Tuesday, July 26, 2011

দণ্ডিতের সাথে -- আগন্তুক



মাঝে মাঝেই একটা কথা শুনতে পাচ্ছি আজকাল। কাজি-রা নাকি ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েছেন সুবিচার দিতে, চটজলদি এবং মশলাদার বিচার। শুনতে খারাপ লাগলেও এইরকমটা নাকি সংবিধানের অভিপ্রেত ছিল না। মানে, বিচার নাকি সবসময়ই মানুষের জন্য, মানুষ বিচারের জন্য নয় (সত্যি?)Therefore, প্রশ্ন উঠছে, সত্যি যদি তাই হবে , তাহলে এতদিন ধরে এই যে হাজার হাজার মামলা ঝুলে থেকে আমাদের গর্বের সংবিধান কে ন্যুব্জ করে তুললো , তখন এই প্রতিবাদী কণ্ঠ কোথায় ছিল? কিন্তু
শান্ত চায়ের কাপ চিরকাল শান্তই যদি থাকল, তাহলে আমি আর বাঙালি হলাম কেন? মানে বিচার বিভাগ কে অতি সক্রিয়বলার সাহস তুমি কোথা থেকে পাও শালা?

দোহাই ধর্মাবতার, মানছি আমি নগণ্য, তবু বিচার আমারও প্রাপ্য, আমি সেই হতভাগা ভারতবাসী যার অধিকার আছে বিচার বা (অ)বিচার এর পক্ষে-(বি)পক্ষে নিজের প্রায় বুজে আসা আওয়াজ তোলার। এই যেমন রামের আঁতুড়ঘরটা ঠিক কত ভাগে ভাগ হলে (বা আদৌ ভাগ না হয়ে জাতীয় সম্পত্তি হিসেবে রেখে দেওয়া হলে) স্তন্যপায়ী ভারতীয়দের পক্ষে মঙ্গলজনক হয় তা নিয়ে একরকম রায় পাওয়া গেল (জয় শ্রীরাম ধ্বনি শোনা যাচ্ছে বুঝি?), সুভানাল্লা, কিন্তু উঁচু আসন সেই রায় নিয়ে বাগড়া দিলেন, না না, রামভক্তির উগ্র প্রকাশ থামাতে নয়, ভাগ করাটা কি কারনে জরুরী, সেটাই তার বক্তব্য। ব্যাস, সে বিচার আবার ৪০ বাঁও জলের তলায়।


আবার চাষের জমি তে যন্ত্র ফলানোর সাধু সরকারী প্রয়াস, তাতে যে কটি মামলা চলছিল সেগুলি পড়েই রইল একইরকম, শুধু নতুন করে কটি মামলায় রায় পাওয়া গেল। ভিনরাজ্যের, তবু নেচে উঠলেন সবুজদি। কালই আবার শিল্পপতির আবেদন-এ সাড়া দিয়ে বিচারের কোন বাণী শোনা যাবে কেউ জানে না। হয়তো লালের নাচন দেখব তখন দুচোখ ভরে। লাল-সবুজ এর দোল খেলার মাঝে ধানের শীষের ওপর শিশির বিন্দু দেখার ভাগ্য বোধহয় আর হল না।
তার ওপর আছে জনস্বার্থ। এই জনস্বার্থ বস্তুটি ঠিক কি, মানে পিৎজার মত সুস্বাদু নাকি ভাল চুলের গোড়ার কথা, সেটা কেউ ই জানে না। কিন্তু লাখো লাখো এই category’র মামলায় কোর্ট চত্বর সরগরম। এরই মধ্যে বিগত ৫ বছরে বিচারকেরা প্রায় ৮০০০ জনস্বার্থ মামলা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে গ্রহণ করেছেন, মানে কেউ বিচার চায়নি, বিচারই চেয়েছে মানুষকে!
প্রশ্ন উঠবে, আচ্ছা, এত অবিচারের যুগে বিচারবিভাগ যদি অতি সক্রিয়ই হয়, তাহলে তোমার জ্বলছে কেন বাপু? কারণ এই সক্রিয়তা যথাস্থানে নয়, বিচারব্যবস্থা আজও যথেষ্ট আধুনিক নয়, কাজেই সুযুক্তি এবং (প্রযুক্তিবিহীন) কুযুক্তি এর মাঝে বিচার আজও আমাদের অধরা, অপূর্ণ এবং ক্ষেত্রবিশেষে অবিচার-ও বটে।

About Us | Site Map | Privacy Policy | Contact Us | Blog Design | কথা তো বলার জন্যেই