১
হৈ হৈ কাণ্ড- রৈ রৈ ব্যাপার। দেশের প্রধানের পদে বঙ্গ-সন্তান।
একগাদা কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি আর কু-নাট্যরঙ্গের পর কীর্ণাহারের প্রণব-বাবু রাইসিনা হিলসের
টিকিট পেলেন। সাধু সাধু। ইতিপূর্বে প্রধানমন্ত্রীর আসনে একবার বসবার সম্ভাবনা হয়েছিল তার। ‘ম্যাডাম’ বোধ করি ‘অন্তরাত্মা’র আওয়াজেই সে গুড়ে বালি দিয়েছিলেন। নীরব, রবার স্ট্যাম্প শাসকের ভূমিকায় তাঁকে অভিনয় করানো সহজ ছিল না, তাই এই ঘুরপথ। যা হোক, better late than never।
টিকিট পেলেন। সাধু সাধু। ইতিপূর্বে প্রধানমন্ত্রীর আসনে একবার বসবার সম্ভাবনা হয়েছিল তার। ‘ম্যাডাম’ বোধ করি ‘অন্তরাত্মা’র আওয়াজেই সে গুড়ে বালি দিয়েছিলেন। নীরব, রবার স্ট্যাম্প শাসকের ভূমিকায় তাঁকে অভিনয় করানো সহজ ছিল না, তাই এই ঘুরপথ। যা হোক, better late than never।
২
হজ যামু
ভাই, পয়সা দেও, পাঁচ হাজারের দল। মন্ত্রী কোটায় পুণ্যি করুম দেশের টাকাই বল।
সুপ্রিম কোর্ট খড়গহস্ত সব কিছুতেই বাগড়া- পাঁচ হাজার নয়, তিনশো কর, করের টাকা কি
মাগনা? যুক্তি? নাকি জন-মোহন- কি করবেন মনমোহন? ভোটের কথা ভাবলে এবার বিল আনবেন চটপট-
ক্যাঁচকলা খান বিচারপতি, জনগণই তো সম্পদ। এর আগেও ছিল শাহবানু কেস- ধন্যি রাজার
পুণ্যি দেশ।
৩
নবরাত্রি ও
কুমারী পুজোর সাথেই নারী মর্যাদার নতুন উদাহরণ দেখল দেশ। ছাত্রীকে মূত্র-পান
করালেন সুপার। তরুণীকে সর্বসমক্ষে, এমনকি ক্যামেরার সামনে হেনস্থা করল জনসাধারণ।
নাবালিকাকে সাত-পাকে ঘোরালেন পিতা। কন্যা-ভ্রূণ হত্যা এখনও লাগামছাড়া। সরকারী
অর্থে জনসচেতনতা’র প্রকল্প- বোঝাই যাচ্ছে সুপারহিট! মাতৃ-তান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা? সিন্ধু-সভ্যতার
সাথেই- মিউজিয়ামে।
সভা-ঘর
লোকারণ্য মহা ধূমধাম- বরুণ দেবতা লাগি করিছে প্রণাম। মাধুরী মুজরো করি দেবতা চরণে-
মাগিল বৃষ্টি-কণা নমিয়া যতনে। বরুণ তুষ্ট নহে প্রাচীন কলাতে- নষ্ট পুরনো চাল, বাড়িল
না ভাতে। ওসবে ভোলে না মন চাই সূক্ষ্ম কটি- কোথায় বিপাশা ওরে, কোথা গেলি ক্যাটি?
তোদের ভাঁড়ারে আছে ‘সানি লিওন’। তবু কেন বাছাধন পূজায় কৃপণ? চাস যদি বর্ষা- হতে
চাস পুষ্ট, ঠিকঠাক ভোগ লাগা- কর মোরে তুষ্ট।
৫
ব্ল্যাক-মেল নাকি কূটনীতি? কোনটার বেশি বল? দিদি বলেন গোসা করেই সবথেকে ভালো ফল। যদি না হয় ঋণ মকুব, যদি না দাও টঙ্কা। সব কিছুতেই বসব বেঁকে- বাজবে রণ-ডঙ্কা। একই পথে হাঁটবো মিলে কদম পর কদম- ঠিক সময়ে ভোল বদলে হাসলেন মুলায়ম। U.P. পেল আটশো কোটি- দিল্লি দিলেন বর। অগ্নিকন্যা শূন্য হাতে- ফিরতে হল ঘর।
ব্ল্যাক-মেল নাকি কূটনীতি? কোনটার বেশি বল? দিদি বলেন গোসা করেই সবথেকে ভালো ফল। যদি না হয় ঋণ মকুব, যদি না দাও টঙ্কা। সব কিছুতেই বসব বেঁকে- বাজবে রণ-ডঙ্কা। একই পথে হাঁটবো মিলে কদম পর কদম- ঠিক সময়ে ভোল বদলে হাসলেন মুলায়ম। U.P. পেল আটশো কোটি- দিল্লি দিলেন বর। অগ্নিকন্যা শূন্য হাতে- ফিরতে হল ঘর।
৬
বিশ্বজোড়া
শোরগোল- লন্ডনে ভিড় থিকথিক। চার বচ্ছরে খেলার আসর হচ্ছে অলিম্পিক। বাংলা থেকে
যাচ্ছে কে? খেলোয়াড়, নাকি অ্যাথলিট? পেজ-ভূপতি গেছেন শেষে যতই থাকুক খিটমিট। এছাড়া
আছে গোবিন্দ-ভোগ, তুলাই পাঞ্জিও সঙ্গে। দেখলে হবে, স্বাদের ব্যাপার, নো
কম্প্রোমাইজ বঙ্গে। কিলো পঞ্চাশ চালের বস্তা পাঠিয়ে দিলুম সস্তায়- সোনা রূপো নয়
নাই বা জুটলো, প্রশংসাও তো কম নয়।
৭
একুশে জুলাই
শহীদ দিবস। ‘তৃণমূল’ স্তরের রাজনৈতিক কর্মীদের হত্যার প্রতিবাদের এই সভার
সাম্বাৎসরিক আয়োজন। সভায় আবার সেই বস্তাপচা বাম বিরোধিতার ডাক দিলেন দিদি।
স্বাভাবিক। ‘রাজনীতি’র মধ্যে ‘রাজ’ ইতিমধ্যেই প্রাপ্ত। আর নির্দিষ্ট ‘নীতি’র বালাই
কোনদিনই ছিল না। কাজেই সভার মূল প্রাপ্তি- অর্থহীন বক্তব্য, জোট সম্পর্কে নরম ও
কড়াপাকের ভবিষ্যৎবাণী এবং রাজধানীময় প্রবল যানজট।
৮
রাজ্য সরকারের নতুন জনসংযোগ প্রকল্প। রাজ্য জুড়ে রাখীবন্ধন উৎসব পালন। সরকারী খরচে ও সরকারী উদ্যোগে। বিরোধীদের হাতে হাতকড়ির বদলে হয়তো এবারে রাখী পরাবেন সরকারি কর্ত্রী/কর্তা। পাড়ায় পাড়ায় ক্যাডার যুদ্ধের বদলে মিষ্টিমুখ। খুব সাধু এবং স্বাদু প্রস্তাব। হবে নাই বা কেন? বাংলা মায়ের সংসারের প্রধান এখন যে শুধু মুখ্যমন্ত্রীই নন- তিনি ‘দিদি’ও তো বটেন।
৯
ঝুলি থেকে
বেড়াল বেরোল শেষ অবধি। হিলারি ক্লিনটনের সৌজন্য সফর, রাষ্ট্রদূতের শুভেচ্ছা কর্মসূচী
ইত্যাদি বহুবিধ নাটকে যখন বরফ গলল না, ওবামা বলেই বসলেন ভারতের আর্থিক নীতির
সম্পর্কে তার উষ্মার কথা। নানারকমের ভর্তুকি ও আমদানি শুল্কের ফলে ভারত এখনও
আমেরিকার মুক্ত মৃগয়া ক্ষেত্র নয়। আর এমন জনবহুল ‘বাজার’ অধরা রাখতে আছে! ছি!
১০
কর্ণাটকে
অনাবৃষ্টি। রাজ্য সরকার হুকুম করলেন সে রাজ্যের ৩৪ হাজার মন্দিরে মোট ১৭ কোটি টাকা
ব্যয়ে বরুণ দেবের পূজার্চনা ও যজ্ঞ করার। শোনা যাচ্ছে ব্যবস্থাটি কার্যকর হলে
জম্বু-কাশ্মীরে দেবসেনাপতি কার্তিকের পুজো, উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে লক্ষ্মী ও
কুবেরের পুজো, বিহার-উত্তরপ্রদেশে সরস্বতী পুজোর আয়োজন করা হবে ঘটা করে। আর
পশ্চিমবঙ্গে? বোধহয় গ্রহ-পুজোই ভরসা!