বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে আমাদের অতীত-চারণের দ্বিতীয় অধ্যায়... আজকের ‘পুরনো কথা’: ‘ইচ্ছে... -- হিজিবিজবিজ’ (১১/৮/১১, সকাল ১০:৩০)
ছবির উৎস: লিঙ্ক |
আচ্ছা, জীবনের কাছে
আপনার প্রত্যাশা কি?
এ নিয়ে বিস্তর ভেবেছেন নিশ্চয়। কোন সঠিক
উত্তর পেয়েছেন কি? যাঁরা পেয়েছেন বা পেয়েছেন বলে নিজেদের বিশ্বাস করাতে পেরেছেন তাঁরা সত্যিই ভাগ্যবান। হয়ত বা প্রকৃত অর্থেই সুখী। যাঁরা পান নি...... আমি তাঁদের দলে। ছোটবেলায় ‘aim in your life’ লিখতে গিয়ে পরীক্ষার খাতায় পাতার পর পাতা খুব লম্বা চওড়া বাতেল দিতাম। ঢপ দিচ্ছি জেনেই দিতাম। সেই লেখার মুখ্য উদ্দেশ্য তো ছিল শুধুই নম্বর পাওয়া। জীবন খুব সহজ ছিল। চিন্তা-ভাবনার দায়িত্ব ছিল বাবা-মার। তুমি শুধু আদেশ পালন করে যাও। তুমিও খুশী। তোমার বাড়ির সবাই খুশী। ব্যস, ওইটুকুই দুনিয়া মনে হত। চাপটা হল নিজে ভাবতে গিয়ে। দেখলাম, একজন কলেজে ভর্তি হয় পাশ করে কি চাকরি পাবে তার হিসাব করে!
প্রেম করে ঐ মেয়েটা ভালো বউ হতে পারবে কিনা ভেবে! চাকরি নেয় ভালো মাইনে পাওয়া যাচ্ছে কিনা দেখে! আপনি বলবেন, এ সবই কঠোর বাস্তব। জীবন তো আর রূপকথা নয়! জানি। আমারও কিছুটা ‘জীবন’ দেখা হয়েছে এতদিনে। জোর গলায় বলতে পারবেন, আপনার অন্যকিছু পড়ার কথা কোনদিন মনে হয় নি? বা মনে হয় নি, পড়াশোনা করতেই হবে কেন? কোনদিন মনে
উত্তর পেয়েছেন কি? যাঁরা পেয়েছেন বা পেয়েছেন বলে নিজেদের বিশ্বাস করাতে পেরেছেন তাঁরা সত্যিই ভাগ্যবান। হয়ত বা প্রকৃত অর্থেই সুখী। যাঁরা পান নি...... আমি তাঁদের দলে। ছোটবেলায় ‘aim in your life’ লিখতে গিয়ে পরীক্ষার খাতায় পাতার পর পাতা খুব লম্বা চওড়া বাতেল দিতাম। ঢপ দিচ্ছি জেনেই দিতাম। সেই লেখার মুখ্য উদ্দেশ্য তো ছিল শুধুই নম্বর পাওয়া। জীবন খুব সহজ ছিল। চিন্তা-ভাবনার দায়িত্ব ছিল বাবা-মার। তুমি শুধু আদেশ পালন করে যাও। তুমিও খুশী। তোমার বাড়ির সবাই খুশী। ব্যস, ওইটুকুই দুনিয়া মনে হত। চাপটা হল নিজে ভাবতে গিয়ে। দেখলাম, একজন কলেজে ভর্তি হয় পাশ করে কি চাকরি পাবে তার হিসাব করে!
প্রেম করে ঐ মেয়েটা ভালো বউ হতে পারবে কিনা ভেবে! চাকরি নেয় ভালো মাইনে পাওয়া যাচ্ছে কিনা দেখে! আপনি বলবেন, এ সবই কঠোর বাস্তব। জীবন তো আর রূপকথা নয়! জানি। আমারও কিছুটা ‘জীবন’ দেখা হয়েছে এতদিনে। জোর গলায় বলতে পারবেন, আপনার অন্যকিছু পড়ার কথা কোনদিন মনে হয় নি? বা মনে হয় নি, পড়াশোনা করতেই হবে কেন? কোনদিন মনে
ছবি: সুনন্দ |
হয় নি, সাংসারিক
জীবনের জাঁতাকলে নিজেকেই ভুলে যেতে বসেছেন? ইচ্ছে হয় নি, আজই এই চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে নতুন
কিছু করার? আবার
স্কুলে ফিরে গিয়ে জীবনটাকে নতুন করে শুরু করার? অনেককে দেখেছি, নিজের সমস্ত
ইচ্ছের গলা টিপে দিনের পর দিন একটা জীবনে অভ্যস্ত হওয়ার চেষ্টা করতে... যে জীবন
তারা নিজেরা কোনদিন চায় নি। তারা হয়তো কারও আদর্শ পুত্র। কারও আদর্শ স্বামী। বা
কারও আদর্শ পিতা। সেটাও তো একটা বিরাট সাফল্য! পরিবারের সবার মুখের হাসি দিয়ে
বোধহয় নিজের ভিতরের কোন এক বেয়াড়া, অপরিণতমনস্ক(!) সত্তার সাথে অহরহ
লড়াই করার জোরটাও তারা খুঁজে পায়। স্বস্তির জীবন ধীরে ধীরে ভুলিয়ে দেয় পুরনো
স্বপ্নগুলোকে। সত্যিই একটা সময় পর সেগুলো ‘কম বয়সের পাগলামি’ মনে হতে
থাকে। এদের দেখে আপনার কি মনে হয় জানি না...... আমার fossil ছাড়া আর
কিছু মনে হয় না। মাঝেমধ্যেই মনে হয়, আমিও ঐ ‘fossil’ হওয়ার দিকে এগোচ্ছি না তো? একটা
চোরাস্রোত তো আমাকে সারাক্ষণ সেদিকেই টেনে নিয়ে চলেছে! স্রোতটাকে আটকানোর চেষ্টা
করিনি এমন নয়। কিছু desperate
সিদ্ধান্তও নিয়ে ফেলেছি। না, নিজের কাছে নিজেকে প্রমাণ করার জন্য নয়। সত্যি সত্যি
চেয়েছিলাম বলেই। নাহলে হয়তো জীবনটা অন্যরকম হতে পারত। কিন্তু ঠিক এরকমটাই কি
চেয়েছিলাম? নাঃ।
অনেকটা এরকম কিন্তু পুরোটা নয়। ভুল কোনটা সেটা পরিষ্কার। ঠিক কোনটা সেটা সত্যিই
আজও জানি না। কিন্তু জানি না বলেই আজ যেটা করতে ইচ্ছা করছে সেটা করব না কেন? আমি তো আর
মহাপুরুষ নই! ভবিষ্যৎ দেখতে পাই না। আমার ঠেকে শেখাই ভালো। আফসোস হতেই পারে।
তাতে কি? আবার নতুন
করে শুরু করব! চিত হয়ে শুয়ে কখনও রাত্রির আকাশ দেখেছেন? আমি দেখেছি।
অনেক রাত্রি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা। কেমন লাগে বলে বোঝাতে পারব না। আজ আবার দেখতে ইচ্ছা
করছে। শিশির জমে সর্দি লাগতে পারে জানি। কাল সকালে অফিসও যেতে হবে। তাতে কি? আপনি তো আর
আমাকে আটকাতে পারছেন না............আমি বড় হয়ে গেছি!