ পরে দেখি হঠাৎ মাথার ওপর দু’তিন ফোঁটা বৃষ্টির জল। জল তো নয়, এতো বরফ! পাহাড়ের মাথায় তখন তুষারপাত শুরু হয়েছে। অন্যসব ট্রেকারাও কৌতূহল বশে বেরিয়ে পড়েছে। কেউ কেউ তুষারপাতের মধ্যে দাঁড়িয়ে চটপট ছবিও তুলে নিচ্ছে বিভিন্ন রকমের পোজ দিয়ে।
টুমলিং
তুষারপাতের এই আকস্মিক বিস্ময় আর উত্তেজনা কাটতে একটু সময় লাগলো। একটু অন্ধকার নামলে দেখি আমাদের লজ্ এর ড্রয়িং রুমে বেশ আসর জমেছে। আগুনের আঁচের চারদিকে জড়ো হয়ে, কেউ তখন ভাটিয়ালির সুরে আসর মাতাচ্ছে, আবার কেউ জুড়ে দিয়েছে দেশ-বিদেশের গল্প। অনেকের সাথেই আলাপ হলো বেশ, কেউ আমাদের মতোই যাবে সান্দাক্‌ফু, আবার কেউ এখান থেকেই ফিরে যাবে। একটু পরে তেন্‌জিও একটা গিটার হাতে আমাদের সাথে যোগ দিলো। নেপালি গানের সুরে চারিদিক মাতোয়ারা হয়ে উঠল ধীরে ধীরে।
গিটার হাতে তেন্‌জি
শেষে জন ডেনভার- “Country roads… take me home… to the place… I belong”। শুনতে শুনতে বিভোর হয়ে মনে হচ্ছিল West Virginia নয়, এই প্রকৃতির কোলে, এই আন্তরিক পরিবেশটাই হলো প্রকৃত স্বর্গ!


পরের পর্ব>>

About Us | Site Map | Privacy Policy | Contact Us | Blog Design | কথা তো বলার জন্যেই