Thursday, January 19, 2012

মাংস -- তপোব্রত







ছেলেটা মাংস খেতে ভালবাসে। আজকে বলে নয়, সেই ছোটবেলা থেকেই। এখনও মনে আছে, তার রিক্সা-ওয়ালা বাবা বছরের হাতেগোনা যে কটা দিন
মাংস নিয়ে আসত সেসব দিনে সকাল থেকেই যেন বাড়িতে উৎসব শুরু হয়ে যেত। সে আর তার দিদি বাড়ির সামনের উঠোনটায় নাচতে শুরু করে দিত, বছরের ওই কটা দিন তাদের রুগ্‌ণা মা হাসি মুখে রান্না করতে বসত, আবার খেতে খেতে ভাই-বোনকে ডেকে তার পাতের মাংসের টুকরোটাও ভাগ করে দিত দুজনকে।
সেসব অনেক দিন আগের কথা। মা মারা গেছে সে প্রায় বছর কুড়ি আগে।  পাড়ার হারাধন নাপিতের সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ার ছ’মাস পরে প্রচণ্ড মার খেয়ে ফিরে এসে তার পোয়াতি দিদি গলায় দড়ি দিয়েছিল সেও প্রায় দশ বছর আগের কথা। তবে তার বাবার যত দোষই থাক, দ্বিতীয় বিয়ে
করার ভুলটা সে করেনি। আর মারা যাওয়ার ঠিক আগে টুক করে ছেলের বিয়েটাও দিয়ে দিয়েছিল।
ছেলেটা চিরকালই চুপচাপ, সাত চড়ে রা কাড়ত না। কেউ কিছু বললে পালিয়ে যেত সেখান থেকে। এমনকি দিদি মারা যাওয়ার এক মাসের মধ্যেই যখন হারাধন ফিরে এলো, তখনও সে যায়নি ওর সঙ্গে বোঝাপড়া করতে। মনে মনে হয়তো ভেবেছে দু-একবার, তারপর মনে হয়েছে কি দরকার ঝামেলা করে, দিদিটা তো আর ফিরে আসবে না।
সেই থেকে বরং হারাধনকে দেখলে পাশ কাটিয়ে চলে যেত। প্রথম প্রথম হারাধনও ওকে দেখলে পালানোর চেষ্টা করত, কিন্তু যেদিন বুঝে গেল যে, ছেলেটাই ওকে দেখে পালিয়ে যাচ্ছে সেদিন থেকে তার হালচালই বদলে গেল। ছেলেটাকে আর ওর বাবাকে তো মানুষ বলেই গণ্য করত না, বরং জোর গলায় ওর দিদির চরিত্র নিয়ে অকথা কুকথা বলতেও ছাড়ল না। তার কিছু কিছু ছেলেটার কানেও এসেছিল, শুনে রাগে-ঘৃণায় শিউরে উঠেছিল, কিন্তু গিয়ে প্রতিবাদ করার মত কলজের জোর কোনও কালেই তার ছিল না।
মাথায় বুদ্ধি-শুদ্ধিও বেশি ছিল না, পড়াশুনোটাও হয়নি। ঘুরে বেড়াত এদিকওদিক- তার বাবা একদিন লোকজন ধরে ওকে দিন মজুরের কাজে লাগিয়ে দিল। সেই কাজই করে চলছিল। রোজ সকালবেলা ট্রেন ধরে গ্রামের আরও একদল লোকের সঙ্গে কলকাতা চলে যায় আর রাত্তির বেলা ফেরে। ন্যালা-ক্যাবলা লোক বলে বেশি কেউ পাত্তাও দেয় না তাকে- সেও চুপচাপ থাকে, কি দরকার বেশি কথা বলে।
এইভাবেই চলছিল বছরের পর বছর। ছেলেটার এখন তিরিশের ওপর বয়স। ছেলে না বলে লোক বলাই ভাল।
লোকটার কিন্তু একটা লক্ষ্মীমন্ত বউ ছিল। বরটা একটা নির্বোধ লোক সেটা বুঝেও সে ঝামেলা করত না। বোধ হয় ভাবত, শুধু শুধু চিৎকার-চেঁচামেচি করে ঘরের সামান্য শান্তিটুকু ভঙ্গ না করাই ভাল।
দিন-মজুরের কাজ করলে ঐ দিনে-দিনে রোজগার, কাজে বেরোলে পয়সা, বাড়িতে বসে থাকলে হরি-মটর। সেই করেই দিন কাটে। বিয়ের পর, বছর ঘুরতে না ঘুরতেই লোকটার একটা ছেলে হয়েছিল। ছোট্ট মতন, কালো, কোমরে ঘুন্সি পরা একটা বাচ্চা। সারাক্ষণ মাকে আঁকড়ে ধরে থাকত, লোকটার কাছে খুব একটা যেত না।
তারপরই একদিন সব বদলে গেল। সেটা ছিল শ্রাবণ মাস। টানা বৃষ্টি হচ্ছিল পাঁচ দিন ধরে। বাড়িতে এক দানা চাল বাড়ন্ত, দুধ না পেয়ে বাচ্চাটা ঘ্যানঘ্যান করে চলেছে। এমন অবস্থা যে ওর শান্তশিষ্ট বউটা অবধি ক্ষেপে গিয়ে খিস্তি করছিল ওকে।
বিরক্ত হয়ে বেরিয়ে পড়েছিল ও। ততক্ষণে বৃষ্টিটা ধরেছিল একটু। কিন্তু এই বৃষ্টি-বাদলার মধ্যে কে আর কাজ নিয়ে বসে আছে! কলকাতা যাওয়ার ট্রেন লাইনও জল জমে বন্ধ। উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘুরতে ঘুরতে কখন যেন পাশের গ্রামে চলে গেছিল ও। সেখানে এক জায়গায় দেখল যে, প্রবল বৃষ্টিতে কার একজনের বাড়ির সামনের ঘরটা পড়ে গেছে।
বেশ কিছু লোক কাজ করছিল সেখানে। একজন বয়স্ক লোক যাকে দেখে মনে হচ্ছিল বাড়ির মালিক, সে দাঁড়িয়ে ছিল বাইরে। লোকটাকে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বলল, কি রে, কাজ করবি? ঐ ইঁট-সুরকি পরিষ্কার করতে পারবি? কুড়িটা টাকা দেব।
কুড়িটা টাকায় আজকাল আর কি হয়! তাও যা পাওয়া যায় এই ভেবে নেমে পড়ল সে। কাজও করল সারাদিন। অন্য মজুরদের মত ওরও ২টো শুকনো রুটি জুটল সারাদিনে, যেগুলো পকেটে চালান করে দিল। কাজের শেষে মালিক এসে তাদের বলল, বাড়ির সামনের বারান্দায় এসে দাঁড়া। টাকা আনছি।
সেই টাকা দিতে গিয়েও কত নখরা, কিছুই নাকি কাজ নয়, জলের মত টাকা বেরিয়ে যাচ্ছে নাকি লোকটার। ওর সঙ্গের বাকি মজুরগুলো খুব গজগজ করছিল। ও আর তাদের সঙ্গে কথা বাড়াল না। কি দরকার! ও বরং উঠোনে যে বাচ্চা মেয়েটা খেলছিল তাকে দেখছিল। ওর নিজের ছেলের থেকে একটু বড়ই হবে, বোধহয় বাড়ির মালিকের নাতনি। দেখতে ভালই লাগছিল ওর। হঠাৎ বাচ্চাটা নিজের মনে খেলতে খেলতে দৌড়ে ওর সামনে দিয়ে বাড়ির ভেতরে চলে গেল, আর যাওয়ায় সময় বাচ্চাটার কানের একটা দুল খুলে ঠিক ওর পায়ের সামনেই পড়ল। ও ছাড়া কেউ আর খেয়াল করল না অবশ্য, কি করে করবে, সবাই তো তখন কুড়ি টাকা না পঁচিশ টাকা সেই নিয়ে ঝগড়া করতে ব্যস্ত।
হঠাৎ কি যে হল, লোকটা নিজেও বোঝার আগে সে নিজের পা চুলকনোর ভাব করে নিচু হয়ে দুলটা কুড়িয়ে নিল। তারপর আস্তে আস্তে গুঁজে দিল ওর লুঙ্গির কষিতে। বুকটা ধুপ্‌ধুপ্‌ করছিল- মনে হচ্ছিল যে হৃৎপিণ্ডটা বেরিয়ে আসবে গলা দিয়ে, কিন্তু শেষ অবধি কিছুই হল না। মাথা নিচু করে নিজের কুড়ি টাকাটা নিয়ে বেরিয়ে পড়ল ও। কিছুটা আসার পর ওর মনে হল, দুলটা নেওয়া ঠিক কাজ হচ্ছে না, যাই গিয়ে ফেরত দিয়ে আসি। তারপর ভাবল কি দরকার ঝামেলা করে।
ঐ কুড়ি টাকায় সেদিনকার মত বাচ্চাটার দুধ আর ওদের জন্য চালের ব্যবস্থা হয়ে গেল। নিজের ঘরের দাওয়ায় বসে দুলটা ভাল করে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে দেখল ও। ছোট্ট নকশা করা, দেখে তো সোনার বলেই মনে হচ্ছিল। ও বুঝতে পারছিল, যে ব্যাপারটা অন্যায় হচ্ছে- প্রায় চুরিরই সমান, কিন্তু কিছুতেই দুলটা ফেরত দিতে ইচ্ছে করছিল না ওর। খুব আশ্চর্যজনকভাবে এটা নিয়ে কোন অস্বস্তিও হচ্ছিল না ওর।
দিন দুয়েক পরে সে গ্রামের স্যাকরার কাছে নিয়ে গেল দুলটা, নির্বিকার ভাবে মিথ্যে কথা বলল, মা-র পুরনো দুল, দেখ্‌ দিকি কতটুকু সোনা আছে এর মধ্যে?  
তা স্যাকরা দেখেশুনে যা বলল, তাতে বুঝল ও বাড়ির মালিক ভালই পয়সাওয়ালা মাল, নাহলে ও রকম একটা কচি মেয়েকে এত ভারী একটা গয়না পরিয়ে রাখত না। মোটামুটি বেচে ভালই পয়সা জুটল ওর। অনেকদিন পর ছেলের জন্য একটা নতুন জামা আর বউয়ের নতুন শাড়ি কিনে বাড়ি ফিরল ও। সঙ্গে মাংসও কিনল অনেকটা, রাত্তিরে জমিয়ে খেল সেটা। বউয়ের অবাক দৃষ্টির জবাবে কলকাতায় একটা নতুন কাজের গল্পও শুনিয়ে দিল।
তারপর, লোকটার কেমন একটা পরিবর্তন ঘটে গেল। তার মনে হল, চুরি করাটা তো খুব সহজ কাজ, বেশি ঝামেলা নেই, বেশি পরিশ্রম নেই। আর অনেক লোকেরই তো প্রচুর পয়সা, তাদের থেকে চুরি করলে মন খারাপও করবে না, বরং চুরি করতে ভালই লাগবে। মাঝেমধ্যে হয়তো কয়েক মুহূর্তের জন্য ওর মনে হত এটা অন্যায়, কিন্তু তারপরেই ভাবত, কি দরকার এত চিন্তা করার, বেশ তো চলছে।
দিন-মজুরি, রাজমিস্ত্রি-র কাজ  তো চলছিলই, মাঝেমধ্যে সেখান থেকেও টুকটাক জিনিসপত্র সরিয়ে ফেলতে লাগল। কখনো ছোটোখাটো জিনিস, ঐ পানের ডিব্বা, লেখার কলম, তারপর একদিন একটা বাড়ি থেকে একটা সেলফোনও টুক করে উঠিয়ে নিল ও। সেই বাড়িতে পরের দিনের বাকি কাজে আর যেতে পারল না বটে, তবে সেলফোনটা বেচেও মন্দ আয় হল না, অনেক দিন পর আবার মাংস কিনে বাড়ি ফিরল সে।
তারপর আস্তে আস্তে বেশি রাত্তিরের দিকেও বেরতে শুরু করল। গ্রামের মধ্যেই এদিক-ওদিক যদি কিছু পাওয়া যায়। কখনো জানলা দিয়ে হাত বাড়িয়ে, কখনো বাড়ির পেছনের উঠোন থেকে।
ওর বউ বোধহয় কিছু একটা সন্দেহ করেছিল কিন্তু মুখ খোলেনি। হয়তো এই হঠাৎ হাতে আসা টাকার উৎসের কথা ভেবে মাথা ঘামাতে চায়নি। তার পরিবারটা ঠিকঠাক চলছিল, বাচ্চাটা কান্নাকাটি কম করছিল, লোকটা খিটখিট করছিল না, বরং রাত্তিরে মাঝেমধ্যেই আদর করছিল ওকে, আর কি চাই!
কিন্তু এত কিছু করেও তো আর বিশাল কিছু আয় হচ্ছিল না, ঐ টেনেটুনেই চলে যাচ্ছিল ওদের। বছর দু-তিন এভাবেই কাটল। তারপর যে কি হল। লোকটার শরীরটা ক্ষয়ে যেতে লাগল, সারাক্ষণ জ্বর, খুসখুসে একটা কাশি লেগেই আছে, একটু পরিশ্রম করলেই বুকটা হাপরের মত ওঠা নামা করে। গ্রামের হেলথ-সেন্টারের ডাক্তার দেখাল, তার কথা মত ওষুধও খেল কিছুদিন কিন্তু উন্নতি কিছুই হল না বরং শরীর আরো ভেঙ্গে যেতে লাগল।
লোকটা হঠাৎ খুব ভয় পেয়ে গেল। তার মনে হল ভগবান শাস্তি দিচ্ছে তাকে। তার চুরি করাটা পছন্দ হয়নি ভগবানের আর তাই যত সব রোগ বাসা বেঁধেছে তার শরীরে। চিন্তায়-আতঙ্কে চুরি করা ছেড়ে দিল লোকটা। শরীর খারাপের জন্য কাজেও যেতে পারত না সবদিন। বাড়িতে বসে থাকত আর মনে মনে নিজের ভাগ্যকে খিস্তি করত, আর কিছু করার সাহস-ইচ্ছে কোনটাই আর ছিল না তার। ঘুরে ফিরে সেই আগের অবস্থা ফিরে এল আবার। হয়তো আরও বেশি খারাপ হয়ে।   
সেদিন সকাল থেকেই বাড়িতে চেঁচামেচি চলছে। রান্না-বান্না নেই কিছু, চাল-সবজিও বাড়ন্ত, ছেলেটা সকাল থেকে কি একটা নিয়ে ঘ্যানঘ্যান করে যাচ্ছে- সে এক যাচ্ছেতাই ব্যাপার। সকাল থেকে এগুলো শুনেও না শোনার ভান করে বসেছিল লোকটা। কিন্তু বেলা এগারোটা নাগাদ যখন ওর বউ ছেলেটাকে মারতে আরম্ভ করল তখন ছেলেটার তারস্বরে চিৎকার শুনে বেরিয়ে এল ও। শুনতে পেল যে ওর বউ গজগজ করছে, ভাত জোটানোর মুরোদ নেই, বাড়িতে বসে আছে বাবু। ওদিকে এনার আবার মাংস চাই, নাহলে বাবুর মুখ দিয়ে খাবার নামবে না। মাঝেমধ্যে মনে হয় গলা টিপে মেরেই ফেলি ছেলেটাকে। ওটারও শান্তি, আমিও বাঁচি। ছেলেটা আবার তার মধ্যেই নাকি সুরে মাংস-মাংস বলে কেঁদে যাচ্ছে।   
আগে হলে হয়তো লোকটা বেরিয়েই পড়ত কাজ খুঁজতে, কিন্তু এই শরীর নিয়ে দাওয়ায় বসে শুধু একটা বিড়িই ধরাতে পাড়ল ও। তারপর নিজের সঙ্গে বোঝাপড়া করল লোকটা। এইভাবে হয়না। ভগবানকে খুশী করতে গিয়ে যদি মরেই যায় তাহলে আর লাভ কি। বাঁচতে হলে টাকা চাই, যে করেই হোক। আবার সন্ধ্যের দিকে বেরিয়ে পরবে ও, নিজেই নিজেকে বলল লোকটা। 
সন্ধ্যের দিকে আস্তে আস্তে বেরিয়েও পড়ল লোকটা। ওর বউ দেখেও দেখল না,  কিছু জিজ্ঞেসও করল না, ও বলল না কিছু। ঘুরতে লাগল এদিক ওদিক, কোথাও যদি সুযোগ পাওয়া যায় জিনিসপত্র, বাসনকোসন সরাবার। অনেকক্ষণ ঘোরবার পর গ্রামের বাইরের দিকের রহিম শেখের বাড়িটা ওর চোখে পড়ল।    
বেশ ফাঁকার মধ্যে পুরনো একটা বাড়ি, চারদিক একদম সুনসান, কোন জনপ্রাণী দেখা যাচ্ছে না। বাড়িটাও ঘুটঘুটে অন্ধকার, মনে হচ্ছে না রহিম শেখেরা কেউ বাড়ি আছে। লোকটা অনেকক্ষণ ধরে বাড়িটার চারদিকে ঘুরে দেখল, যখন নিশ্চিত হল যে, বাড়িটায় কেউ নেই, তখন আস্তে করে পেছনের উঠোনে গিয়ে খুঁজে দেখতে লাগল ভেতরে ঢোকার কোন রাস্তা আছে কিনা।
পুরনো ভাঙাচোরা বাড়ি, একটু চেষ্টা করতেই পেছনের দরজাটা ওর সঙ্গের লোহার শিকটা দিয়ে চাড় মেরে ভেঙ্গে ফেলল সে। একটা দেশলাই জ্বালিয়ে ভেতরটা ঘুরে ঘুরে দেখেও নিল। নেওয়ার মত অনেক জিনিস-ই বাইরে পড়ে আছে, আলনায় শাড়ি-জামা ঝুলছিল, সেগুলো নিয়ে এক জায়গায় করল ও। বিছানার চাদরও নিয়ে নিল, নিতে গিয়ে বিছানার চাদরের তলায় রাখা কিছু টাকাও পেয়ে গেল। সেগুলো গুঁজে নিল ওর ট্যাঁকে।
এ ঘর ও ঘর ঘুরতে ঘুরতে সামনে একটা ছোট দরজা দেখে সেটার ভেতরে ঢুকল। দেশলাই কাঠি জ্বালিয়ে দেখল সেটা রহিম শেখের বাড়ির রান্নাঘর। বেশ কিছু বাসনকোসন রাখা আছে, সেগুলোও নেওয়া যাবে। মনে মনে খুশি হয়ে উঠল সে।
রান্নাঘরের এক কোনে একটা কাঠের আলমারি ছিল, সামনেটা জাল দেওয়া, সেটা খুলতেই পেঁয়াজ-রসুন মেশান হালকা একটা গন্ধ পেল, বোধহয় অনেকদিন পর চুরি করতে বেরিয়ে ওর ইন্দ্রিয়গুলো স্বাভাবিকের চেয়েও বেশি সজাগ ছিল। একটা বাটি রাখা ছিল আলমারিটার মধ্যে। ভাল করে দেশলাই জ্বালিয়ে ও দেখল বাটিটার মধ্যে কি আছে।
দেখে একটা নিঃশ্বাস ফেলল। তারপর একটা বিড়ি জ্বালাল। রান্নাঘরেই বসে বসে বিড়িটা শেষ করল। তারপর পাশের ঘরে গিয়ে শাড়ি-জামাগুলো আবার তুলে রাখল আলনায়, চাদরটা পেতে দিল বিছানায়, টাকাটা আবার সযত্নে রেখে দিল যেখান থেকে নিয়েছিল সেখানে।
দু’মিনিট পর বাড়িটা থেকে বেরিয়ে এলো। খালি হাতে? না, আসার সময় রান্নাঘরের আলমারি থেকে মাংসের বাটিটা সঙ্গে নিয়ে নিয়েছিল।

About Us | Site Map | Privacy Policy | Contact Us | Blog Design | কথা তো বলার জন্যেই