তখন
ক্লাস ফাইভ কি সিক্সে পড়ি। মানুষের জীবনে বিজ্ঞানের প্রভাব সম্বন্ধীয় কোনো এক
রচনার মুখবন্ধটুকু
লিখে দিতে গিয়ে বাবা quote করেছিলেন, ‘আজকের বিজ্ঞান মানুষকে দিয়েছে বেগ, কেড়ে নিয়েছে আবেগ, তাতে আছে গতির আনন্দ – নেই যতির রেশ...’। প্রাণপণে মুখস্থ করেছিলাম লাইনগুলো। বুঝিনি তখন। এখন ভাবি কি নির্মম সত্য! বিজ্ঞান যত এগিয়েছে মানুষের জীবনে অবসর সময়ও যেন পাল্লা দিয়ে কমেছে। সকালবেলা নাকে মুখে গুঁজে, ট্রেনে পাশের লোকের গরম ঘাম নিজের গায়ে মেখে, কোনক্রমে বাদুড় ঝোলা বাস – বকুলতলা মোড় - নীল-সাদা রেলিং আর ফুটপাথের হোঁচট, সঙ্গে ফাউ ট্র্যাফিক সিগন্যালে রবীন্দ্রসঙ্গীতের নিত্য সাংস্কৃতিক ধর্ষণ, অফিসপাড়া, ডেকার্স লেনে চা-বাটার টোষ্ট সঙ্গে আড্ডায় রাজনীতি থেকে ক্রিকেট, তারপর শেষ রাতে বাড়ি ফিরে কোনো এক অপরিচিত স্বামীর প্রায় অপরিচিতা স্ত্রীর সাথে পরিচিত বিছানা শেয়ার... এই তো আজ বিজ্ঞানের কবলে মানুষের রোজনামচা। যদি কোনোভাবে শারীরিক অবসর মেলে তো মানসিক অবসর মেলে না – সংসার চিন্তা, ছেলেমেয়ের চিন্তা, ভবিষ্যতের চিন্তা! বিজ্ঞানক্লিষ্ট এই রুটিন জীবন আর তার হাজারো চিন্তার একঘেয়ে দুনিয়ার বিরুদ্ধে অবাধ্য মন তাই মাঝে মাঝেই বিদ্রোহ করতে চায়। ফিরে যেতে চায় ছোটবেলার অনাবিল সেই মুহূর্তগুলোয় – বর্ষার রাস্তায় ইচ্ছে করে জল ঝপাৎ, দোলের আগের দিন চাঁচোরে আলুপোড়া, কলেজ ক্যান্টিনে আড্ডার মাঝে সকলের অলক্ষ্যে আলতো চোখাচোখি। মনছুটের রেলগাড়ী তখন খুঁজে ফেরে এমন কোনো কুঝিক্ঝিক্ ইঞ্জিন যার সাহায্যে সত্যিসত্যিই চলে যাওয়া যায় ফেলে আসা পথের নস্ট্যালজিক সেই মোড়গুলোয় ...। আর আসল অপেক্ষা সুদ বরাবরই মিষ্টি , তাই ফেলে আসা মূহুর্তগুলোর পাশাপাশি যদি একবার ভবিষ্যতের মাটিতেও পদার্পণ করা যায় সেই ইঞ্জিনের দৌলতে, তাহলে তো সোনায় সোহাগা!
লিখে দিতে গিয়ে বাবা quote করেছিলেন, ‘আজকের বিজ্ঞান মানুষকে দিয়েছে বেগ, কেড়ে নিয়েছে আবেগ, তাতে আছে গতির আনন্দ – নেই যতির রেশ...’। প্রাণপণে মুখস্থ করেছিলাম লাইনগুলো। বুঝিনি তখন। এখন ভাবি কি নির্মম সত্য! বিজ্ঞান যত এগিয়েছে মানুষের জীবনে অবসর সময়ও যেন পাল্লা দিয়ে কমেছে। সকালবেলা নাকে মুখে গুঁজে, ট্রেনে পাশের লোকের গরম ঘাম নিজের গায়ে মেখে, কোনক্রমে বাদুড় ঝোলা বাস – বকুলতলা মোড় - নীল-সাদা রেলিং আর ফুটপাথের হোঁচট, সঙ্গে ফাউ ট্র্যাফিক সিগন্যালে রবীন্দ্রসঙ্গীতের নিত্য সাংস্কৃতিক ধর্ষণ, অফিসপাড়া, ডেকার্স লেনে চা-বাটার টোষ্ট সঙ্গে আড্ডায় রাজনীতি থেকে ক্রিকেট, তারপর শেষ রাতে বাড়ি ফিরে কোনো এক অপরিচিত স্বামীর প্রায় অপরিচিতা স্ত্রীর সাথে পরিচিত বিছানা শেয়ার... এই তো আজ বিজ্ঞানের কবলে মানুষের রোজনামচা। যদি কোনোভাবে শারীরিক অবসর মেলে তো মানসিক অবসর মেলে না – সংসার চিন্তা, ছেলেমেয়ের চিন্তা, ভবিষ্যতের চিন্তা! বিজ্ঞানক্লিষ্ট এই রুটিন জীবন আর তার হাজারো চিন্তার একঘেয়ে দুনিয়ার বিরুদ্ধে অবাধ্য মন তাই মাঝে মাঝেই বিদ্রোহ করতে চায়। ফিরে যেতে চায় ছোটবেলার অনাবিল সেই মুহূর্তগুলোয় – বর্ষার রাস্তায় ইচ্ছে করে জল ঝপাৎ, দোলের আগের দিন চাঁচোরে আলুপোড়া, কলেজ ক্যান্টিনে আড্ডার মাঝে সকলের অলক্ষ্যে আলতো চোখাচোখি। মনছুটের রেলগাড়ী তখন খুঁজে ফেরে এমন কোনো কুঝিক্ঝিক্ ইঞ্জিন যার সাহায্যে সত্যিসত্যিই চলে যাওয়া যায় ফেলে আসা পথের নস্ট্যালজিক সেই মোড়গুলোয় ...। আর আসল অপেক্ষা সুদ বরাবরই মিষ্টি , তাই ফেলে আসা মূহুর্তগুলোর পাশাপাশি যদি একবার ভবিষ্যতের মাটিতেও পদার্পণ করা যায় সেই ইঞ্জিনের দৌলতে, তাহলে তো সোনায় সোহাগা!
কথায়
বলে যা নেই ভারতে, তা নাকি নেই ভারতে। প্রথম ভারত অর্থ অবশ্যই মহাভারত। সেই
মহাভারত থেকে ছোট্ট কিন্তু আশ্চর্য এক উপকাহিনী শোনাই - প্রাচীন ভারতের এক রাজা
রৈবত, সাগরতলে তাঁর রাজ্য – কুশস্থলী। অপরূপা
তাঁর কন্যা রেবতী, আপাতত যার বিবাহ চিন্তায় তিনি মগ্ন। তাই যুৎ করে পরামর্শের জন্য
তিনি রওনা দিলেন স্বর্গে, প্রজাপতি ব্রহ্মার উদ্দেশে, সঙ্গে কন্যা রেবতী এবং
সম্ভাব্য সুপাত্রদের এক লিস্টি। কিন্তু পরামর্শকালে প্রজাপতি ঋষি রৈবতকে যা বললেন
তার প্রকৃত মর্ম সাংঘাতিক এবং তা উপলদ্ধি করতে মানবজাতি তথা বিজ্ঞানের সময় লাগল
প্রায় চার হাজার বছর!
থ্রিলার
ছবি দেখতে ভালোবাসেন? ভালো থ্রিলার ছবির নির্দেশক যেমন ছবির যথাযথ সূচনার পর
গল্পের ক্লাইম্যাক্স যথাসময়ে উপস্থিত করেন, পাঠকগণ, আপনাদের অনুমতি চেয়ে নিলাম এই
উপকাহিনীর শেষাংশটুকুও যথাসময়ে পেশ করার। তার আগে সেই ক্লাইম্যাক্সে পৌঁছনোর
উপযুক্ত পরিবেশ রচনা করায় মনোযোগ দেওয়া যাক।
বস্তুর ত্রিমাত্রিক ধারণা মানুষের সহজাত। মাটির উপর দ্বিমাত্রিক চলাচল তার
অবাধ। বিমান সফরকালীন ত্রিমাত্রিক বিচরণেও
সে স্বচ্ছন্দ । এই সনাতন ত্রিমাত্রিক ধারণার সাথে নতুন এক মাত্রা যুক্ত হল ঊনবিংশ
শতকের শেষভাগে – সময়। যে কোনো বস্তুর নাকি থাকতে হবে
চারটি মাত্রা – দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, উচ্চতা এবং অবশ্যই
স্থায়িত্ব (যত ন্যূনতমই হোক না কেন)। সেই ধারণাকেই বিজ্ঞানসম্মত শীলমোহর দিলেন
আলবার্ট আইনস্টাইন। তাঁর অসাধারণ মেধা এবং অবিশ্বাস্য চিন্তাশক্তির ফসল – Special Theory of Relativity এবং GeneralTheory of Relativity যেখানে স্থান-কালের এক নিখুঁত জাল বুনলেন
আইনস্টাইন , সেই সঙ্গে বিজ্ঞানীদের মনে উস্কে দিলেন এক আপাত অসম্ভব সম্ভাবনাকে -- TIMETRAVEL বা সময় সফর!
আপেক্ষিকতাবাদের জটিল গণনার
মধ্যেই যে লুকিয়ে আছে Time Travel-এর ধাঁধা তা আজ বিজ্ঞানীদের কাছে
স্পষ্ট। কিছু বিজ্ঞানীদের মতে সেই ধাঁধার সমাধানের চাবিকাঠি নাকি সযত্নে রক্ষিত ‘কেঁচোর গর্তে’! কেঁচোর গর্ত - বিজ্ঞানসম্মত নাম WORMHOLE। দেশ-কালের (Space-time
) সংজ্ঞায় WORMHOLE এক শটর্কাট টানেল যা সংযোগ স্থাপন করে চলেছে দুই ভিন্ন দেশ-কালের
মধ্যে। সহজ ভাষায়, এ এক এমন টানেল যার দুই প্রান্তের স্থান কাল মায় পাত্র পযর্ন্ত হয়তো
আলাদা! অর্থাৎ একবার এই টানেলে প্রবেশ করতে পারলে সময়-সফরে
আপনি হয়ত পৌঁছতে পারেন ক্লিওপেট্রার খাসমহলে, কিম্বা গড়ের মাঠে হাওয়া খেতে পারেন
ডাইনোসরের পিঠে চড়ে, আবার হয়ত বা চাক্ষুষ করতে পারেন আজ থেকে ত্রিশ বছর পরে
প্যারিসের ফ্যাশন উইকে জঙ্গলমহলের কোন সাঁওতাল রমণীর ক্যাটওয়াক!
দেখছেন! এই হল বাঙালি আড্ডার এক
চিরন্তন সমস্যা – গল্প কিম্বা আড্ডা যারই হোক না কেন, গরু
বড্ড তাড়াতাড়ি গাছে উঠতে চায়। তাই আপাতত বৈজ্ঞানিক সত্য ও তথ্যের প্রতি নিষ্ঠায়
সেই গরুকে আবার বাস্তবের রূক্ষ মাটিতে নামিয়ে ফেলতে বাধ্য হলাম।
ওয়ার্মহোলদের বাস্তব
অস্তিত্বের প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি। তাত্ত্বিক বিজ্ঞান অনুযায়ী ওয়ার্মহোলদের
ধাত্রীভূমি পরমাণুদের চেয়েও ক্ষুদ্রতর কোয়ান্টাম ফোম যেখানে তাদের জন্ম-মৃত্যু ঘটে
চলেছে নিরন্তর। আর অতীত কালে সময় সফরের ক্ষেত্রে প্রধান দুটি পাহাড়প্রমাণ অন্তরায়
লুকিয়ে আছে শেষের এই আপাত সরল বাক্যটিতে। প্রথমত মানুষের অতিক্রমযোগ্য করে তোলার
জন্যে ওয়ার্মহোলের ঐ বিন্দুসদৃশ চেহারাকে বড় করতে হবে কয়েক
শত-হাজার-লক্ষ-কোটি-অবুর্দ গুণের চেয়েও অনেক বেশি। এবং তার জন্য প্রয়োজনীয়
যন্ত্রের আকার এতটাই বিপুল হবে যে বিজ্ঞানীদের ধারণা তার স্থান এ পৃথিবী কেন এ
সৌরজগতেও সঙ্কুলান হবে কিনা সন্দেহ। তবে এখন বিজ্ঞানের VLSI (Very
Large Scale Integration) –এর যুগ যেখানে সারা বিশ্বের তথ্য এসে জড়ো
হতে পারে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র memory chip –র মধ্যে, যা এক সময়ে মানুষের সুদূরতম কল্পনাতীত ছিল।
তাই আশাবাদীরা হয়তো বলবেন যে আজ না হলেও একদিন স্থান সংকুলানযোগ্য এমন যন্ত্র
নিশ্চয় তৈরি হবে যার সাহায্যে ওয়ার্মহোলকে যথেষ্ট বড় করা সম্ভব হবে। কিন্তু
দ্বিতীয় দুর্লঙ্ঘ্য বাধা হবে এই ওয়ার্মহোলদের স্থায়িত্ব। কারণ যে মুহূর্তে ওয়ার্মহোলদের
চেহারা বড় হতে শুরু করবে, সেই মুহূর্ত থেকেই তার মধ্যে ঢুকতে শুরু করবে পজিটিভ
রেডিয়েশন। এর ফলে ওয়ার্মহোলদের চেহারা বেড়ে চলবে অনিয়ন্ত্রিত ভাবে এবং শেষ অবধি
ওয়ার্মহোলের পেটটাই দেবে ফাটিয়ে। তাই ওয়ার্মহোলের চেহারার সাথে সাথে বাড়াতে হবে
তার স্থায়িত্বও যাতে তাকে পরিণত করা যায় Traversable Wormhole বা অতিক্রমণীয় ওয়ার্মহোলে। কিন্তু এই স্থায়িত্ব বৃদ্ধির জন্যে প্রয়োজন এমন
এক উপাদানের যার থাকতে হবে ঋণাত্মক ভর, নাম Exotic Matter।
হায় রে ! ‘একা রামে রক্ষে নেই, সুগ্রীব দোসর’!
এতো গেল টাইম মেশিন
প্রস্তুতির প্রাক-প্রণালী। অতীতের জানা কিম্বা অজানা কোনো গলিপথে হাঁটার জন্য এরপর প্রয়োজন ভবিষ্যতের সেই নবজাত টাইম-মেশিনে
সদ্য প্রস্তুত ওয়ার্মহোলটিকে সঠিক উপায়ে পরিচালনা করা। এর জন্য বিবর্তিত ও
বিবর্ধিত ওয়ার্মহোল নামক টানেলটির
একপ্রান্তকে চালনা করতে হবে আলোর চেয়ে বেশি গতিবেগে, অন্যপ্রান্ত থাকবে স্থির।
কিন্তু যে গতিবেগকে আইনস্টাইন আখ্যা দিয়েছেন গতিবেগের সবোর্চ্চ সীমা - মহাজাগতিক
ধ্রুবক, যার বেশি গতিবেগ সম্ভব নয়, তার থেকে বেশি জোরে ওয়ার্মহোলকে চালাতে হবে,
বিজ্ঞানীদের এ আবার কেমনতরো স্ববিরোধী রসিকতা! এখনও অবধি যেখানে মনুষ্য-চালিত যানের
সবোর্চ্চ গতিবেগ 11.08 km/s (Apollo-10)
এবং আলোর বেগ 300000
km/s, সেখানে এই নিমর্ম তাত্ত্বিক পরিহাসের প্রয়োজনীয়তা কোথায়?
আপেক্ষিকতাবাদের প্রধান দুটি
স্বীকার্যের একটিতে বলা হয়েছে পদার্থবিদ্যার নিয়মগুলি প্রত্যেক Inertial Frame বা নির্দেশতন্ত্রে একইভাবে ক্রিয়াশীল। দুটি Galilean Frame বা গ্যালিলিয়ান নির্দেশতন্ত্রের কার্য-কারণ, ঘটনাপরম্পরা সর্বদাই পরস্পরের
সমবর্তী। যেকোন Galilean frame –এ তাই Faster Than Light (FTL) কোন সংকেত সময়ের পথে পশ্চাৎধাবী। সহজ করে বলি
– ধরুন, ‘B’-র জন্মদিনের শুভেচ্ছা
হিসাবে ‘A’ তার নিজস্ব ফ্রেমে FTL এক sms পাঠালো। FTL সংকেত যেহেতু সময়ের পথে পশ্চাৎধাবী তাই B সেই sms
receive করে বসবে A পাঠানোর আগেই। B যদি সেই sms-র প্রাপ্তি স্বীকার করে FTL
reply sms-র সাহায্যে তাহলে আপেক্ষিকতাবাদের নিয়ম অনুযায়ী A সেই sms receive করবে B পাঠানোর
আগেই। তাহলে গোটা ব্যাপারটা কি দাঁড়াচ্ছে? B-র জন্মদিনে
A-র শুভেচ্ছাবার্তা পাঠানোর আগেই B তার
প্রাপ্তিস্বীকার করে জানিয়ে দিচ্ছে A কে! একেবারে- telepathy-র ঠাকুরদাদা! আশ্চর্য
এই ঘটনা পরম্পরার বৈজ্ঞানিক নাম -- Tachyonic Telephone।
বস্তুত এ ঘটনারই প্রত্যক্ষ প্রতিফলন অতীতে Time Travel; কারণ
আলোর চেয়ে দ্রুতগামীর কাছে উপরোক্ত ব্যাখ্যা অনুযায়ী সময়ও চলে সাধারণের চেয়ে আগে
আগে বা দ্রুত। ফলে তার পক্ষে অতীতকে ফিরে দেখা সম্ভব হয়। কিভাবে?
ধরুন, আপনি সময়যাত্রী। যখন আপনি
ওয়ার্মহোলে প্রবেশ করছেন, তখন আপনার ঘড়ির ক্যালেন্ডার দেখাচ্ছে 01.01.2050। ওয়ার্মহোল চলতে শুরু করল আলোর চেয়ে বেশি গতিবেগে -- আপনার ঘড়িও চলতে
শুরু করল স্বাভাবিকের চেয়ে দ্রুত। ফলত ওয়ার্মহোল যখন থামল, তখন আপনার ঘড়ির
ক্যালেন্ডার হয়ত দেখাচ্ছে 01.06.2050। যদিও বাইরের সাধারণ
ক্যালেন্ডারে তা হয়ত 01.03.2050। সেক্ষেত্রে কাযর্ত আপনার
কাছে সেটা 01.06.2050 -এ দাঁড়িয়ে 01.03.2050 –এর অতীতের দিকে ফিরে তাকানো নয় কি! আপনি প্রশ্ন
করতে পারেন, এ আবার কেমন ছেলেভোলানো অতীত দেখা! তাহলে কি ক্লিয়োপেট্রার অন্দরমহল
বা ডাইনোসরের পিঠ সবই “অধরা মাধুরী”! নিতান্ত
দুঃখের সাথে জানাই, উত্তর - হ্যাঁ, বিজ্ঞানের বেড়াজালে অনির্দিষ্ট অতীত ভ্রমণ সম্ভব
নয়। টাইম মেশিনে চড়ে ততটাই অতীতে পৌঁছনো সম্ভব যতটা অতীতে টাইম মেশিনটা তৈরি করা
হয়েছিল। অর্থাৎ, এই টাইম মেশিন আমাদের সিনেমায় দেখা বা উপন্যাসে পড়া, কোনো যন্ত্র
বিশেষ নয়, যার কোনো একটি হাতলের ওঠানামায় আমরা নিজেদের ইচ্ছামত চলে যেতে পারব ফেলে
আসা অতীতের ধূলিধূসরিত কোনো এক পাতায়। স্টিফেন হকিংকে ধার করে বলি, ‘টাইম মেশিন একদিন তৈরি হবে, কিন্তু এখনো তৈরি হয়নি। তাই ভবিষ্যতের
সময়-সফরকারী কখনই আর আজকের দিনে ফিরে আসতে পারবেনা’।
প্রসঙ্গক্রমে আরেকটা
সম্ভাবনার কথা মাথায় এল - Grand Father Paradox। ভবিষ্যতের কোনো এক
বিদ্রোহী নাতি ফিরে এল তার পিতামহের যৌবনের সেই সময়কালে যেখানে পিতামহের কৃতকর্মের
কলঙ্কচিহ্ন হয়তো আজও সে এবং তার পরিবার
বয়ে বেড়াচ্ছে। সেই কলঙ্ক মোচনের পন্থা হিসেবে নাতি হাতে তুলে নিল বন্দুক – পয়েন্ট ব্ল্যাংক রেঞ্জ – না রইল বাঁশ, না বাজবে
বাঁশী। কিন্তু পিতামহের এই নতুন করে লেখা মৃত্যুকালে যদি তার পুত্রের জন্ম না হয়!
তাহলে যে আজ নাতির অস্তিত্বও প্রশ্নচিহ্নের মুখে দাঁড়াবে! সে কিভাবে সম্ভব? বাবা
জন্মানোর আগে যদি দাদু মারা যান, তাহলে নাতিই বা আসলো কি করে – ভয়ংকর প্রশ্নের মুখে আবার বিজ্ঞান – Grand
Father Paradox। যদিও পথ বাতলালেন নভিকভ (Novikov) সাহেব। তাঁর Self Consistency Principle বলে যে ইতিহাসের পট পরিবর্তনকারী কোন ঘটনা
ঘটানোরই অধিকার থাকবে না সময় সফরকারীর – সে কেবল এক রবহীন-Jobহীন দর্শকমাত্র।
জলের মধ্যে দিয়ে বুদবুদ যেমন
উপরে উঠে আসাকালীন আয়তনে বাড়তে বাড়তে হঠাৎ জলের পৃষ্ঠদেশে তার অভীষ্টে পৌঁছে বুঝতে
পারে তার আয়ু শেষ, অতীত ভ্রমণের স্বপ্নও, আশা করি পাঠককুল এতক্ষণে বুঝতে পেরেছেন,
সেই বুদবুদের জীবনচক্রেরই অনুসরণকারী। ইতিহাস গবেষককুল হয়তো হাঁফ ছেড়ে বাঁচবেন – কারণ যে সমস্যা সংকুল পরিস্থিতির মধ্যে আইনস্টাইন তাঁদের ফেলেছিলেন, তা
থেকে পরিত্রাণের পথও তিনিই বাতলে গেছেন – আলোর থেকে বেশি
গতিবেগ এই মহাবিশ্বে সম্ভব নয় ( যদিও সাম্প্রতিকতম বিজ্ঞানে নিউট্রিনোর বেগ নিয়ে
শোরগোল তুঙ্গে, তথাপি তা এখনো প্রমাণসাপেক্ষ) ।
ছোটবেলা থেকেই গুরুজনদের মুখে
শুনে আসছি – সময় বহিয়া যায় নদীর স্রোতের প্রায়। আর নদীর
বেগ যেমন আপন ছন্দে পরিবর্তনশীল, তেমনই সময় যেন জীবনের ভালো মুহূর্তগুলোয় পক্ষীরাজের
পিঠে চেপে বসে আর খারাপ মুহূর্তগুলোয় তার বাহন যেন – কচ্ছপ।
জীবনদর্শন ছেড়ে যদি আপেক্ষিকতাবাদের দিকে আবার চোখ ফেরাই তাহলে দেখব, সময়ের গতিও
গুরুভারে ন্যুব্জপ্রায়, কিন্তু লঘুভারে তা চপল। বিশদে বলি – GlobalPositioning System (GPS)-র Satellite গুলি
পৃথিবীর চারদিকে সদা ঘূর্ণনশীল এবং সময়ের নিক্তি মেপে তাদের পৃথিবী পরিক্রমার
নিয়ন্ত্রণ, একচুল এদিক-ওদিক হলেই কেলেঙ্কারি! এজন্য তাদের মধ্যে থাকে অত্যন্ত
নিয়মানুগ, অনুপুঙ্খ সিজিয়াম ক্লক। কিন্তু এহেন সিজিয়াম ক্লককেও দেখা যায় প্রতি
দিনের শেষে পৃথিবীতে রাখা তার দোসর ঘড়িটির তুলনায় এক সেকেন্ডের দশ কোটি ভাগের তিন
ভাগ ফাস্ট যেতে। এই দোষ কিন্তু ঘড়িটির নয়, বরং উপরোক্ত আপেক্ষিকতাবাদের বিশ্লেষণেই
পাওয়া যায় এই ঘটনার প্রকৃত ব্যাখ্যা – পৃথিবী যেহেতু ভারি,
তাই পৃথিবীতে সময় চলে (মহাকাশের তুলনায়) আস্তে। সেই আস্তে চলা উল্লেখযোগ্য ভাবে
বেড়ে যাবে যদি সময়-ঘড়িকে নিয়ে আসা যায় মহাবিশ্বের সবথেকে ভরসম্পন্ন কৃষ্ণগহ্বর বা Black
hole-গুলির কোন একটির কাছাকাছি। পৃথিবীর সবথেকে নিকটবর্তী সেরকম
একটি বিন্দুর অবস্থান 26000 আলোকবর্ষ দূরে আকাশগঙ্গা বা Milky
way নামক ছায়াপথ বা Galaxy-র কেন্দ্রে। চল্লিশ
লক্ষ সূর্যের ভর নাকি সঞ্চিত সেই এক বিন্দুতে। আলোরও নিস্তার নেই এমনই তার
মহাকর্ষজ আকর্ষণ, তাই তার নাম কৃষ্ণগহ্বর – Black
hole। কোন মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র থেকে প্রেরিত মহাকাশযানের যদি এই Black
hole কে প্রদক্ষিণ করতে 16 মিনিট সময় লাগে
তাহলে ঐ মহাকাশযানে থাকা মহাকাশচারীর কাছে সেই সময়ের হিসেব দাঁড়াবে 8 মিনিট। অর্থাৎ, যদি সেই মহাকাশচারীর যমজ ভাই পৃথিবীতে থাকে তাহলে 5
বছর বাদে মহাকাশচারী পৃথিবীতে ফিরে দেখবে ভাইয়ের বয়স 10 বছর বেড়ে গেছে। এ ধাঁধারই গালভরা নাম – Twin
paradox। কিন্তু সমস্যা সেই রয়েই গেল, এতদূর পাল্লা দেবার মতো
মহাকাশযান আবিষ্কার যদি করাও যায় তবুও 26000 আলোকবর্ষ পৌঁছতে
যে সময় লাগবে তাতে সেই মহাকাশযানের ভিতরেই নতুন করে মানব সভ্যতা রচনা করতে হবে!
মহাকাশযানে নবরচিত সেই
মানবসভ্যতার ক্রমবিবর্তন কেমন হবে বা কৃষ্ণগহ্বরের কাছ থেকে আদৌ সেই মহাকাশযান
পৃথিবীতে ফিরে আসতে পারবে কিনা- এই সব প্রায় অবাস্তব প্রশ্নকে বেশি প্রশয় না দিয়ে
আবার একটু বাস্তবে চোখ ফেরানো যাক। কথায় বলে যেখানে দেখিবে ছাই, উড়াইয়া দেখ তাই,
পাইলে পাইতে পারো অমূল্য রতন! আগেই বলেছি, সময়ের লয়কারি নির্দেশতন্ত্রের গতির উপর
নির্ভরশীল। এবং আপেক্ষিকতাবাদ অনুযায়ী, চলমান নির্দেশতন্ত্রের বেগ যদি আলোর বেগের
কাছাকাছিও হয়, তাহলেই সেই নির্দেশতন্ত্রে সময়ের লয় উল্লেখযোগ্য ভাবে হ্রাস পাবে।
ছাইয়ের দেখা মিলেছে, অমূল্য রতন - আলোর বেগের থেকে বেশি না হলেও চলবে, যদি
কাছাকাছিও হয় তাহলেই হয়তো সময় সফর সম্ভব হতে পারে। ব্যাপারটা সহজে বোঝার জন্য বলি,
ধরুন আলোর কাল্পনিক বেগ 300 মি./সে. এবং আপনি কোন এক কাল্পনিক ট্রেনে চড়ে বসেছেন যার বেগ 295 মি./সে.। এখন আপেক্ষিক বেগের
সংজ্ঞানুযায়ী আপনি যদি ঐ ট্রেনের মধ্যেই ট্রেনের বেগের দিকে 1 সেকেন্ডে 5 মি. অতিক্রম করতে
পারেন, তাহলে নিশ্চয় বাইরের কোনো দর্শক সাপেক্ষে আপনার আপেক্ষিক বেগ হওয়া উচিত (295+5)
= 300 মি./সে. অর্থাৎ
আলোর কাল্পনিক বেগের সমান। কিন্তু মজার কথা হল তা কখনই হবে না। কারণ প্রকৃতির
অত্যাশ্চর্য এবং অকাট্য নিয়মে আপনার ঘড়ির কাঁটা এতটাই স্লো হয়ে যাবে যে প্রকৃতির
সবোর্চ্চ গতি – আলোর গতিকে আপনি কখনই ছুঁতে পারবেন না।
সংখ্যা ব্যবহার যে কোন কিছুর বোধগম্যতাকে সহজতর করে, তাই বলি, ধরুন আপনি হয়তো
ভাবছেন 1 সেকেন্ডে আপনি 5 মি. পথ ট্রেনের মধ্যে অতিক্রম করেছেন যাতে আপনার নিজস্ব বেগ হয় 5 মি./সে., আসলে সেই 1 সে. বাইরের দর্শকের সময়ের নিরিখে হয়তো 2 সেকেন্ডের সামিল। তাই বাইরের দর্শকের কাছে আপনার নিজস্ব বেগ দাঁড়াবে 5 মি./ 2 সে. = 2.5 মি.
/ সে. এবং আপনার আপেক্ষিক বেগ দাঁড়াবে (295+2.5)=297.5
মি./সে.। আপনি ট্রেনের
ভিতরে যতই বেগ বাড়াবেন এবং আলোর বেগকে ধরবার চেষ্টা করবেন ততই আপনার সময় ধীরে চলতে
শুরু করবে। এ ঘটনারই নাম Time Dialation। তথ্যগত দিক থেকে
জানাই এরকম কোনো ট্রেনে যদি আপনি সত্যিই চড়ে বসেন এবং সেই ট্রেন যদি আপনাকে নিয়ে
পৃথিবীর নিরক্ষরেখা বরাবর প্রতি সেকেন্ডে সাতবার করে পৃথিবীর চারদিকে পাক খেতে
থাকে, তাহলে সেই ট্রেনে আপনার কাটানো সাত দিন হবে পৃথিবীর মানুষের নিরিখে একশো
বছরের সমান! আপনি এক সপ্তাহ বাদে ট্রেন থেকে নেমে চাক্ষুষ করতে পারবেন একশো বছর
পরের পৃথিবীর চালচিত্রটাকে। সেই ট্রেন বানানোর সম্ভাবনাকে ভবিষ্যতের হাতে ছেড়ে
দিয়ে বাস্তবের দিকে যদি চোখ ফেরাই তবে দেখতে পাবো এই ঘটনারই প্রয়োগ আণুবীক্ষণিক
কিছু কণাদের অণুজীবনকে দীর্ঘায়িত করার কৌশলে। Geneva, Switzerland –এ LHC ( Large Hadron Collider ) নামক 16 মাইল লম্বা ভূগর্ভস্থ টানেলের মধ্যে Particle Accelarator –এর সাহায্যে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণাস্রোতকে প্রচন্ড গতিবেগে ঘোরানো হয়। মুহূর্তের মধ্যে সেই টানেলে কণার বেগ
শূন্য থেকে 60000 mph এ পৌঁছয় এবং particle
accelerator –এর power বাড়ানোর সাথে সাথে তারা
প্রতি সেকেণ্ডে প্রায় 11000 বার টানেলটির মধ্যে দিয়ে ঘুরতে
থাকে। এমতাবস্থায় তাদের গতিবেগ পৌঁছয় আলোর বেগের প্রায় 99.99% -এর কাছাকাছি। এই গতিতে গতিশীল pi-meson নামক এক
অতি ক্ষণস্থায়ী ক্ষুদ্র কণার জীবনচক্রের মেয়াদ সাধারণ অবস্থার তুলনায় 30 গুণ অবধি বেড়ে যেতে দেখা যায়। আলোর গতির কাছাকাছি সময় যে ধীরে চলে তার
বাস্তব প্রমাণ এই ঘটনা।
আজকের আড্ডা মহাভারতের যে
উপকাহিনী দিয়ে শুরু করেছিলাম তার
শেষাংশটুকু অসমাপ্ত রেখে ছিলাম সঠিক সময়ে পেশ করব – এই প্রতিশ্রুতিতে।
প্রতিশ্রুতি পালনের উপযুক্ত পরিবেশ আপাতত রচিত, পাঠককুল অনুধাবন করতে পারবেন
মহাভারতকারের অবিশ্বাস্য বৈজ্ঞানিক প্রজ্ঞা এবং দূরদর্শিতা। ঋষিকুলপতি ব্রহ্মা রৈবতের
কন্যা রেবতীর জন্য পাত্রের লিস্টি দেখে যা বললেন তার সহজ সারাংশ হল – কালের গতি বিভিন্ন লোকে বিভিন্ন! কি সাংঘাতিক কথা! মর্ত্যের মানুষের কাছে
যা এক যুগ, স্বর্গে তাই নাকি একদিনের তুল্য! তাই যে সম্ভাব্য পাত্রদের রৈবত তাঁর
কন্যার জন্য বিবেচ্য বলে স্থির করেছিলেন, কন্যা সমেত রৈবত যখন আবার মর্ত্যে ফিরবেন
তখন তাদের নাম-গন্ধও থাকবে না! ভেবে দেখুন কি অসাধারণ বিজ্ঞানসম্মত বিশ্লেষণ – স্বর্গে দেবতাদের অধিষ্ঠান, অমিতশক্তিধর তারা। শক্তি এবং ভরের তুল্যতা
আইনস্টাইন স্বীকৃত। অর্থাৎ, সেই অনুসারে স্বর্গের ভরও যে নিতান্তই সামান্য হবে না
তা বলাই বাহুল্য। তাই সেখানে সময়ের ধীরে চলাই স্বাভাবিক! ফলতঃ কালের সেই শম্বুক
গতিতে দেবতারা হবেন অজর, অমর, অব্যয়। আবার স্বর্গও যে জীবিত মানুষের ধরাছোঁয়ার
বাইরে, তাই সেখানে যেতে গেলে রৈবতের বাহনটিকেও হতে হবে যথেষ্টই দ্রুতগামী।
সেক্ষেত্রেও সময় যে ধীরেই চলবে। অর্থাৎ সব মিলিয়ে আপেক্ষিকতাবাদের কষ্টিপাথরে
প্রজাপতি ব্রহ্মার উক্তি সবর্তোভাবে নির্ভুল।
আশ্চর্য হই পৌরাণিক ভারতের
মুনি ঋষিদের কল্পনাশক্তিতে। কুবেরের
পুষ্পকরথ যেন আজকের aeroplane। ভগীরথের গঙ্গাকে মর্ত্যে আনবার প্রচেষ্টা
তো নদীর কৃত্রিম দিক পরিবর্তন; বাঁধ রচনার মতো আধুনিক irrigation প্রণালীর আগাম ঘোষণা। Semiconductor electronics আবিষ্কারের
বহুপূর্বে সঞ্জয়ের বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠের নখে
কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের দূর-দর্শন তো Television-এ live
telecast-এরই নামান্তরমাত্র। পাশুপত অস্ত্র বা শক্তিশেলের মত
মারণাস্ত্র আজকের Atom bomb বা Carpet bombing-এর সতর্কবাণী। ভীষ্মের শরশয্যায় অর্জুনের বাণনিক্ষেপের দ্বারা প্রপিতামহের
তৃষ্ণা নিবারণের ছবি মনে পড়ে -- তৎকালীন যুগে pumping-এর
দ্বারা ভুগর্ভস্থ জলের ব্যবহার আজকের মতো ছিলনা – তা সত্ত্বেও
কি নিখুঁত চিন্তাশক্তি! আইনস্টাইনের চতুর্দশতম পূর্বপুরুষও যে যুগে জন্মাননি, সেই
যুগে Relativity বা
Time Travel –এর মতো জটিলতম বৈজ্ঞানিক তত্ত্বকথার এই ললিত বিজ্ঞান-ঋদ্ধ
বিশ্লেষণ বোধহয় সেযুগের ত্রিকালদর্শী ঋষিদের পক্ষেই সম্ভব! এরকম কত হাজারো নমুনা
যে ভাবীকালের জন্যে ছড়ানো আছে ভারতীয় প্রাচীন সাহিত্যের আনাচে কানাচে...। বুঝ লোক
যে জানো সন্ধান!
যে মরীচিকার অন্বেষণে প্রথমে বেরিয়েছিলাম,
শেষ অবধি তার খোঁজ পাওয়া গেল কি তাহলে? তাত্ত্বিক বিজ্ঞানীগণ নিশ্চিত সময়-সফর
সম্ভব, অন্তত খাতায়-কলমে। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে পরিস্থিতিটা বেশ জটিল। এখনো
বিজ্ঞানীকুলে নানা মুনির নানা মত। আর স্বভাবতই, যত মত তত পথ। কিন্তু সেসব পথের শেষ
কোথায়? শেষ যেখানে, নির্মম সত্য হল - সেখানে খ্যাপা এখনো খুঁজে ফেরে পরশপাথর!