সক্কাল
সক্কাল এই জাতীয় বেদো ব্যাপার-স্যাপার বেমক্কা
কাঁচা ঘুমটা চটকে দিলে বড্ড বিরক্ত লাগে। বাথরুম থেকে বেরিয়ে ঘড়ির দিকে তাকালো। পৌনে সাতটা, কোন মানে হয়! এখনও অন্তত দেড় থেকে দু’ঘণ্টা ওর ঘুমনোর কথা। যাগ্গে, নিজের শরীরই যদি ঘুমে জল(মল) ঢেলে দেয় তাহলে আর
কিই বা করা। যা হোক, ঘুম ভেঙেছে মানেই এখনই উঠে পড়তে হবে তার কোনো মানে নেই। মেসের সকলেই
মড়ার মতো ঘুমোচ্ছে। দিপু বোতল থেকে একটু জল গলায় ঢেলে বিছানায় আত্ম-সমর্পণ করলো।
বালিশে মুখ গুঁজতেই বিটকেল গন্ধ নাকে এসে লাগলো।
গত একমাস ধরে কাচবো কাচবো করে আর কাচা হয়ে উঠছে না। আজকাল অবিশ্যি এই গন্ধটাতেই ওর ভালো ঘুম আসে। যদিও কেউ ওকে নোংরা বললে তা একেবারেই মেনে নেবে না। সপ্তাহে নিয়ম করে একদিন জামাকাপড় কাচায়, বিছানার চাদর মাসে একবার, গামছা ছ’মাসে একবার আর মশারি বছরে একবার। যদিও শেষ কবে মশারি কেচেছিল সেটা ঠিক মনে পড়ে না। ঘরে ঝুল ভালোই জমেছে। তবে সেগুলো ওকে বিরক্ত করে না, তাই দিপুও ওদের প্রাণে ধরে ঝেড়ে ফেলতে পারে না।
গত একমাস ধরে কাচবো কাচবো করে আর কাচা হয়ে উঠছে না। আজকাল অবিশ্যি এই গন্ধটাতেই ওর ভালো ঘুম আসে। যদিও কেউ ওকে নোংরা বললে তা একেবারেই মেনে নেবে না। সপ্তাহে নিয়ম করে একদিন জামাকাপড় কাচায়, বিছানার চাদর মাসে একবার, গামছা ছ’মাসে একবার আর মশারি বছরে একবার। যদিও শেষ কবে মশারি কেচেছিল সেটা ঠিক মনে পড়ে না। ঘরে ঝুল ভালোই জমেছে। তবে সেগুলো ওকে বিরক্ত করে না, তাই দিপুও ওদের প্রাণে ধরে ঝেড়ে ফেলতে পারে না।
কিন্তু
তা বলে হঠাৎ অসময়ে পেটে ব্যথা, নিম্নচাপ কেন?
পরিস্থিতি ভালো ঠেকছে না। বদহজম হলো নাকি? কাল
অবিশ্যি একটু উল্টোপাল্টা... ভাবামাত্র আবার পেটটা মুচড়ে উঠলো, কেউ যেন নাড়ি-ভুঁড়ি
গুলো ধরে জোরসে নিংড়ে দিচ্ছে, সঙ্গে চোঁয়া ঢেকুর। নাহ্, আর বিছানায় শুয়ে থাকা যায়
না, এবার হয়তো এখানেই... অগত্যা বিছানা পরিত্যাগ করে পুনরায় শৌচালয় গমন এবং এইবার
সম্পূর্ণ তরল বর্জন।
এ তো আচ্ছা ঝামেলায় পড়া গেল! কাল রাতে অনেকদিন পর মেসে বেশ ভালো খাওয়া-দাওয়া হয়েছিল। সারা মাস ধরে কুমড়োর ঝোল আর আলুভাতে ডাল খাওয়ার পর যখন পুঞ্জিভূত বিক্ষোভের বিস্ফোরণ সমাগত, সেই সময় মেস-শাবকদের শান্ত করতে ঢালাও ভোজনের আয়োজন করা হয়েছিল। মাংসভাত আর সরভাজা অব্দি ঠিকই ছিল। কিন্তু শেষপাতে লোভে পড়ে একবাটি ছানার পায়েস আর দু’খান আম খাওয়ার পরই দিপু বুঝেছিল বাড়াবাড়ি হয়ে গেছে। এমনিতেই সন্ধেবেলার এগরোল ছিল। পরিস্থিতি সামাল দিতে একখান পুদিন-হারা খেয়েছিল, যদি হজম হয়ে যায়। বিপদ যে তাতে আটকানো যায়নি বোঝাই যাচ্ছে। পেটের ভেতর সব শালা ঘেঁটে ঘ হয়ে গেছে।
আর ঘুম
হবে না। ব্রাশে পেস্ট লাগাতে লাগাতে মেজাজটা খিঁচড়ে গেল। আজ ওকে ইউনিভার্সিটি যেতে হতো। কি যেন একটা সেমিনার আছে। স্যার বারবার যেতে বলেছেন। পেটের ব্যামোয়
সেখানে যেতে না পারলে... না, ওই
ছাইপাঁশ সেমিনারের অনন্ত বিরক্তিকর বকবক অথবা স্যারের তিরস্কার কোনটা নিয়েই সে বড়
একটা ভাবিত নয়। এগুলোকে
বেশি গুরুত্ব দিলে নিজের কাছে নিজের
গুরুত্বটা কমে যাবে এই চূড়ান্ত বোধ ওর একটু
আগেই হয়েছিল। এখনো বেশ মনে পড়ে সেই বছর দু’য়েক আগে মাস্টার্স শেষ করে জীবনে প্রথমবার বেকারত্বের নিদারুণ অভিজ্ঞতা।
বাপের ঘাড় মটকে কর্মহীন জীবনযাপন, আর কেউ ‘কি করছো?’ প্রশ্নটি করলেই এক বস্তা
বাজে বকে চক্ষুলজ্জা নিবারণ-
‘ভাবছি, চাকরি করবো নাকি আরও পড়াশুনো...’ এই জাতীয়। আদতে ‘চাকরি’ বস্তুটি পটাদার মুদির দোকানে বিক্রি হয় না এবং
অকারণ পড়াশুনো করে আর যাহোক পেট ভরে না।
এহেন চরম
দুর্দিনে পিএইচডি করার মোক্ষম ফন্দিটি মাথায় আসে। বেশ মজাদার ব্যাপার। কাজ করছি,
কিন্তু না করলেও হয়। সরকারি মাসোহারা যা মেলে তাতে নিজেরটুকু বেশ ভালোই মিটে যায়।
অন্তত বাড়িতে হাত পাতার কষ্ট থেকে মুক্তি। আর লোকজনকে পিএইচডি করছি বললেই খালাস, ‘ও আচ্ছা বেশ বেশ’ বলে সুড়ুত করে কেটে পড়ে। এহেন নির্ঝঞ্ঝাট জীবন গত
দু’বছর ধরে তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করছে ও। কাজকম্মে মতি কোনদিনই ছিল না। প্রথম প্রথম স্যার খুব বকাঝকা করতেন। ও ভাবলেশহীন মুখে শুনতো। যে কানে শুনতো, সেই কান
দিয়েই বের করে ফেলতো, অন্য কান অবধি বয়ে নিয়ে গেলে পাছে মাঝপথে ভুল করে
মাথায় কিছু রয়ে যায়। একদিন স্যার বলা ছেড়ে
দিলেন। তারপর থেকে দিপুকেও কালেকস্মিনে ইউনিভার্সিটি
দেখা যেত।
ব্যতিক্রম
সেমিনার। ওইটি ও সাধারণত মিস করে না। কারণ খুব
সোজা। বিনি পয়সায় ওর মতো নিষ্কর্মার ঢেঁকিদের জন্য অনর্থক পাত পেড়ে ভোজনের এ হেন এলাহি আয়োজন ছেড়ে দেওয়াটা বোকামি। দিপু অলস হতে পারে, বোকা কখনোই নয়। আজকের সেমিনারে যাওয়ার মূল কারণটাও একই ছিল।
কিন্তু সকাল সকাল পেটটা শুভ কাজে বিঘ্ন ঘটিয়ে বসল।
দাঁত
ঘষতে ঘষতে বারান্দায়। সামনে রাস্তায় লোকচলাচল কম। কিছু ফেরিও’লা, তাদের কয়েকজন ‘নাও’বাদী (যেমন মাছ, সবজি), কয়েকজন ‘দাও’বাদী (যেমন পুরনো বাসন, খবরের কাগজ) আর কিছু সকালের
অফিসযাত্রী যাদের প্রত্যেকেই ‘কামাও’বাদী। দিপু অন্যদিকে চাইলো। দূরে কে যেন জল ভরছে... আরে! ওই মেয়েটা না? দিপু আর একটু
মনোযোগ দিয়ে দেখলো, হ্যাঁ সে-ই। আহা, বড্ড ভালো দেখতে। এই পাড়াতে আসার
পর পরই মেয়েটাকে দেখেছে ও। ওর থেকে বয়সে হয়তো একটু ছোটই হবে।
তাতে কি? সুন্দরী নারীদের ঝাড়ি মারার সময় তাদের বয়স মাপতে হয় না। ‘মেয়েটার
নামটা যে কি?’... ভাবতে ভাবতেই মেয়েটা একবার এদিকে
চাইলো আর সটান দিপুর সাথে চোখাচোখি। উত্তেজনায় হৃৎপিণ্ডটা হাল্কা লাফিয়ে ওঠামাত্র পেটের
ভেতরটা কেমন পাকিয়ে গেল আর সাধের চোখালাপ রাস্তাতেই ফেলে রেখে দিপুকে দৌড়তে হলো অন্দরমহলে।
*******************************
দু’টো মেট্রোজিল-400 গিলে ইউনিভার্সিটি এসেছে দিপু। পৌনে তিনটে বাজে। সাড়ে
তিনটে থেকে সেমিনার, দু'ঘণ্টার। যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। ‘বেক ক্লাব’ থেকে প্যাকেট চলে এসেছে সেই
খবর ও আগেই পেয়েছে। সৌমেনকে
দিয়ে নিজের জন্য একটা প্যাকেট আগে থেকেই তুলে রেখেছে। ল্যাবে আসার আগে সাত নম্বর
বার যখন বাথরুম গিয়েছিল, মনে হয়েছিল এবার বুঝি নাড়িভুঁড়ি সুদ্ধু সব বেরিয়ে আসবে।
তক্ষুনি ফোনে খবর পায় চিকেন রোল, পকোড়া ইত্যাদি বিবিধ লোভনীয় খাদ্য সম্বলিত প্যাকেটটি ওর জন্য অপেক্ষা করছে। অগত্যা
বাবা মেট্রোজিলই ভরসা।
প্যাকেট নিয়ে ফাঁকা ল্যাবে
বসে আছে দিপু। এখনই খেতে ইচ্ছে করছে না। যদিও সকাল থেকে কিছু খায় নি, তবু ভালো
লাগছে না। বাড়ি চলে গেলেই হয়। শান্তিতে খাওয়া যাবে। কোনো সমস্যা হলেও অসুবিধা নেই,
এখানে বরং হাজারো ঝঞ্ঝাট। প্যাকেট হাতে ল্যাব থেকে বেরিয়ে পড়লো দিপু। বাইরে বেশ গরম। শরীরে একটা বিরক্তিকর অসোয়াস্তি, গা গুলনো ব্যাপার। হাঁটতে
হাঁটতে বাসস্ট্যান্ডের কাছে এসে দাঁড়ালো। এখান থেকে একটা রিক্সা নিয়ে নিলে ভালো।
এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখলো কোনো ফাঁকা রিক্সা দেখা যায় কিনা, নাহ্ নেই। অগত্যা রাস্তার ধারের
রেলিংটা ধরে দাঁড়ালো। শরীরটা একদম ভালো
লাগছে না, প্রচণ্ড জল তেষ্টা পাচ্ছে, একটু বসতে পেলে ভালো হতো, একটা
রিক্সা … হঠাৎ একটা অদ্ভুত যন্ত্রণা...পরক্ষণেই চোখের সামনেটা দুলে উঠলো...
আর কিছু মনে নেই দিপুর।
কতক্ষণ জানা নেই … মনে হলো যেন কোনো অন্ধকারের অতল
থেকে চোখ মেলে আলো পেলো। আশপাশে বেশ কিছু লোকের জটলা অনুভব করতে পারলো। কিছু টুকরো
কথা কানে ভেসে আসছে- 'এই তো চোখ খুলেছে', 'জল খান, জল খান', 'যা
গরম দাদা, এ’রকম তো প্রতিদিন হচ্ছে', এই
জাতীয়। মাথাটা এখনো ভারি হয়ে আছে। খুব লজ্জা লাগছে নিজের। সোমত্ত জোয়ান ছেলে হয়ে
মাটিতে উলটে পড়ে আছে আর তার জন্য কিছু লোক
অকারণে বিব্রত হচ্ছে। সামনের চা-এর দোকান
থেকে কেউ একজন গেলাসে জল এনে দিলেন, 'মৃগী আছে নাকি ভাই?'
জিজ্ঞেস করলেন। 'না তো' বলে জলটা নিলো ও। এক নিঃশ্বাসে পুরোটা শেষ করে একটু শান্তি পেলো। সকলকেই ধন্যবাদ জানালো, এখন শরীর
যে ঠিক আছে সেটাও জানাতে হলো তাদের প্রশ্নের উত্তরে। একজন ভদ্রলোক জিজ্ঞেস করলেন, 'রিক্সা
ডেকে দেব?' 'না না আমি পারব', এমনিতেই যথেষ্ট লজ্জিত, আর নয়। 'একটু বসুন,
তারপর যাবেন না হয়।' ও মাথা নাড়ল। আবার ধন্যবাদ জ্ঞাপন এবং
ভদ্রলোকের প্রস্থান।
ব্যস্ত মহানগরী, ব্যস্ত রাস্তা... একটু আগে ওর
কারণে খুব সামান্য হলেও সুর কেটেছিল। এখন আবার সব স্বাভাবিক ছন্দে ফেরত এসেছে।
পাশে কেউ এসে দাঁড়িয়েছে। মলিন ফ্রক, শুকনো, নোংরা,
উসকোখুসকো চুল একটা মেয়ে, মুখে একটা বোকা বোকা হাসি। শীর্ণ
হাতে একটা প্যাকেট ধরে বলল, 'দাদা, তোমার প্যাকেট।' দিপু ভালো করে চেয়ে দেখলো, সেই
সেমিনারের প্যাকেট।
রিক্সা করে ফিরছে দিপু। মাথাটা
এখনো একটু ধরে আছে। রিক্সার ঝাঁকুনিতে মাঝে মাঝে পেটে ব্যথা হচ্ছে। অনেকগুলো পুরনো
কথা মনে পড়ছে এক এক করে। ওই মলিন ফ্রক পরা মেয়েটিকে ও দেখেছিল কলেজে পড়তে আসার পর পরই। সে প্রায় ন-দশ বছর
আগের কথা। কলকাতায় তখন একেবারে নতুন... মফঃস্বল থেকে পড়তে আসা
নিতান্ত ভালো ছেলে। সিগারেট খাওয়া খারাপ জিনিস বলেই জানে। মদ-গাঁজা তো
মহাপাপ। কলেজ থেকে ফেরার পথেই বাসস্ট্যান্ডে মেয়েটি হাত পেতে চাইলো, 'টাকা দাও না দাদা, খাব।' তখন ওর
নিজের খাওয়ার টাকাই হাতে গোনা। তবু কি
মনে হতে পার্স থেকে দু'টাকা বের করে দিয়েছিল। এরপর প্রায় প্রতিদিনই যাওয়ার পথে ওকে দু'টাকা
একটাকা দিত, খানিকটা অভ্যাসের মতোই হয়ে গেছিল। এখানেই ঘুরে
বেড়াতো মেয়েটা, ওকে দেখলেই লাফিয়ে এসে 'দাদা' বলে একগাল বোকা বোকা হাসি।
সঞ্চিতার সঙ্গে 3rd year -এ যখন প্রায় প্রতিদিনই এখানে কলেজের পর ঘুরতো, সেই সময় একদিন মনে আছে ওকে ice cream কিনে
খাইয়েছিল। সেখানে বাস্তবিক আন্তরিকতা কতটুকু আর কতটুকু সঞ্চিতার সামনে নিজেকে
মহানুভব প্রমাণের চেষ্টা সে প্রশ্ন অনর্থক। সদ্য প্রেমের জোয়ারে ভেসে কত নতুন প্রেমিক তো কত মুখোশ পরে
ওখানেই ice cream খায়,
সে নাহয় খাইয়েছিল।
সে যা হোক, তারপর যেন
হঠাৎ করেই মেয়েটা কোথায় উবে গেল। দিপুরও হাজারটা কাজের মধ্যে একটা ভিখিরি মেয়ে
কোথায় গেল সেটা নিয়ে ভাববার সময় ছিল না। মধ্যে অনেকগুলো বছর কেটে গেছে। আজকাল
বাসস্ট্যান্ডের ওখানে নতুন একদল বাচ্চাকাচ্চা দেখা যায়। ওরা আসে, টাকা চায়। দিপু এখন রোজগার করে, মাস
গেলে হাতে টাকার চেক পায়। পয়সার মর্ম বোঝে। তাই শুনেও না শোনার ভান করে অন্য দিকে
মুখ ঘুরিয়ে নেয়। টাকা তো আর বিলনোর বস্তু নয়। ওদের ভিক্ষে না দেওয়ার হাজারটা
যুক্তি ওর কাছে আছে। তবু আজ রিক্সায়
যেতে যেতে একটা প্রশ্ন ওর মাথায় ঘুরছে। আচ্ছা,
ওদের কখনো প্রচুর খেয়ে পেট খারাপ হয়েছে? এই যেমন ওর হলো। বা, মাংসের পর ছানার পায়েস খেয়ে বদহজম বা চোঁয়া ঢেকুর?
না বোধহয়। এসবই ওদের কাছে অজানা অভিজ্ঞতা।
মনে পড়ে যাচ্ছে, ছোটবেলায় ফাইভ-সিক্সে পড়তে ছাব্বিশে
জানুয়ারি বা পনেরই আগস্ট সকালে স্কুলের চিরাচরিত অনুষ্ঠানের পর স্কুলের সব ছেলেদের
হাতে দুটো বিস্কুট আর একটা কমলালেবু দেওয়া হতো। স্কুলের গেটের বাইরে ভিড় করে থাকত
পাশের বস্তির ছেলেমেয়েগুলো। ওরা বেরোলেই বিস্কুট আর কমলালেবু চাইবে বলে। নির্দ্বিধায় প্রতিবার দিয়ে দিত ওরা।
কেন দিতো সেটা জানে না। এটুকু
বুঝতো, যে প্রতিবার দেওয়ার পর একটা অদ্ভুত আনন্দ হতো।
আজ আবার অনেক বছর পর সেই
আনন্দটা অনুভব করছে ও। সেই ছোট্টবেলার তৃপ্তি। হয়তো
এতক্ষণে মেয়েটার খাওয়া হয়ে গেছে। হয়তো আজ প্রথমবার ওর একটু বদহজম হবে। হাল্কা চোঁওয়া ঢেকুর। নাহ্, এর বেশি কিছু দেওয়ার ক্ষমতা হয়তো ওর
নেই। বাড়ি চলে এসেছে। পেটটা আবার ব্যথা করছে দিপুর। আবার একবার মনে হচ্ছে.........