আমার নাকি কর্মক্ষমতা কমে যাচ্ছে। এতটাই কমে যাচ্ছে, যে কিছুদিন পরে নিতান্ত ভাল-মন্দের
বিচারও আর করে উঠতে পারবো না। এই সিদ্ধান্ত আমার নয়, কোন ডাক্তারেরও নয়, শ্রীমতি সবজান্তা তিতিরের। কোন এক সাময়িক পত্রিকায় পড়েছে যে টিভি দেখার সঙ্গে বুদ্ধি কমে যাওয়ার সরাসরি যোগ আছে- ব্যস্, বকে বকে কানের পোকা খেয়ে ফেলল। যতই বোঝাই, ওরে, পরের সংখ্যায় দেখবি আবার উল্টো কথা বলেছে, তাও নতুন সাক্ষ্য-প্রমাণ দিয়ে- কে কার কথা শোনে? ‘সহচরী’ তে লিখেছে মানে ও নিশ্চয়ই বেদেও লেখা আছে। শেষ পর্যন্ত শান্তি রক্ষা করতে মেনেই নিলাম যে আমার বুদ্ধির গ্রাফ নিম্নমুখী। সাময়িক যুদ্ধবিরতি হলো।
বিচারও আর করে উঠতে পারবো না। এই সিদ্ধান্ত আমার নয়, কোন ডাক্তারেরও নয়, শ্রীমতি সবজান্তা তিতিরের। কোন এক সাময়িক পত্রিকায় পড়েছে যে টিভি দেখার সঙ্গে বুদ্ধি কমে যাওয়ার সরাসরি যোগ আছে- ব্যস্, বকে বকে কানের পোকা খেয়ে ফেলল। যতই বোঝাই, ওরে, পরের সংখ্যায় দেখবি আবার উল্টো কথা বলেছে, তাও নতুন সাক্ষ্য-প্রমাণ দিয়ে- কে কার কথা শোনে? ‘সহচরী’ তে লিখেছে মানে ও নিশ্চয়ই বেদেও লেখা আছে। শেষ পর্যন্ত শান্তি রক্ষা করতে মেনেই নিলাম যে আমার বুদ্ধির গ্রাফ নিম্নমুখী। সাময়িক যুদ্ধবিরতি হলো।
সাময়িক বলছি কেন?
কারণ আছে। এই তর্ক নতুন নয়। আমার মনে আছে, প্রথম যখন টিভি এলো কলকাতায়, নতুন গাড়ির মতো সমাদর পেতো মালিকের কাছে। আমরা যারা অনুষ্ঠান দেখতে পেতাম, তারা নিজেদের বেশ একটা অভিজাত ক্লাবের সদস্য মনে করতাম। তার একটা কারণ অবশ্য একটিমাত্র চ্যানেল আর সব মুখস্থ হয়ে যাওয়া অনুষ্ঠান। সে যাই হোক, কিছুদিনের মধ্যেই যখন টিভি বাড়িতে বাড়িতে ছড়িয়ে গেল আর গোটা দেশ একসাথে অকেজো হয়ে পড়তে শুরু করলো রামায়ণ, মহাভারত-এর কল্যাণে- একটা ফিস্ফাস্ শোনা যেতে শুরু করলো- জিনিসটা নাকি মোটেও ভাল নয়। সাহেবরা নাকি এটাকে ‘Idiot Box’ বলে। এটা শোনা ইস্তক একটা ধন্দ ঢুকেছিল মাথায়- ‘Idiot’ টা বলে কাকে, যে দেখছে তাকে, নাকি বাক্স টা নিজেই? তা সে প্রশ্নের উত্তর যা-ই হোক, বলতে আপত্তি নেই, আমি নিজে মোটেও টিভি দেখতাম না- অবশ্যই বুধবারের ‘চিত্রহার’ আর রোববার সকালের ‘রঙ্গোলী’ বাদ দিয়ে। শুক্রবার রাতের হিন্দি সিনেমা দেখার বেশ ইচ্ছে হতো, কিন্তু সেদিন আমাদের নাচের রিহার্সাল থাকতো। অন্যান্য অনুষ্ঠান? সে সব কোনদিন দেখা হয়নি। ওই যে, বোকা বাক্সের অপবাদ। তখনকার দিনে তো চ্যানেল কাকে বলে আমরা জানতাম না, তাই টিভি দেখাটা ওই যাকে বলে 'interactive' হয়ে ওঠেনি। রিমোট কন্ট্রোল বলতে আমেরিকাবাসী তুতুনের ছেলের মহার্ঘ্য খেলনা গাড়ির কথা মনে পড়তো। সন্ধে হলেই পাড়ার সব বাড়িতে জানালায় উঁকি দিলে বোধহয় দেখা যেত কিছু মানুষ স্থাণু হয়ে বসে আছে টিভির সামনে। না, কেউ রিমোটে চ্যানেল বদলাতো না। দেশজোড়া সম্মোহনের কারখানা বসতো।
কারণ আছে। এই তর্ক নতুন নয়। আমার মনে আছে, প্রথম যখন টিভি এলো কলকাতায়, নতুন গাড়ির মতো সমাদর পেতো মালিকের কাছে। আমরা যারা অনুষ্ঠান দেখতে পেতাম, তারা নিজেদের বেশ একটা অভিজাত ক্লাবের সদস্য মনে করতাম। তার একটা কারণ অবশ্য একটিমাত্র চ্যানেল আর সব মুখস্থ হয়ে যাওয়া অনুষ্ঠান। সে যাই হোক, কিছুদিনের মধ্যেই যখন টিভি বাড়িতে বাড়িতে ছড়িয়ে গেল আর গোটা দেশ একসাথে অকেজো হয়ে পড়তে শুরু করলো রামায়ণ, মহাভারত-এর কল্যাণে- একটা ফিস্ফাস্ শোনা যেতে শুরু করলো- জিনিসটা নাকি মোটেও ভাল নয়। সাহেবরা নাকি এটাকে ‘Idiot Box’ বলে। এটা শোনা ইস্তক একটা ধন্দ ঢুকেছিল মাথায়- ‘Idiot’ টা বলে কাকে, যে দেখছে তাকে, নাকি বাক্স টা নিজেই? তা সে প্রশ্নের উত্তর যা-ই হোক, বলতে আপত্তি নেই, আমি নিজে মোটেও টিভি দেখতাম না- অবশ্যই বুধবারের ‘চিত্রহার’ আর রোববার সকালের ‘রঙ্গোলী’ বাদ দিয়ে। শুক্রবার রাতের হিন্দি সিনেমা দেখার বেশ ইচ্ছে হতো, কিন্তু সেদিন আমাদের নাচের রিহার্সাল থাকতো। অন্যান্য অনুষ্ঠান? সে সব কোনদিন দেখা হয়নি। ওই যে, বোকা বাক্সের অপবাদ। তখনকার দিনে তো চ্যানেল কাকে বলে আমরা জানতাম না, তাই টিভি দেখাটা ওই যাকে বলে 'interactive' হয়ে ওঠেনি। রিমোট কন্ট্রোল বলতে আমেরিকাবাসী তুতুনের ছেলের মহার্ঘ্য খেলনা গাড়ির কথা মনে পড়তো। সন্ধে হলেই পাড়ার সব বাড়িতে জানালায় উঁকি দিলে বোধহয় দেখা যেত কিছু মানুষ স্থাণু হয়ে বসে আছে টিভির সামনে। না, কেউ রিমোটে চ্যানেল বদলাতো না। দেশজোড়া সম্মোহনের কারখানা বসতো।
ছবি: সুনন্দ |
তিতির জানেনা, আমার মতো বুড়িরও একটু হলেও বুদ্ধি আছে। বুঝতে কি আর পারিনা, কত্তখানি গলদ থাকে ঐ সব সিরিয়ালে? বিলক্ষণ বুঝি। একমাত্রিক চরিত্র, ঘোরানো সিঁড়ির মত প্লট, (অনেকদিন পরে দেখলেও বিশেষ পরিবর্তন বোঝা যায়না, তাই না?), দুম করে অপ্রয়োজনীয় সব ক্লাইম্যাক্স- সব ধরতে পারি। কিন্তু কি করবো? ঐ গুলোই যে ভাল লাগে! গল্পের গরু যদি গাছেই না উঠলো, তবে সেই গল্প শুনবো কেন বলুন দেখি? মাঠে চরা গরু তো আজন্ম দেখে আসছি। আড্ডা বাঙালির কেন এতো প্রিয় বলুন তো?--- অতিরঞ্জন। এককথায়। সেখানে প্রতিদিন সন্ধে সাড়ে ছ’টা থেকে সাড়ে ন’টা তো আমার স্বর্গ মশাই!
উৎস: লিঙ্ক |
আশা করি বললে ভুল হবে, কিন্তু স্বপ্ন দেখতে দোষ কি?
ক্রমশ...