ফুটনোট সাধারণত লেখার শেষে দেওয়া হয়। তবে আমি প্রাণের ভয়ে
আগেই দিয়ে রাখছি। কে জানে যদি কেউ লেখাটা পড়তে পড়তে মাঝ পথেই বিরক্ত হয়ে উঠে চলে
যায়। আমার এই লেখা খুবই হালকা ভাবে লেখা। এটি পড়ে যদি আমার কোন পাঠিকা বিশেষ করে
আমার পরম পূজনীয়া এবং শ্রদ্ধেয়া প্রেমিকা ঠাকরুন কুপিতা হন তাহলে তার জন্য প্রথমেই
মার্জনা চেয়ে রাখছি। এই পুরো লেখাটিকেই আমার বাচালতা ধরে অবজ্ঞা করবেন তাহলে। বাকি
ফুটনোট লেখার শেষে।
গ্রাহকরাও এর সুযোগ নিয়ে ইচ্ছে মতো ফোন করে গেছেন সেই
সময়ে। যেটা তাঁরা বোঝেননি তা হল যখন ভাড়া বাড়বে, তখনও এই মোবাইল কোম্পানিগুলি
নিজেদের মধ্যে পাল্লা দিয়েই ভাড়া বাড়াবে! আর হয়েছেও ঠিক তাই। প্রায় এক ধাক্কায়
বিভিন্ন মোবাইল কোম্পানি তাদের কলের ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছেন অনেকটাই। বিপদে পড়েছেন
সাধারণ মানুষ!
আর তার পরেই দেখা গেছে যে ফোনে মিসড্ কলের সংখ্যা প্রচুর
বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে পুরুষদের ফোনে। এর কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে এক
সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা গেছে যে একজন পুরুষের ফোনে আসা মোট মিসড্ কলের ৮৭
শতাংশই আসে তাঁদের প্রেমিকাদের কাছ থেকে। মোবাইলের ভাড়া বৃদ্ধির পর বর্তমানে
অধিকাংশ মহিলাই আর তাঁদের প্রেমিকদেরকে ফোন করে ঝাড়তে আগ্রহী নন।
তাঁদের বক্তব্য, তাঁদের প্রেমিকদের
প্রাপ্য ঝাড় দিতে গিয়ে তাঁদের পকেটের পয়সা বেরিয়ে যাক তা তাঁরা মোটেই চান না,
আর সেইজন্যেই তাঁরা মিসড্ কল্ দেন যাতে তাঁদের প্রেমিকরা তৎক্ষণাৎ
তাঁদের ফোন করেন।
এ প্রসঙ্গে মিস্ মোনালিসা বললেন,
"আপনিই বলুন, আমার বয়ফ্রেন্ড লাস্ট সানডে আমার সঙ্গে দেখা না করে টিভিতে ইন্ডিয়া-পাকিস্তান ক্রিকেট ম্যাচ দেখেছে! ওকে ধরে চাবকানো উচিত, তার বদলে ফোন করে ঘণ্টা দু’য়েক ওকে বোঝাবো- কেন ওর ক্রিকেট ম্যাচ ছেড়ে আমায় নিয়ে ফোরামে ঘুরতে যাওয়া উচিত ছিল, সেটাও কি নিজের পয়সায় করব? আর ইউ ম্যাড!! তাই দিলাম মিসড্ কল্, ৬টা মিসড্ দেওয়ার পর ধরল, সুতরাং ওকে এটাও বোঝাতে হল যে, আমাকে প্রথম মিসড্ কলের পরেই ফোন করা উচিত ছিল ওর। এইসব করতে গিয়ে ঘণ্টা চারেক লাগল।"
"আপনিই বলুন, আমার বয়ফ্রেন্ড লাস্ট সানডে আমার সঙ্গে দেখা না করে টিভিতে ইন্ডিয়া-পাকিস্তান ক্রিকেট ম্যাচ দেখেছে! ওকে ধরে চাবকানো উচিত, তার বদলে ফোন করে ঘণ্টা দু’য়েক ওকে বোঝাবো- কেন ওর ক্রিকেট ম্যাচ ছেড়ে আমায় নিয়ে ফোরামে ঘুরতে যাওয়া উচিত ছিল, সেটাও কি নিজের পয়সায় করব? আর ইউ ম্যাড!! তাই দিলাম মিসড্ কল্, ৬টা মিসড্ দেওয়ার পর ধরল, সুতরাং ওকে এটাও বোঝাতে হল যে, আমাকে প্রথম মিসড্ কলের পরেই ফোন করা উচিত ছিল ওর। এইসব করতে গিয়ে ঘণ্টা চারেক লাগল।"
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মিস্ মোনালিসার ভাগ্যবান প্রেমিক
তাঁর টিভির সমস্ত খেলার চ্যানেল বাদ দিয়ে দিয়েছেন এবং লিখিত দিয়েছেন যে, এর জন্য কেউ তাঁকে কোনো প্রকার জোর করেননি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে পুরুষদের ফোনে আসা মিসড্ কলের বাকি
১৩% তাঁদের মা বা বসের কাছ থেকে যেগুলো তাঁরা তাঁদের প্রেমিকার সঙ্গে কথা বলতে
গিয়ে বা সানি লেওনের লেটেস্ট ভিডিও দেখতে ব্যস্ত থাকায় ধরতে পারেন না।
এই কারণেই মোবাইল কোম্পানিগুলো এনেছে এক নতুন প্ল্যান!
সমস্ত প্রেমিকাদের মাথায় রেখে সযত্নে বানানো হয়েছে প্ল্যানটি। এই প্ল্যান অনুযায়ী
প্রেমিক-প্রেমিকারা একসঙ্গে গিয়ে তাঁদের মোবাইল কানেকশান নিতে পারেন যার ফলে
পরবর্তীকালে প্রেমিকা ফোন করলেও সেই ফোনের খরচা প্রেমিকের বিলেই যোগ করা হবে। এই
যুগান্তকারী প্ল্যানটি চালু করার সঙ্গে সঙ্গেই মিসড্ কলের সংখ্যা অনেকাংশেই হ্রাস
পাবে বলে মোবাইল কোম্পানিগুলির দাবি।
গৃহবধূ শ্রীমতী মহীয়সী মালাকার বললেন, “আমার স্বামীকে অফিসের কাজে প্রায়ই বাইরে বাইরে ঘুরতে হয়। এর আগে অনেক সময়ই
আমি মিসড্ কল্ দিলে উনি ফোন করতেন না, বলতেন, নেটওয়ার্ক ছিল না, তাই এই নতুন প্ল্যান আমার পছন্দের
যাতে আমিই ওনাকে ফোন করতে পারব এবং খেয়াল রাখতে পারব... খরচের কথা না ভেবে।”
আমি অনেক চেষ্টা করেও খুব বেশি পুরুষের মতামত জোগাড় করতে
পারিনি। তাঁদের অধিকাংশই মুখে একটি করুণ হাসি ঝুলিয়ে রেখেছেন এবং কোন প্রশ্ন করলেই
তাঁরা ভারতের প্রধানমন্ত্রীর মতো মুখ বন্ধ রেখে শুধু একটি স্মিত হাসি দিয়ে কাটিয়ে
যাচ্ছেন।
অনেক কষ্টে এক কলেজ পড়ুয়া প্রেমিককে রাজি করাই, নাম-ছবি গোপন রাখা হবে এই শর্তে সে কথা বলতে রাজি হয়। অত্যন্ত হতাশ কণ্ঠে
সে জানায় যে, এতদিন তার হাতখরচার সঙ্গে সঙ্গে তার বাবার
জামার পকেট থেকে কিছু কিছু টাকা সে না বলে সরিয়ে দিত, কিন্তু
এই নতুন প্ল্যানের দরুন এখন থেকে তার দাদার জামার পকেট থেকেও নিয়মিত টাকা সরানোর
দরকার পড়বে। একাধিক প্রেমিকা হলে সে কি করবে এটি যখন সে বলতে যাচ্ছিল সেই সময়েই
তার ফোন বেজে ওঠে এবং সে তৎক্ষণাৎ সেই ফোন ধরে বোঝাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে যে কেন তার
ফোন ধরতে চার সেকেন্ড দেরি হয়েছে।
এই প্ল্যানের একটি বিশেষ সুবিধা হল যে, এই প্ল্যানের হাত বদল সম্ভব। আর তাই প্রেমিক-প্রেমিকার ছাড়াছাড়ি হয়ে গেলেও
এই প্ল্যানটি বন্ধ হয়ে যাবে না। বরং প্রাক্তন প্রেমিক বর্তমান প্রেমিককে এই
প্ল্যানটি সামান্য টাকায় বিক্রি করে দিতেও পারবেন।
সব দিয়ে দেখতে গেলে, এটি একটি বিশেষ প্ল্যান
যা জনগণের জন্য অত্যন্ত উপকারী ও সুদূরপ্রসারী হতে চলেছে।
ফুটনোটঃ