Wednesday, July 31, 2013

নারায়ণ দেবনাথের সঙ্গে কিছুক্ষণ* (২) -- মহাস্থবির

<< আগের পর্ব
বাংলা কমিকসের শুরু বলা চলে নারায়ণ দেবনাথের হাত দিয়ে। নব্বই ছোঁয়া প্রাণখোলা মানুষটির সাথে  মনখোলা  আলাপ আলোচনা হয়েছিল দীর্ঘ সময় ধরে। আজ সেই আলোচনার ২য় পর্ব।


নারায়ণ: ...তখন শুকতারা মাসিক পত্রিকা হিসাবে বের হত। কোনও পুজো সংখ্যা বের হত না।  সেই তখন পরিচয় হল সুবোধবাবুর সঙ্গে - কাজ শুরু হল, ছবি আঁকার কাজ। আগে যিনি সম্পাদক ছিলেন, মানে সুবোধবাবু যখন আমাকে পাঠালেন শুকতারা সম্পাদকের কাছে, তিনি আমাকে একটা ছবি আঁকতে দিলেন - মানে একটা স্ক্রিপ্ট বার করে নিজে পড়ে আমাকে খালি লিখে দিলেন এই এই আপনি আঁকবেন।

- আচ্ছা।

-- তাই করলাম। বেশ কিছুদিন  ওই ভাবে করবার পর, তারপর যিনি সম্পাদক হলেন আগে যিনি
৫০-র দশকের পূজাবার্ষিকীর শিল্পী তালিকা।
ছিলেন একজন শিশু সাহিত্যিক তিনি  অবসর নিলেন, তখন ওনাদের ছোট ভাই ক্ষীরোদবাবু  দেখাশোনা করতে লাগলেন সম্পাদনার কাজকর্ম। তিনি আমাকে স্ক্রিপ্ট দিয়ে দিতেন বলতেন পড়ে নিয়ে যেখানে যেখানে  আপনার মনে হবে, ছবি করে দেবেন।

- পড়ে নিয়ে ছবি করতে বললেন...
-- হ্যাঁ, এই ভাবে চলতে চলতে তারপরে (একটু ভেবে)... আগে, কখনও পূজাবার্ষিকীর ছবি আঁকতে দিতেন না। 


Tuesday, July 30, 2013

নারায়ণ দেবনাথের সঙ্গে কিছুক্ষণ* -- মহাস্থবির

নারায়ণ দেবনাথ
বাংলা কমিকসের শুরু বলা চলে নারায়ণ দেবনাথের হাত দিয়ে। নব্বই ছোঁয়া প্রাণখোলা মানুষটির সাথে  মনখোলা  আলাপ আলোচনা হয়েছিল দীর্ঘ সময় ধরে। আজ সেই আলোচনার ১ম পর্ব।

- আচ্ছা, আপনার কাজের শুরু থেকে এই যে দীর্ঘ দিন কাজ করে চলেছেন সেটা কি এই টেবিলে বসেই?

না, ঠিক ঠিক বলতে গেলে...এ বাড়ির পিছনে যে বাড়ি আছে, টিনের চালার বাড়ি - আগে আমরা ওই বাড়িতেই থাকতাম।

- আচ্ছা... 

এই বাড়িতে ভাড়া থাকতাম - আমি জানিনা তবে শুনেছি এই বাড়িতে ভাড়া থাকতাম। তখন একতলা একটা বাড়ি ছিল এটা। পাশে ছিল ফাঁকা একটা জায়গা - তখন তো অজস্র জায়গা ফাঁকা ছিল। তখন আমার বাবা আর কাকা ওই জমিটা লিজ নিয়ে টিনের চালা দিয়ে বাড়ি করেছিলেন। -


- জ্ঞান হবার পর থেকে আপনি ওই বাড়িটাই দেখছেন?

জ্ঞান হবার পর থেকে আমি ওই বাড়িটাই দেখছি। তারপর ওই বাড়ি থেকে এই বাড়িতে চলে এলাম, আর আমার জ্যাঠামশাই ওই বাড়িতে থাকতেন। - 

- আচ্ছা... 

হ্যাঁ, আমাদের বাংলাদেশেও বাড়ি ছিল। - 


- বাংলাদেশের কোন জায়গায়?


Monday, July 22, 2013

সাধের টি-শার্ট, জুজুর আতঙ্ক...অতঃপর... -- শুভ

দোষের মধ্যে দোষ হল আমার ঐ টি-শার্টটা পরা। একটু আঁতলা টি-শার্ট...... সামনের দিকে একটা ছবি... দু'টো মানুষ উল্টোদিকে মুখ করে হাঁটা দিয়েছে...... মাঝামাঝি জায়গায় তাদের হাতদুটো মিলে গিয়ে একটা কলমের নিবের আকার নিয়েছে আর তলায় লেখা 'তুমি আসবে বলে আজও কলম ছাড়িনি'। বুকের উপর আবার বড় বড় করে লেখা 'সংস্কৃতি'। আমরা ইউনিভার্সিটি থেকে পাস করে বেরনোর কয়েক বছর পর 'ফেস্ট' উপলক্ষে বানানো টি-শার্ট। এক বন্ধুর ব্যাগে বেকার পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছিল। পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছিল, তার প্রচুর জামাকাপড়ের মাঝে এটার কোনো প্রয়োজন নেই। আমি আবার কোনো কিছুর অপচয় দেখতে পারি না। তার উপর টি-শার্টটার পিছনে বড় বড় করে ইউনিভার্সিটির নাম লেখা! ইউনিভার্সিটির সাথে সম্পর্ক বহুদিন আগে চুকেবুকে গেলেও এখনও যেটুকু স্মৃতি আঁকড়ে ধরে রাখা যায়, তার কিছুই হাতছাড়া করতে ইচ্ছা করে না। অতএব আমি
সাত-পাঁচ না ভেবেই ওটা হস্তগত করেছিলাম। তা হয়েছে কি...... এই গত সপ্তাহান্তে টি-শার্ট টা পরে জুজু'র (ব্লগের commander in chief) বাড়ি গেছি আড্ডা মারতে। হঠাৎ এ-কথা সে-কথার মাঝে ব্লগের কথা উঠতেই জুজু ঝাঁঝিয়ে উঠল। পরবর্তী কয়েক মিনিটে বাছা বাছা শব্দচয়নে আমাকে যা শুনতে হল তার সারমর্ম এই যে, আমি এই বয়সে এখনও কারও একটা আসার অলীক কল্পনায় দিন গুজরান করছি দেখে সে অত্যন্ত হতাশ হলেও তাতে তার কোন আপত্তি নেই। বরং সেই অলীক কল্পনাসুন্দরী না আসা অবধি আমার কলম না ছাড়ার অঙ্গীকারে সে অত্যন্ত প্রীত। কিন্তু সে অঙ্গীকার শুধুমাত্র ঘোষণায় পর্যবসিত হতে দেখে সে যারপরনাই ক্রুদ্ধ। অর্থাৎ, এই যে গত একবছর (প্রায় আমার টি-শার্টের বয়সের সমসাময়িক) অনন্তকাল ধরে চলতে থাকা ph.d -র কাজের চাপ দেখিয়ে ব্লগের কোনরকম কাজে কুটোটি ভেঙ্গে দু'টোটি না করে এবং দিনের পর দিন post -এর খরা চলাকালীন একটাও লেখা দিয়ে ব্লগকে ধন্য না করে 'আমাদের কথা' পাতায়

Monday, July 15, 2013

Honey, I Shrunk the Pics! (4) -- Saikat

প্রতিশ্রুতি মতো আজ আগের পোস্ট এ দেওয়া ছবিগুলোর উপায় বলবো।

এই উপায়ে ছবি তুলতে কি কি লাগবে?

১) ক্লোজ আপ লেন্স বা ম্যাক্রো লেন্স (লেন্সের গুণমান এবং ফিল্টারের পরিধির উপর ভিত্তি করে দাম ২৫০/- থেকে ৫০০০/-)।




২) টেলিফটো লেন্স (অন্তত ৮৫ মিমি বা তার বেশি)।

আশাকরি আগের পোস্ট গুলো থেকে আপনাদের কাছে এটা পরিষ্কার যে ম্যাক্রো ফটোগ্রাফি তে অন্তত 1x magnification (বা তার বেশি) দরকার। ক্লোজ আপ লেন্স এর এই magnify করার ক্ষমতা কে diopter একক দিয়ে বলা হয়। +১, +২, +৪, +১০ ক্ষমতার ক্লোজ আপ লেন্স পাওয়া যায়। single element এর ক্লোজ আপ লেন্স গুলো এই ৪ রকম diopter ক্ষমতার সেট এ বিক্রি হয়। তবে এগুলোর ছবি গুণগতভাবে খুব একটা ভালো নয় (নিজে ব্যবহার করেই বলছি ভায়া)। double element এর +১০ ক্ষমতার ক্লোজ আপ লেন্স আছে, যেটার দাম ফিলটারের পরিধির উপর নির্ভর করে ৩৫০০/- থেকে ৮৫০০/- হতে পারে (Canon 250D আর Canon 500D। Canon এর DSLR বডির সাথে গোলাবেন না কিন্তু)। শুনেছি এগুলোর ছবি single element এর থেকে ভালো ওঠে।



উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়,

Thursday, July 11, 2013

লালবাতির রূপকথা -- সুশোভন


এই শহরের মানুষ লালবাতি ঘেরা এলাকাগুলোকে বাঁকা চোখে দেখেন। সেখানে যেন রতি এবং রতি ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। ওখানকার মানুষদের রোজনামচার প্রসঙ্গে সমরেশ মজুমদারের লেখা উপন্যাস ‘তিন নম্বরের সুধারানী’-র কথা মনে পড়ে।
একটা সময় পুলিশ দালাল তোলাবাজ বা বাড়িওয়ালার অত্যাচার মুখ বুজে সহ্য করা ছাড়া যৌনকর্মীদের কিছু উপায় ছিলনা। স্মরজিৎ জানা নামের প্রত্যন্ত গ্রামের এক যুবক কলকাতায় এলেন। এক কাহিনীর জন্ম হল, উপন্যাসের মতো ‘কলিকাতায় নবকুমার’। তিনি নিরন্তর চেষ্টা চালালেন আলো জ্বালাবার। ১৯৯৫ সাল, প্রতিষ্ঠা পেলো যৌনকর্মীদের নিজস্ব সংগঠন ‘মহিলা দুর্বার সমিতি’। তার আগে পর্যন্ত সবকিছু ছিল বড় ধুসর। যৌনকর্মীদের দেহের জৌলুস কমলে ভিক্ষা করে বেঁচে থাকতে হতো। তাঁদের ছেলেরা একটা বয়স পার করে মস্তান হত আর মেয়েরা ১৪-১৫ পেরলে এই পেশায় আসতে বাধ্য হতো।

এমন কোনও নিরাপদ স্থান ছিলনা যেখানে তাদের সমস্ত অর্জন সঞ্চয় করে বা লুকিয়ে রাখতে পারে। সেখানকার বেশির ভাগ মানুষ ঠকিয়ে টাকা নিয়ে চলে যেতো। কেউ কিছু বলতে পারতো না। এমন কেউ ওদের পাশে ছিলনা যে অন্য কিছু ব্যবস্থা করতে পারে। ধীরে ধীরে ওঁরা নিজস্ব ব্যাঙ্ক তৈরি করলেন। যার নাম ‘ঊষা কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক’। ওদের জীবনে অন্ধকার কমতে লাগলো।


বিডন স্ট্রীটে লাল আলোর দুনিয়ায় আমাদের এক বন্ধু কদিন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হয়ে শিশুদের পড়াতে গেছিল। তার ভয়াবহ অভিজ্ঞতাটুকু কেবল ভাগ করে নিতে চাই। একটা মাত্র ছোট্ট, এক রত্তি ঘর। তেলচিটে সস্তা পর্দা দিয়ে ভাগ করা। সেখানে এক পাশে বাচ্চাটির ‘অ আ’ পড়ার স্বরের সঙ্গে অন্যপারে রতির শীৎকারের স্বর মিশে যায়। বাড়তি পাওনা ছিলো রোজগারের বখরা নিয়ে ঝামেলা। বা কাস্টোমারের সোহাগের খিস্তি। পর্দার আড়াল থেকে শিশুটি বিস্ময়ে শুনেছে আর দেখেছে আরও কত কিছু।

এই শৈশব কি ওর প্রাপ্য!

Thursday, July 4, 2013

ঋতুবিতান -- রাকা



মুখের যে পাশটায় রোদ পড়ে, সেখানটা চিরসবুজের দেশ। উল্টো দিকটা, স্বভাবতই তুন্দ্রা অঞ্চল।

আজকাল গ্রিল বেয়ে প্রায়ই কিছু না-শীত, না-বসন্ত আশ্চর্য ছায়া নেমে আসে। যারা তাদের চেনে না, তারা ভাবে উল্টোদিকের মাধবীলতা গাছটুকুর ছায়া হয়তো বা। কিন্তু রোদচশমা দিয়ে দেখলে বোঝা যায়, ওরা এক অচেনা প্রজাতি। তাদের হাতে, চুলে, কোমরবন্ধনীতে অন্ধকার সব আকর্ষ, আর কোষের ভেতরে হাজার হাজার বছরের ঘুম। 


তোমারও আছে আয়নাজোড়া আঁখি
নিজেকে বেঁধা লক্ষ সূচিমুখে 
নিজে নিজের হত্যাকারী সেজে
দুঠোঁটে নীল এঁকেছ কৌতুকে

দুই ভ্রূর মাঝখান দিয়ে খাড়া উঠে গেলে আগ্নেয় পাহাড়। উজ্জ্বল টিপ সেখানে দিনরাত্রি কমলারঙের শিখায় জ্বলতে থাকে। অথচ সবাই ভাবত, ও বুঝি মৃত আগ্নেয়গিরি। আর সেই সুযোগে সে আগুনে শান দিয়েছে একটু একটু করে ...


Monday, July 1, 2013

আনন্দবাজার পত্রিকার উপকারিতা -- তপোব্রত

বঙ্গ জীবনের অঙ্গ শুধু বোরোলিনই নয় - আনন্দবাজার পত্রিকাও। গত ৯০ বছর ধরে যে দৈনিক পত্রিকা বাঙালিকে খালি এগিয়েই নিয়ে যাচ্ছে, এই লেখায় তারই সামান্য গুণ-কীর্তন।



প্রতিবেশীর ছেলে বিল্টু ইস্কুলের পরীক্ষায় GK- তে আপনার খোকনকে টপকে যাচ্ছে।
পাড়ার হকারকে বলে রোজ বিল্টুদের বাড়িতে আনন্দবাজার ফেলবার ব্যবস্থা করলেন।
পরের পরীক্ষায় বিল্টু ‘নীল তিমির ডিম ফুটে বাচ্চা হয়’ নিয়ে লিখে GK- তে ১০০-র মধ্যে সাড়ে তিন পেল।


পাড়ার ক্লাবের ছেলেগুলো সবসময় ইউরোপিয়ান ফুটবল নিয়ে আলোচনা করে আর আপনার ফুটবলের ফান্ডা নিয়ে হ্যাটা দেয়। পাড়ার ফুটবল কুইজ জেতা নিয়েও ওদের হেভি ঘ্যাম। পাড়ার ক্লাবে রোজ শুধু আনন্দবাজার রাখার ব্যবস্থা করলেন। 
পরের মাসে পাশের পাড়ার কুইজ থেকে ছেলেগুলো মুখ চুন করে ফিরে এল। জানা গেল, মেসী চেলসির গোলকিপার আর অ্যালেক্স ফার্গুসন ইতালির দল ডর্টমুণ্ডের কোচ বলায় প্রথম রাউন্ডেই নাম কাটা গেছে।



অফিসে লোকজন ক্রিকেট আর আইপিএল নিয়ে কথা বলে বলে আপনার মাথা ধরিয়ে দিচ্ছে। হঠাৎ আনন্দবাজার খুলে ম্যাচ-রিপোর্ট জোরে জোরে পড়তে লাগলেন।
কয়েক মিনিটের মধ্যে ঐ ম্যাচ-রিপোর্ট থেকে আলোচনা ভীমনাগের সন্দেশ, ক্যাটরিনা কাইফ আর রাহুল গান্ধীতে পৌঁছে গেল।



About Us | Site Map | Privacy Policy | Contact Us | Blog Design | কথা তো বলার জন্যেই