লোকটার নাম ‘ফ্র্যাঙ্ক’। প্রিয়জনেরা ডাকে ‘পাকো’ বলে।
পুলিশে চাকরি করে যদিও, তবু রাস্তায় দেখলে
ধরতে পারবেন না। ঘাড় অবধি লম্বা চুল, মধ্যযুগীয় গোঁফ আর হিপি-সুলভ পোশাকের সঙ্গে আর যাই হোক- পুলিশের যোগাযোগ দূর-দূরান্তেও খুঁজে পাওয়া মুশকিল। কিন্তু, সাধারণ ধারণাকে নস্যাৎ করে লোকটা শুধু দায়িত্ববান তা-ই নয়, তার থেকে একটু বেশিই। সারা শহরের বিভিন্ন অঞ্চলে, নানা ধরনের পুলিশি বিভাগের যেখানেই গেছে- একদিনের জন্যেও তার কর্তব্যবোধ টাল খায়নি। ‘পুলিশ ঘুষ খায়’ আর ‘সূর্য পূর্বদিকে ওঠে’ একই রকম ধ্রুব হয় না, হয়তো ওর মতো মানুষগুলোর জন্যেই। কিন্তু এ হেন প্রাচীর-সদৃশ নৈতিকতায় ধাক্কা খায় অনেক কিছু- ভালবাসার জনের আর্তনাদ, সহকর্মীর কটাক্ষ, ওপরওয়ালার তিরস্কার। ও ঘুষ খায় না বলে ওকে কেউ বিশ্বাস করে না- সঙ্গী থেকে শত্রু। তা বলে কি ও মানুষ নয়? ভয় পায় না? পায় বৈকি! সবথেকে বেশি ভয় পায় তাদের, যাদের ওর বন্ধু হওয়ার কথা। যে কোন দিন যে কোন পুলিশ বন্ধু ওকে ফাঁসিয়ে দিতে পারে- আর কিছু না, শুধু ওর ওপর হওয়া হামলার দিকে না তাকালেই হলো। পুলিশের চাকরি- দুষ্কৃতির ভাগ্যে শিকে কি কোনদিন ছিঁড়বে না? হলোও তাই। সমস্ত দুর্নীতির চাকে ঢিল মেরে- অনেক হুল খেয়ে যখন এসে পড়লো মাদকদ্রব্য বিভাগে, হঠাৎ একদিন মুখে গুলি খেতে হলো- ততদিনে ও বিখ্যাত হয়ে গেছে- অবশ্যই মিডিয়ার সাহায্যে। আর কে না জানে বিখ্যাত লোকের গায়ে আঁচড় দিতে আল কাপোনেরও হাত কাঁপে?
ধরতে পারবেন না। ঘাড় অবধি লম্বা চুল, মধ্যযুগীয় গোঁফ আর হিপি-সুলভ পোশাকের সঙ্গে আর যাই হোক- পুলিশের যোগাযোগ দূর-দূরান্তেও খুঁজে পাওয়া মুশকিল। কিন্তু, সাধারণ ধারণাকে নস্যাৎ করে লোকটা শুধু দায়িত্ববান তা-ই নয়, তার থেকে একটু বেশিই। সারা শহরের বিভিন্ন অঞ্চলে, নানা ধরনের পুলিশি বিভাগের যেখানেই গেছে- একদিনের জন্যেও তার কর্তব্যবোধ টাল খায়নি। ‘পুলিশ ঘুষ খায়’ আর ‘সূর্য পূর্বদিকে ওঠে’ একই রকম ধ্রুব হয় না, হয়তো ওর মতো মানুষগুলোর জন্যেই। কিন্তু এ হেন প্রাচীর-সদৃশ নৈতিকতায় ধাক্কা খায় অনেক কিছু- ভালবাসার জনের আর্তনাদ, সহকর্মীর কটাক্ষ, ওপরওয়ালার তিরস্কার। ও ঘুষ খায় না বলে ওকে কেউ বিশ্বাস করে না- সঙ্গী থেকে শত্রু। তা বলে কি ও মানুষ নয়? ভয় পায় না? পায় বৈকি! সবথেকে বেশি ভয় পায় তাদের, যাদের ওর বন্ধু হওয়ার কথা। যে কোন দিন যে কোন পুলিশ বন্ধু ওকে ফাঁসিয়ে দিতে পারে- আর কিছু না, শুধু ওর ওপর হওয়া হামলার দিকে না তাকালেই হলো। পুলিশের চাকরি- দুষ্কৃতির ভাগ্যে শিকে কি কোনদিন ছিঁড়বে না? হলোও তাই। সমস্ত দুর্নীতির চাকে ঢিল মেরে- অনেক হুল খেয়ে যখন এসে পড়লো মাদকদ্রব্য বিভাগে, হঠাৎ একদিন মুখে গুলি খেতে হলো- ততদিনে ও বিখ্যাত হয়ে গেছে- অবশ্যই মিডিয়ার সাহায্যে। আর কে না জানে বিখ্যাত লোকের গায়ে আঁচড় দিতে আল কাপোনেরও হাত কাঁপে?
যারা আল পাচিনো অভিনীত ‘সারপিকো’ (Serpico) ছবিটি দেখেছেন, তাঁরা অনেক আগে থেকেই জানেন কার কথা বলা
হচ্ছে। ফ্র্যাঙ্ক সারপিকো। জ্যান্ত কিংবদন্তী। ভিতর থেকে পচে যাওয়া এক সংগঠনের
বিরুদ্ধে একা মানুষের মাথা তুলে দাঁড়ানোর সত্যি গল্প। বহু পুরনো সিনেমা। হঠাৎ আজ
এর কথা মনে পড়লো কেন বলুন তো? সেটাই বলবো।
ধর্ষণের খবরে জবজবে আমাদের দৈনিক খবরের কাগজগুলো যখন
নড়েচড়ে বসে ‘আরেকটি ধর্ষণের গল্পে’, তখন সেটা আমাদের অবশ হওয়া অনুভূতিকেও নাড়া দেয়
বৈকি! তারপর একে একে আমরা জানতে পারি, কি ভাবে এটা মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর সরকারের
ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত করার প্রয়াস, পুরো সাজানো- যাকে আবার সমর্থন করেন কমিশনার
পচনন্দা। উলটোদিকে গোয়েন্দা-প্রধান শ্রীমতী সেন পরিষ্কার জানিয়ে দেন ‘যা রটেছে,
তার কিছু তো বটেই...’ হাবার মতো ইতিউতি চাইছি যখন জনগড্ডল, ধরাও পড়ে গেলো
দুষ্কৃতির একাংশ। এ সব নিয়ে দাদা, কাকা, জ্যাঠা সকলেই অনেক কিছু বলছেন, বলবেন। আমি
অতো জানিনে, বুঝিওনা। শুধু অবাক হলাম আজ সকালের Times of
India খুলে। দেখি কাঁচুমাচু মুখে বিবৃতি দিয়েছেন জয়েন্ট কমিশনার
জাভেদ শামিম আর দময়ন্তী সেন। ভাষ্য?
১) মুখ্যমন্ত্রী মোটেই তদন্তে নাক
গলাননি।
২) কোন দলাদলি নেই পুলিশ
ফোর্সে... সক্কলেই নাকি ছোটবেলায় ‘বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য’ লিখে হায়েস্ট পেয়েছিলো।
আর, খুব গুরুত্বপূর্ণ-
৩) পচনন্দার অধীনে(!) ‘আমরা সবাই
রাজা’ গেয়েই নাকি কাজ করেছে সব্বাই।
ওঁরা বলছেন নিজেদের উদ্যোগে দেখা
করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে, কিন্তু নিন্দুকে বলছে দিদি নাকি ডেকে পাঠিয়েছিলেন।
কে জানে? প্রাক্তন ডিজিপি ভুপিন্দর সিংহ বলছেন এমন নাকি আগে কখনো হয়নি। সফল,
উজ্জ্বল কোন পুলিশের নাকি এমন বিনা প্ররোচনায় কৈফিয়ত দেওয়ার নজির কোথাও নেই। তাই
ওঁর বিশ্বাস ওঁদের নিশ্চয়ই এসব বলতে বলা হয়েছে।
কে জানে? বেল যদি পাকেই, তা সে
পার্ক স্ট্রিটেই পাকুক ছাই পানি পুকুরে, কাকের তাতে কি? “আমরা শুধু ভাগ করে খাই
সেই গল্প...” আহা! যদি সারপিকো থাকতো এখানে!
এতদিনে ওর হাড়গোড়ের ওপর বাইপাসের
জলা-বোজানো কোন অট্টালিকা উঠতো বোধহয়...