Monday, May 14, 2012

দশে বশে--আগন্তুক


ক্রিকেট তুমি কার? খেলা, নাকি সিনেমার? নিলামে সেদিন ওঠেনি দর- অভিমানে দাদা পুনের ঘর। দাঁতে দাঁত চেপে
কেটেছে প্রহর- বহুচর্চিত সুমুখ সমর। আই পি এল না ঘোড়ার ডিম, কুড়ি-কুড়ি মিলে ছোট্ট ফিল্ম। অ্যাকশন আর স্পেশল এফেক্ট, হিরোর ভূমিকা ছিল পারফেক্ট। খেলল দাদা প্রাণভরে, নিখুঁত কেতায় বেশ করে- মাঠ পার করা চার-ছয়। দিনের শেষে জিতল ডন। ভক্ত ফ্যানের শান্ত মন- বাঙালির আর কি’বা চায়?
হজযাত্রার পুণ্যলগণ- ভাণ্ডার খুলে ইচ্ছেমতন, ভোটের ভয়ে খরচাপাতি যখন যেমন দরকার- দিয়েই দেবেন গৌরী সেন আছেন ভারত সরকার। পাঁচ বচ্ছরে হজ একবার কিম্বা মানস বারবার- পুঁজির চিন্তা একটুও নেই দিল্লি এসবে দিল্‌দার। বলল কাজী করছ কী!! বন্ধ কর ভর্তুকি। কি আশ্চর্য, বলেন কি! করের টাকায় ধম্ম হলে দেশের পক্ষে মন্দ কি! কি হবে এবার? সামনেই ভোট- জ্বালিয়ে মারল সুপ্রিম কোর্ট।
বাংলা সিনেমা এবারে সত্যিই প্রাপ্তবয়স্ক হল। একগাদা বিতর্কের পর মুক্তি পেল তিন ইয়ারের কথা। বিতর্কের কারণ- ছবি জোড়া রগরগে গালাগাল। বাসে ট্রামে ময়দানে অহর্নিশ অমৃতভাষ্যে অভ্যস্ত বাঙলি ছবির পর্দায় খুঁতখুঁতে। গত ‘বাইশে শ্রাবণ’ ভেঙে গেছে সেই ধারা। যাহোক সেন্সর বোর্ডের খাতিরে খ্যাতি পেলেও ব্যবসা বোধহয় আর হবে না। কারণ নকল প্রিন্টটি ইতিমধ্যেই টার্গেট দর্শকদের কাছে পু্রোনো।
মহাকরণে সাজো সাজো রব। সাতসকালে হচ্ছে কিসব! দুই দিদি নাকি সই পাতালেন? শ্রীমতী হিলারি পাড়া মাতালেন। রবি স্মরণের খানিক পরে- বৈঠক হল বন্ধ ঘরে। মিটিং নাকি খুব সফল- বলছে দিদির আমলা দল। কি কথা হল জানতি পারি? লগ্নি-বিদেশ-শ্রমিক-নারী? বললেন দিদি -বুঝে নিতে হয়, সব কথা বলা যায়না। খুচরো ব্যবসা করতে দাও- ওয়াশিংটনের বায়না।
২৫শে বৈশাখ, বাঙালি তার চেনা স্বরূপে। সাতসকালে ফুলের মালা ধূপের ধোঁয়ায় সারা দিনের ছুটি কাটানোর ছক আর নেপথ্যে অগ্রাহ্য করার জন্য চালানো কিছু চেনা গান। পথের মোড়ে মোড়ে ঘাসফুল ছাপ তেরঙ্গার নিচে মাল্যশোভিত দাড়িদাদু- কবিস্মরণ আর বিজ্ঞাপন, একই সাথে। হাত কামড়াচ্ছে আরেক ‘দল’। বুর্জোয়া তকমা এঁটে দেওয়ার শাস্তি। ‘ঠাকুর’ পুজোয় তাদের আর কেউ নেয় না।

সংবাদপত্রের পর সোশ্যাল নেটওয়ার্ক। সরকার বাহাদুর তালা লাগানোর নতুন দরজা পেয়েছেন। কার্টুন ছড়ানোর অপরাধে হালকা মারধোর-হুমকি ও শেষ পাতে কিছুক্ষণের হাজতবাস। শুধু বেয়াড়া অধ্যাপকের জন্যই নয়, যে কোন অসবুজ ব্যক্তির প্রতিই উপযুক্ত শিক্ষা। রামগরুড়ের পুরোনো ফতোয়াটি মনে পড়ছে বাঙালির। মন্দ লোকে বলছে যেভাবে কানাকে কানা, খোঁড়াকে খোঁড়া বলতে নেই, সেভাবেই কার্টুনকেও বোধহয়......
রাজ্যসভা ক্রমশঃ নাট্যসভা হওয়ার পথে। সচিন, লতার মতো ব্যক্তিত্বকে গুরুত্বহীন মনোনীত সদস্যপদ দেওয়ার পর নতুন নাটক- অভিনেত্রী রেখার মনোনয়ন। জয়া বচ্চন সভার নির্বাচিত সদস্যা। দুর্জনে বলে তার সাথে নাকি রেখার সম্পর্ক পেশাগত ও ব্যক্তিগত স্তরে......ফলও ফলেছে হাতেনাতে। জয়া আসন সরানোর আবেদন করেছেন। কাজেই, আইনসভায় রাজনৈতিক ছাড়াও অন্যতর কাজিয়া দেখার আশা করতেই পারেন সুধী নাগরিকবৃন্দ।
রাষ্ট্রপতির কার্যকাল ফুরিয়ে এল। তাই ডঃ শ্রীমতী প্রতিভা পাতিলের অবসরোত্তর জীবনে পুনের সরকারী জমিতে দিগন্তজোড়া প্রাসাদ, সংলগ্ন বাগান ইত্যাদির ব্যবস্থাও সুসম্পন্ন হয়ে গিয়েছিল। বাদ সাধল জনতা। রণাঙ্গনে নিহত সেনাদের স্ত্রীরা স্পষ্টই আদালতে যাওয়ার হুমকি দিলেন। অতএব পিছিয়ে এল দিল্লি, দুঃখপ্রকাশ করলেন স্বয়ং রাষ্ট্রপতি। প্রমাণ হল এদেশে রাষ্ট্রপতি ‘প্রথম’ নাগরিক। ‘বিশেষ’ নাগরিক নন।
পরিবর্তন কয় প্রকার ও কি? কি? উত্তর লিখতে গিয়ে চোখের জলে নাকাল হচ্ছে বাঙলি। আরাবুল নাকি ঘাসফুল নেতা ভুল করেনি সে বিলকুল। শিক্ষিকা বলে প্রতিবাদ কেন? বাম দিকে তিনি, সেকথা কি জানো? ছুঁড়ে মেরেছি তো জলের পাত্র- অন্য কত কি হতেই পারতো।আমি আছি, ভাইয়েরা আছেন, এছাড়া আবার কি কি চাও? সবাই মিলে দাবড়ে দোব, মিথ্যে যদি ভয় পাও।
১০
ভারতের শিক্ষার ইতিহাসে নবতম সংযোজন- ভারতীয় মন্দির পরিচালন প্রশিক্ষণ সংস্থা। স্থানঃ আমেদাবাদ। সিলেবাসঃ আধুনিক ও প্রাচীন পূজাপদ্ধতি, পূজা সংক্রান্ত শুভক্ষণ নির্ধারণ, মন্দিরের সম্পদ পরিচালন ইত্যাদি। মুখ্যমন্ত্রী বড়াই করে জানিয়েছেন প্রথম ব্যাচের পাস আউট প্রত্যেক ছাত্র কর্মজীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত। অচিরেই সতীদাহ, বলিদান, অস্পৃশ্যতা ইত্যাদির Practical ক্লাসের ব্যবস্থা করা যায় না কি? ভেবে দেখুন না।

About Us | Site Map | Privacy Policy | Contact Us | Blog Design | কথা তো বলার জন্যেই