বইয়ের সিরিজটা আমাদের বইয়ের আলমারিতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ জায়গা নিয়ে এসেছে। এবছর বইমেলায় হঠাৎই লিট্ল ম্যাগাজিন প্যাভিলিয়নে দেখা তাঁর সাথে। হাতের কাছে পেয়ে তাঁকে চেপে ধরা গেল। উনিও সানন্দে রাজী আমাদের সাথে কথা বলতে। প্রবীরবাবুর সাথে আড্ডায় বসার আগে আমরাও ওঁর কাজের সাথে পরিচিত হচ্ছিলাম ওঁর লেখা বইগুলো পড়ে। বুঝতে অসুবিধে হল না, তাঁর হাত ধরেই আমাদের রাজ্যে আজ 'যুক্তিবাদী চিন্তা' ব্যক্তি গণ্ডি পেরিয়ে আন্দোলনের রূপ পেয়েছে। মানুষের মনে বিজ্ঞানমনস্কতা জাগিয়ে তোলা এবং কুসংস্কারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর সাহস সঞ্চার করার চেষ্টায় দিনের পর দিন, বছরের পর বছর বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছুটে গেছেন, বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে, সত্য আর যুক্তির জোড়া ফলাকে হাতিয়ার করে হাটে হাঁড়ি ভেঙ্গেছেন বহু ভণ্ড 'বাবা'দের। টেলিভিশনে, রেডিওতে অনায়াসে মুখোশ খুলে দিয়েছেন মানুষের অন্ধবিশ্বাসকে মূলধন করে কোটিপতি হয়ে ওঠা প্রতারক জ্যোতিষীদের। তাতে জীবনের ঝুঁকিও নিতে হয়েছে। গত ৩০ বছরে তাঁকে খুনের চেষ্টা হয়েছে অন্তত কুড়িবার। তার পরেও আজ ৬৭ বছর বয়সেও তিনি সমান সক্রিয়… টেলিভিশনের টক-শোয়ে হাজিরা দিচ্ছেন, গ্রামে-গঞ্জে গিয়ে বক্তৃতা দিচ্ছেন, একটার পর একটা বই লিখে চলেছেন (ইতিমধ্যে তাঁর লেখা প্রায় ১৩ টি বই প্রকাশিত), গড়ে তুলেছেন আন্দোলনের জন্য সদা-প্রস্তুত এক বাহিনী। তাঁর নির্লোভ সাহসিকতা অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে অগুনতি মানুষকে। 'যুক্তিবাদী সমিতি'র বিভিন্ন শাখা ছড়িয়ে পড়েছে দিকে দিকে। তিনি এবং তাঁর লেখনী হয়ে উঠেছেন যুক্তিবাদীদের 'friend, philosopher and guide'।
প্রবীরবাবুর
সাথে দেখা করবার প্রস্তুতিপর্বেই আবার ওঁর সাথে মুখোমুখি সাক্ষাৎ 'Indian Association for theCultivation of Science'-এর এক আলোচনাসভায়। আর সেদিনই ওঁর সাথে আড্ডার দিনক্ষণ ঠিক করে নির্ধারিত
দিনে গিয়ে হাজির
হলাম-
প্রবীরদা'র (প্রথমে প্রবীরবাবু বলায় বেশ ক্ষেপে উঠেছিলেন) দমদমের স্কুলবাড়িতে। অনেক বিষয় নিয়েই কথা
হলো, তর্ক হলো, আমরা কখনো একমত, কখনো ভিন্ন- কিন্তু কখনোই তাঁর বয়সোচিত গাম্ভীর্যের আড়ালে যাননি। আমরাও খোলাখুলি মনের কথা বলতে পেরেছি। বেশ বড়সড় আড্ডা, নানা বিষয়ে- 'নির্মল বাবা' র ভণ্ডামি থেকে ভারতের অন্যান্য অংশের যুক্তিবাদী আন্দোলনের গতি-প্রকৃতি। তারই
কিছু অংশ ভাগ করে নিলাম আজ 'কথা'-র পাতায়। পরবর্তী অংশ? দেখা যাক...
আমাদের
আড্ডার শুরুটাও হয়েছিল ‘IACS’-এর আলোচনাসভা কে ঘিরেই। সেখানে বিজ্ঞানে গবেষণারত এক ব্যক্তির মন্তব্য
ছিল- ‘যেখানে বিজ্ঞানের শেষ সেখানেই অদ্বৈতবাদের শুরু’। তাই আমরা তাঁর কাছে প্রথমেই
জানতে চাইলাম অদ্বৈতবাদটা কি? স্বভাবতই আমাদের পরবর্তী প্রশ্ন ছিল IACS এর মতো research institute –এ এসে জন্মান্তর,
অদ্বৈতবাদ, কর্মফল এই কথাগুলো শুনে ওঁর প্রতিক্রিয়াই বা কেমন? দেখে-শুনে নিন-