উৎস : লিঙ্ক |
ছেলেবেলা থেকেই ভাবসম্প্রসারণ করে আসছি 'চিরসুখীজন ভ্রমে কি কখন'...অর্থাৎ চিরসুখী মানুষেরা কখনোই
ভ্রমণ করেন না...অথচ আমার ঘরকুনো স্বভাব নিয়ে সকলের মাথা ব্যথা। ক্যান্ রে বাবা? লোকের সুখ দেখতে পারিস না, না? কই , আমার মাথায় যখন 'চেতনাপ্রবাহ' না ওই ধরনের কি একটা থান ইট শব্দ এসে পড়েছিল, তোরা তো কেউ ফিরেও তাকাসনি। মুচ্ছো যাইনি ঠিকই, কিন্তু ঠোকাঠুকি লেগে সামনের দুটো দাঁত ভেঙে যে পেটে চলে গেল, সে বেলা? কী বলছিস বিড়বিড় করে? আমার দিকে তাকালেই মুচ্ছো যাবার সম্ভাবনা? তা সে কথা খুব ভুল বলিসনি...আমি নিজেই আয়নায় দেখে কয়েকবার ভিরমি খাবার পরে আয়নাটাকে জলের দরে বেচে দিলাম...যাকগে, ভোগ্যবস্তু যত কমে, ততই মঙ্গল...
এই দ্যাখো, ভোগ্য শুনেই মনে পড়ল ভোগ...একবার বেনারসে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘে অপূর্ব এক খিচুড়ি খেয়েছিলাম...তাতে সব প্রসাদ মেশানো...নারকেল নাড়ু, পায়েস সমস্ত...'তবু ভরিল না চিত্ত ঘুরিয়া ঘুরিয়া কত তীর্থ হেরিলাম'...ওইরকম প্রসাদ আর পেলাম না, তবু পড়িল না পিত্ত...তা আপনারা কিছু মনে করবেন না, আমি খাই একটু বেশি...বেশি খেতে গিয়ে একবার যা বিপত্তি হয়েছিল না! দমটম আটকে এক্কেবারে অজ্ঞান...ধরাধরি করে (সে বড় সোজা কথা নয়) তো হাসপাতালে নিয়ে গেল...ওষুধ খাবার জায়গা পেটে ছিল কিনা মনে নেই। যেটা মনে আছে, তা হল ডাকতারবাবুর বাংলাভাষার প্রতি ভালবাসা। উনি-ই প্রথম ও শেষ ডাকতার যাঁকে আমি বাংলায় ডিসচার্জ সার্টিফিকেট লিখতে দেখেছি। 'যা ফিরি অজ্ঞান তুই যা রে ফিরে ঘরে' লিখেছিলেন আমাকে। বড় ভাল ছিল গো মানুষটা...
ভ্রমণ করেন না...অথচ আমার ঘরকুনো স্বভাব নিয়ে সকলের মাথা ব্যথা। ক্যান্ রে বাবা? লোকের সুখ দেখতে পারিস না, না? কই , আমার মাথায় যখন 'চেতনাপ্রবাহ' না ওই ধরনের কি একটা থান ইট শব্দ এসে পড়েছিল, তোরা তো কেউ ফিরেও তাকাসনি। মুচ্ছো যাইনি ঠিকই, কিন্তু ঠোকাঠুকি লেগে সামনের দুটো দাঁত ভেঙে যে পেটে চলে গেল, সে বেলা? কী বলছিস বিড়বিড় করে? আমার দিকে তাকালেই মুচ্ছো যাবার সম্ভাবনা? তা সে কথা খুব ভুল বলিসনি...আমি নিজেই আয়নায় দেখে কয়েকবার ভিরমি খাবার পরে আয়নাটাকে জলের দরে বেচে দিলাম...যাকগে, ভোগ্যবস্তু যত কমে, ততই মঙ্গল...
এই দ্যাখো, ভোগ্য শুনেই মনে পড়ল ভোগ...একবার বেনারসে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘে অপূর্ব এক খিচুড়ি খেয়েছিলাম...তাতে সব প্রসাদ মেশানো...নারকেল নাড়ু, পায়েস সমস্ত...'তবু ভরিল না চিত্ত ঘুরিয়া ঘুরিয়া কত তীর্থ হেরিলাম'...ওইরকম প্রসাদ আর পেলাম না, তবু পড়িল না পিত্ত...তা আপনারা কিছু মনে করবেন না, আমি খাই একটু বেশি...বেশি খেতে গিয়ে একবার যা বিপত্তি হয়েছিল না! দমটম আটকে এক্কেবারে অজ্ঞান...ধরাধরি করে (সে বড় সোজা কথা নয়) তো হাসপাতালে নিয়ে গেল...ওষুধ খাবার জায়গা পেটে ছিল কিনা মনে নেই। যেটা মনে আছে, তা হল ডাকতারবাবুর বাংলাভাষার প্রতি ভালবাসা। উনি-ই প্রথম ও শেষ ডাকতার যাঁকে আমি বাংলায় ডিসচার্জ সার্টিফিকেট লিখতে দেখেছি। 'যা ফিরি অজ্ঞান তুই যা রে ফিরে ঘরে' লিখেছিলেন আমাকে। বড় ভাল ছিল গো মানুষটা...
ধারাবিবরণী ২
যে কথা হচ্ছিল --- ভাল মানুষ কি আর নেই পৃথিবীতে? আছে, অনেক আছে... সেদিন যে কুট্টিমানি, মানে আমার
ছোটোমাসি ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে ঘাম মুছবার জন্য রুমালটা বার করতে গেল, আর সেই
সুযোগে একটা খাম টুপ করে নিচে পড়ল, সেটা ভালমানুষ না হলে হত? আমি পায়ের আলতো কাজে খামটাকে সোজা সোফার তলে (বিশ্বকাপ ফুটবলের কী
মহিমা!!)...তারপর মানি চলে যেতে খাম খুলে দেখি, ক্লাসিকাল ডান্সের অনুষ্ঠান, তারই একখানা
কার্ড। সেটা তো আর নষ্ট হতে দেওয়া যায়না, তাই বয়ান অনুযায়ী নির্ধারিত দিনে, নির্ধারিত
হলে যেতেই হল। ভাবলাম মানির সাথে যদি
দুর্ভাগ্যবশত দেখা হয়েই যায়, তাহলে বলব, কার্ডটা ফেরত দিতে এসেছি...আর দেখা যদি না হয়, তবে তো
সোনায় সোহাগা। দেখা হলনা, জানেন...হি হি...আর দারুণ হল অনুষ্ঠান...
মনে মনে ভাল মানুষদের সেলাম
জানালাম...থাঙ্কু মানি কুট্টি...
কিন্তু ওই যে, এই দ্যাবাপৃথিবীতে অবিমিশ্র সুখ
আপনি পাবেন না...মনে করুন, খুব সুস্বাদু একটি পদ বেশ তারিয়ে তারিয়ে খাচ্ছেন, আমোদে চোখ
প্রায় বুজে এসেছে, এমন সময় মুখে পড়বে একটা বিচ্ছু লঙ্কা...দেবে সব বিগড়ে...
ছোটোমাসির ছেলেটিও তেমনি...বয়স সবে পাঁচ পেরিয়ে ছয়, এরই মাঝে মুখে মুখে কথা কয়...করেছে কী, একটা দড়ি নিয়েছে, তার পেছনে আর একটা দড়ি বেঁধেছে, তার পেছনে খানিক সুতলি, কিছুটা ইলেক্ট্রিকের তার, দুটো পুরনো সাদা রিবন...এই ভাবে বাঁধতে বাঁধতে পঞ্চাশ হাত লম্বা একটা রেলগাড়ি...সে গাড়ি সদা চলমান...একতলায় বসার ঘর হয়ে ডাইনিং, বারান্দা, সিঁড়ি, দোতলাতেও এঘর সেঘর ঘুরছে...যে কোনো মুহূর্তে যে কেউ হোঁচট খেতে পারে...আমিও খেলাম...মাথাটা ঠুকে গেল দেওয়ালে...চোখে সর্ষে ফুল...
কান ধরে দুটো জিলিপির প্যাঁচ দেওয়ার তাগিদে গাড়ির মালিককে খুঁজে বার করলাম...কি ব্যাপার এটা?
ট্রেন, দেখতেই তো পাচ্ছ...
ট্রেন বার করছি তোর...এক্ষুণি পড়ছিলাম না হোঁচট খেয়ে?
তা পড়তেই পার...accident হয়না? ট্রেনে কাটা পড়েনা মানুষ?
অ...
ছোটোমাসির ছেলেটিও তেমনি...বয়স সবে পাঁচ পেরিয়ে ছয়, এরই মাঝে মুখে মুখে কথা কয়...করেছে কী, একটা দড়ি নিয়েছে, তার পেছনে আর একটা দড়ি বেঁধেছে, তার পেছনে খানিক সুতলি, কিছুটা ইলেক্ট্রিকের তার, দুটো পুরনো সাদা রিবন...এই ভাবে বাঁধতে বাঁধতে পঞ্চাশ হাত লম্বা একটা রেলগাড়ি...সে গাড়ি সদা চলমান...একতলায় বসার ঘর হয়ে ডাইনিং, বারান্দা, সিঁড়ি, দোতলাতেও এঘর সেঘর ঘুরছে...যে কোনো মুহূর্তে যে কেউ হোঁচট খেতে পারে...আমিও খেলাম...মাথাটা ঠুকে গেল দেওয়ালে...চোখে সর্ষে ফুল...
কান ধরে দুটো জিলিপির প্যাঁচ দেওয়ার তাগিদে গাড়ির মালিককে খুঁজে বার করলাম...কি ব্যাপার এটা?
ট্রেন, দেখতেই তো পাচ্ছ...
ট্রেন বার করছি তোর...এক্ষুণি পড়ছিলাম না হোঁচট খেয়ে?
তা পড়তেই পার...accident হয়না? ট্রেনে কাটা পড়েনা মানুষ?
অ...
নেহাত
মাসি মিষ্টির রেকাবিটা হাতে নিয়ে ঢুকল সেই সময়ে, নয়তো দেখে নিতাম...
আপনারা একটু অপেক্ষা করুন কেমন...বেলতলায় কে যেন এসেছে...বেল বাজাচ্ছে...দরজাটা খুলে দিয়ে আসি...সেই সাথে মিষ্টিগুলোরও সদগতি...
আপনারা একটু অপেক্ষা করুন কেমন...বেলতলায় কে যেন এসেছে...বেল বাজাচ্ছে...দরজাটা খুলে দিয়ে আসি...সেই সাথে মিষ্টিগুলোরও সদগতি...
ধারাবিবরণী ৩
বলুন তো বেলতলায় কে বেল বাজাচ্ছিলো, আরে না মশাই, ন্যাড়া নয়...তবে প্রায় সেই রকমই এক
ভদ্রলোক...বিরলকেশ...যাকে বাংলায় বলে টেকো আর ইংরিজিতে বল্ডউইন...সেই মিস্টার
বল্ডউইন এসেছেন আমার উকিল ছোটোমেসো মিস্টার চেম্বারলিনের কাছে (যিনি নিজের
চেম্বারে সর্বদাই লীন থাকেন)...যাকগে, আইনি কচকচিতে আমাদের কী দরকার বলুন... এর চেয়ে মিষ্টির মিস্টিক গল্প অনেক
মনোরম...মিষ্টি বললেই মনটা কেমন রাবড়ির জন্য উচাটন হয় না? তৃষিত বক্ষ (নাকি জিহ্বা?) বলে রাখি
বেঁধে...সত্যি এমন সেকুলার, গণতান্ত্রিক খাবার, ...রাম আর বাবরির এইরকম শান্তিপূর্ণ
সহাবস্থান আর কোত্থাও মিলবে ভূভারতে?
বাবরির কথায় সেই দুঃসাহসী ছেলেটিকে
মনে পড়ল...ওর কথা বলেছি কি আপনাদের? ক্লাস ফাইভের হাফইয়ারলি পরীক্ষায়(আমি এই সেদিনও
জানতাম যে কথাটা হ্যাপি-আর্লি, আমার এক ছাত্র কিছুদিন হল সংশোধন করে দিয়েছে)...যাই
হোক যা বলছিলাম... সেই ছাত্রটি হাফইয়ারলি পরীক্ষায় বাবরের বাবার নাম লিখেছিল
বাচ্চু মিঞা, ব্র্যাকেটে ডাকনাম...বিপুলা এ পৃথিবীর কোন্ প্রান্তে বসে যে কোন্ গবেষক
এই তথ্য আবিষ্কার করেছেন বা করেননি, তা কে বলতে পারে!!
কি মুশকিল! ঢিল ছুঁড়ছেন কেন? ধারাবিবরণীর শেষে 'আগামী সংখ্যায় সমাপ্য' এই শব্দগুচ্ছ দেখতে পাচ্ছেন না বলে? স্থিতধী পাঠককুল, এইটিই শেষ সংখ্যা...যাচ্ছি রে বাবা যাচ্ছি... আমি কি জানিনা যে আপনাদের সময়ের দাম গলদা চিংড়ির চেয়েও বেশি?
এই দ্যাখো, ঘুরে ফিরে সেই মাছের কথায়...আসলে আমি যে মীন মাইন্ডেড, আই মিন, মীন মানে মাছ একটু বেশিই...
আরে, আবার ঢিল কেন? 'সময় যদি ফুরিয়ে থাকে হেসে বিদায় করো তাকে'... সত্যি রবীন্দ্রনাথকে এত তুশ্চু করেন আপনারা...