১
পলের বাবা-মা ওর ছোটবেলায় ওকে অন্য অনেকের মতোই
পিয়ানো শিখতে বাধ্য করেছিলেন। সে বয়সে কি আর অত শান্ত সুর ভাল লাগে? নিয়ম করে
রেওয়াজই বা কাঁহাতক সহ্য হয়! তাই সে চেষ্টা বৃথা গেল। বেশ খানিকটা বড় হয়ে, নানা
ঘাটের জল খেয়ে, নিজের দেশ উটায় ফেরত আসার আগে নতুন করে প্রেমে পড়তে হলো- ডিজিটাল
পিয়ানোর প্রেম। নেহাত শখেই পিয়ানো, আর তার নানা ঘুপচি খবর জেনে ফেললো পল। তবে
আমাদের অনেকের মতোই সে সব জানা ওর কোন কাজে লাগেনি। দেশে ফিরে ও কাজ নিলো এক পানীয়
জল সরবরাহ করে, এমন সংস্থায়।
ওর যাতায়াতের রাস্তায় একটা ইয়ামাহা পিয়ানোর দোকান
পড়ে। সেখানে জল পৌঁছে দিয়ে একদিন ও বসে নতুন ক্ল্যাভিনোভা ডিজিটাল পিয়ানোয় টুংটাং
করছিল, এমন সময় এক ভদ্রলোক দোকানের দরজা খুলে ভেতরে এসে ওকে জিজ্ঞেস করলেন এই
যন্ত্রটা কি?(আহা, আমাদের সঙ্গে এরকম হয়না কেন! মাঝেমাঝে মনে হয় না, যে বিষয়ে
গুচ্ছের জেনে গেছেন, যেটা খুব বেশি ভালবাসেন, তা নিয়ে কেন কেউ একটাও প্রশ্ন
করেনা?) লাফিয়ে-ঝাঁপিয়ে পল দেখাতে শুরু করলো ক্ল্যাভিনোভা ঠিক কি আর কত মজার কাজ
করতে পারে। কিছুটা যন্ত্রের গুণে, আর বেশ খানিকটা ওর ছোঁয়াচে উৎসাহে উৎসাহিত হয়ে
ভদ্রলোক কিনেই ফেললেন জিনিসটা। মনে রাখবেন, দেশটা আমেরিকা হলেও আর যন্ত্র ডিজিটাল
হলেও- একখানা পিয়ানো বেচে ফেলা কিন্তু চাড্ডিখানি কথা নয়! দোকানের মালিক যারপরনাই
খুশি হয়ে পলকে দোকানে চাকরির প্রস্তাব দিলেন আর পলও এককথায় রাজি হয়ে গেল!
রাজি হওয়ার কারণ আছে। ওই দোকানেই এক সোনালি চুলের
কন্যে কাজ করেন- যার সঙ্গে দু-দণ্ড আলাপ করার ইচ্ছে পলের অনেকদিনের।