বাংলা
টুইটস্ - মানে, মেপে মেপে, শব্দ গুনে লিখবো না, তবে কথা দিচ্ছি একটা টপিকে বেশি ভাটাবোও না।
প্রিয়
হবিঃ বমি পরিষ্কার
প্রিয়
দাড়িঃ চে
প্রিয়
বডি-পার্টঃ টাক
পোচ্চুর
ফ্লেভারে পাওয়া যায়। ‘মেঘে ঢাকা তারা’ - পাহাড়ি স্যান্যাল, ‘ওরা থাকে এধারে’ – তরমুজ সুব্রত, ‘আশা ছিলো’ – তুলসী চক্কোত্তি, ‘মেঘের কোলে রোদ হেসেছে’ – চন্দ্রিল ভটচাজ্। তবে সবার সেরা স্টাইলটি নিঃসন্দেহে ‘অবাক পৃথিবী’ – ঋতুপর্ণ। প্রমাণ করেছেন, শুধু বিদেশিরা নয়, বাঙালিও বেবাক ফাঁকা মাথা নিয়ে ঘুরে বেড়াতে পারে। ঋতুপ্রেমীদের উদ্দেশ্যে
বিধিসম্মত সতর্কীকরণঃ খাওয়া-দাওয়া সবে শুরু, এখনই পানের খোঁজ
করবেন না।
প্রিয়
ড্রেসঃ কমল মিত্রের ড্রেসিং গাউন
এই
মালটির ওপর আমার হেব্বি লোভ। টপ ফর্মের উত্তমকুমারকে কাজল-সুচিত্রা আর গাউন-কমল
ছাড়া আর কেউ তুমুল ঝাড়তে পারে নি। এই ভাবে টানা পঞ্চাশ বছরের ওপর বাঙালি মেয়েদের
কুক্ষিগত করে রাখা ওনার মোটেই ঠিক হয় নি। কাজল-সুচিত্রা তো হতে চাইছি না, অগত্যা। তবে একটা ক্যাচ আছে – অনেকগুলো গাউন কিনতে হবে,
ড্রেসিং গাউন খানা কি রঙের তার কোনো প্রত্যক্ষ প্রমাণ আজ অব্দি
পাওয়া যায় নি। কমল মিত্রের গাউন পরা এবং ফোটোশপ ছাড়া রঙ্গিন
ছবি পেলে প্লিজ জানাবেন।
প্রিয়
অভিনেতাঃ ডন
রবি
ঠাকুরের সাথে এনার একটু মিল আছে - ইনি নাইট পেয়ে গেছেন। কিন্তু কিছুতেই ত্যাগ
করছেন না। অস্কার পেলেই নাকি নাইট ছেড়ে দেবেন। বাজারে জোর
গুজব – সিনেমাপ্রেমী
ও ক্রিকেটপ্রেমীরা একজোট হয়ে জালিয়ানওয়ালাবাগে মাস-সুইসাইডের ছক করছেন। অঙ্ক কষে
দেখা গেছে পরের ঘটনাটির সম্ভাবনাই কিঞ্চিৎ হলেও বেশি।
প্রিয়
রসিকঃ তারাপদ রায়
গদ্য
লিখতেন, পদ্যও।
তুলনা করে একবার বলেছিলেন, ‘যে তারাপদ পদ্য লেখে/ সে তারাপদ
অন্য/ এ তারাপদ গদ্য লেখে/ মদ্য খাওয়ার জন্য’। তুমুল মাতাল ও
পুলিশপ্রেমী। নিজের ভাষায় টুকছি – গেরস্তের ঘরে, দু’জন মধ্য-বয়স্ক, সম্ভ্রান্ত
অতিথি এসেছেন। উইক ডের সন্ধেবেলা, তাই যে যার আপিস থেকে
সরাসরি এসেছেন। কলিং বেল বাজলো। আট বছরের বাচ্চাটি দরজা খুলে চেঁচিয়ে, ‘মা, একজন ভদ্রলোক এসেছেন, সাথে
একটা পুলিশ’।
প্রিয়
উৎসবঃ জয়েন্ট এন্ট্রান্স
এই
উৎসবটি অদ্বিতীয়। এটি মাসাধিক কাল ধরে চলে, জনপ্রিয়তার নিরিখে বহুদিন হলো দুর্গাপূজাকে
পেছনে ফেলে দিয়েছে। বিশুদ্ধ-আমেরিকান-পুজো-মতে
এই উৎসবটি শুরু হয় সপ্তাহান্তে আর শেষ হয় মায়ের ভোগের লিস্টি বেরোনো নিয়ে। আগে
ছাপা কাগজে বেরোত, আজকাল ইন্টারনেটে বেরোয়। প্রকাশ্যে কচি পাঁঠা বলি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাঙালির
জীবনে যে ক্রাইসিস, থুড়ি, সাময়িক
শূন্যতা দেখা দিয়েছিল, নিভৃতে কচি মানুষ বলি করে এই উৎসবে
সেই অপূর্ণতা মেটানো হয়ে থাকে।
প্রিয়
পদবিঃ বোস
প্রিয়
পিৎজাঃ সুগার এন্ড স্পাইস
এ
পিৎজা না খেলে আপনি কোনোদিন জানতেই পারবেন না যে টপিং ব্যাপারটা সার্ভ করা পিৎজা
থেকে সম্পূর্ণ আলাদা করা সম্ভব। আপনার কোনো ইতালীয় বন্ধুকে চরম বাঁশ দিতে চাইলে
হাইলি রেকমেন্ডেড।
প্রিয়
ইস্কুলঃ বাংলা
বাংলা
ইস্কুল ব্যাপারটা যাকে বলে কিনা খুব টাচি ব্যাপার! আশপাশে আমার বয়েসী নতুন বাবা-মারা
নতুন প্রজন্মকে ইংরেজি ইস্কুলে ভর্তি করতে প্রচণ্ড ফাইট দিচ্ছেন, ফাটিয়ে দিচ্ছেন। বেশি বয়স হয়নি আমার, কিন্তু এখনই গলায় একটা
বিষণ্ণ সুর এনে বলা যায়, আমাদের ছোটবেলায়, থুড়ি স্কুল-বেলায়, মফস্বলে ইংরিজী স্কুলের
ছাত্র-ছাত্রী বেশ কম ছিলো। ফিকে লাল পার্টির কড়া হুকুম
ছিলো যে - "All animals are equal, but some animals are more equal than
others"। এম এল এ, নিদেনপক্ষে লোকাল কমিটির হর্ত্তা-কর্তা, ফিকে-লাল-পার্টির বিদ্বজ্জনেরা,
হাত-পা-নাক-মুখ-কাটা-সম্প্রদায় এবং হট্কে-চলনেওয়ালারা ছাড়া বাকি আর
সক্কলের জন্য মাতৃভাষা মাতৃদুগ্ধ। ইংরিজী স্কুলের কিছু কিছু
গার্ডিয়ানরা আবার বড়ো গর্ব করে বলতেন, আমার ছেলে আবার বাংলাটা মোটামুটি বলতে পারে, কিন্তু কিছুতেই ভালো লিখতে
পারে না। শুনতাম আর লুচির মত ফুলতাম। রাগ হতো - ক্যানো
আমি টানা ১০ লাইন বাংলায় লিখতে পারি? হায়, সে সোনালি দিন
গত হয়েছে, এখন শুধুই সোনালি গুহ। ভাগ্যের চাকা ঘুরেছে, বাংলা ইস্কুল হাতে গোনা,
শহরে বসবাস করেও বাংলা ইস্কুলে পড়াই বর্তমানে হট্কে-সম্প্রদায়ের
স্ট্যাটাস সিম্বল। একমাত্র আশার ব্যাপার - কিছু কিছু ইংরিজী ইস্কুলের ‘সেই’ ব্যাপারটা আজো বজায় আছে। কলকাতার একটি ইংরিজী ইস্কুলের ওয়েবসাইট থেকে
২টো ইন্সট্রাকশন ওনাদের ভাষাতেই তুলে দিলামঃ “It is compulsory for all
students to speak only in English within the school campus. Only transparent water bottles to be allowed in campus for Classes
III onwards.” ফাইন প্রিন্টটা পড়লেন কি? যেটা সরাসরি বলা নেই অথচ
আছে, সেটা হলো ক্লাস থ্রি থেকে ইস্কুলের জলের বোতলে
মদ খাওয়া শুরু করার কথা ভাবতে পারে এবং বন্ধুদের সাথে বাংলায় কথা বলতে চায় না, এরকম পরিবারই ভর্তির জন্য
অগ্রগণ্য। আমার বাংলা ইস্কুলে কবে এরকম লেখা হবে?
আপনার
কি প্রিয়? প্লিজ,
বাংলায় লিখবেন, ওটাই প্রিয় ভাষা।
পুনশ্চঃ
প্রিয়
বিরিয়ানিঃ রয়্যাল
পুনশ্চের
পুনশ্চঃ আমার স্ত্রীকে, তখন সদ্য-প্রোপোজ-করা-প্রেমিকাকে, রয়্যালে খাওয়াতে
নিয়ে গেসলাম। কড়া বামুন-বাড়ির মেয়ে, দোকানে ঢুকে প্রথম
প্রশ্নটাই ছিল, যেটা খেতে নেই, সেটা কি
এখানে পাওয়া যায়? উত্তরঃ না। খাওয়া শুরু করে আমি, ক্যামন লাগছে? উত্তর নেই, কি
করে থাকবে? মুখ তো ভর্তি। কিন্তু চোখজোড়া উজ্জ্বল। সেই আগন্তুকের উৎপল দত্তের মত। বাঙালিকে কি আর ‘থ্যাংক য়ু – ওয়েল কাম’ বলে ভালো লাগা জানাতে হয়?