Thursday, March 15, 2012

দশ-এ-দশ -- আগন্তুক



ভারতে বর্তমানে দাসপ্রথার সমস্যা অগ্নিগর্ভ। এদেশে রাজনীতিকরা নিজেদেরকে জনগণের
সেবক বলে থাকেন। তা, মালিকেরা আজকাল সেবকদের প্রতি যারপরনাই নির্মম হয়ে উঠছেন। এই যেমন মনমোহনের কথায় মন মোহিত না হওয়ায় জনৈক মালিক তাঁর দিকে ছুঁড়ে দিলেন জুতো। রাহুলের কথায় হুল ফুটল?- ব্যস্‌! একই দাওয়াই। শরদ পাওয়ারকে টাকা চুরির সন্দেহে powerful চড়। সাবধান – দাসবিদ্রোহ না ঘটে !!
দিদিমণির রাজত্বে একের পর এক বিঘ্ন। ‘আহা-মরি’ হসপিটালের বিপর্যয়ের রেশ কাটতে না কাটতেই একের পর এক শিশুমৃত্যু। মা-মাটি-মানুষের জমানায় মায়ের কোল শূন্য! এতগুলো উপাধি ধরা ডাক্তার- আছে কিসের জন্য? চাপান-উতোরে বিশেষ সুবিধে করতে না পেরে কর্তারা অন্য পথ ধরলেন। জেগে উঠল ‘জাগো বাংলা’। শিরোনামে স্পষ্ট অক্ষরে প্রতিবাদ জানালো- দিদির গর্ব- করছে খর্ব- বাম আমলের গর্ভ !!
বলিউড তারকা কয় প্রকার ও কি কি? প্রেমকুটে, মারকুটে, ভাঁড়কুটে ইত্যাদি। কিন্তু পর্দার বাইরে দেখা যাচ্ছে সবাই সমান দক্ষ অ্যাকশন হিরো। এই তো সেদিনই কিং খান খানকতক রদ্দা লাগালেন তাঁরই প্রাক্তন নির্দেশকের স্বামীকে। নবাবপুত্তুর আবার ফুর্তি করতে গিয়ে বাধা পেলেন- অমনি কথা কাটাকাটি- ঘুষি হাতাহাতি গড়ালো থানা অবধি। নেপথ্যে গুঞ্জন- নায়ক নেহি খলনায়ক হু ম্যায়......  
ইতিহাস প্রসিদ্ধ বিশ্বকাপ জয় ইতিহাসে ঠাঁই পেয়েছে বহুদিন হল। শততম শতরান শত প্রয়াসেও অধরা। উপরন্তু টিমের ‘সাহারা’ও যাই যাই করছিল। মিলিমিশি হারি আজ- এতটুকু নাহি লাজ। হেনকালে চৈতন্যোদয় টিম ইণ্ডিয়ার। অবিশ্বাস্য লঙ্কাবিজয় এবং ধারাবাহিক হারে বিরতি। আবার ধন্য ধন্য পড়ে গেল দেশময়, সংবাদপত্র জোড়া প্রশস্তিবচন। শাস্তরে বলেছে বটে- ঠেলার নাম ধোনি-জী।
চিনের প্রাচীর ডিঙ্গিয়ে এলেন আলিমুদ্দিনের কর্তারা। পরিবর্তনের আগুনে শুদ্ধ হয়েছেন আগেই। সমাজতন্ত্রের ভারতীয় সংস্করণে সায় দিয়েছে পলিট-বুড়ো। টুকটুকে লাল রঙে মিশিয়ে নিতে রাজি হয়েছেন ছিটেফোঁটা সবুজ-গেরুয়া ইত্যাদি রঙ। হবে নাই বা কেন? জীবন যে বর্ণময় সেটা ‘অখণ্ড অবসরে’ টের পাচ্ছেন সবাই। কাজেই মার্কসবাদ এ মার্কস, বাদ পড়তে চলেছেন অচিরেই। জয় গণতন্ত্রের জয়।
বইমেলা কর্তৃপক্ষের বাৎসল্যভাব দেখে কলকাতাবাসী পুলকিত। ইমরান খানের বক্তৃতাকালে তাঁরই শারীরিক কষ্ট সইতে না পেরে নিভিয়ে দিলেন আলো। কলকাতার ঐতিহ্যবাহী লোডশেডিং ভেবে সকলেই নিরুদ্বিগ্ন। চমকে উঠলেন শুধু ইডেন গার্ডেন কর্তারা। দেখেছো- আমরাও তো ছেলে ছোকরা ক্রিকেটারদের পরিশ্রম দেখেই এই কাজ করেছিলুম। তার বেলা কি নিন্দে কি নিন্দে! সত্যি একেই বলে পক্ষপাত।
বাংলা বন্‌ধ – বঙ্গজীবনের অঙ্গ। অঙ্গহানির ভয়ে তাই আবার হরতালের হাততালি দিল সদ্য-বিরোধী বামগোষ্ঠী। ডানদিদি আবার খড়্গহস্ত। বন্‌ধ তো আসলে তাঁরই অস্ত্র। সুতরাং সাবধান- ‘কাজে এসো’ ফরমান। মহাকরণে ফাঁকিবাবুদের রাতটা কাটলো বাজে, সকাল হতেই চশমা এঁটে বসতে হল কাজে। ইট পাটকেল ধর-পাকড়ে ছুটি কাটলো বেশ। ম্যাডাম বলেন সব ঠিক ছিল – ধন্য বঙ্গদেশ।
মৌলিক অধিকারের তালিকায় নবতম সদস্য -‘নিদ্রা’। কাজীবাড়ির রায়ে। শোনা যাচ্ছে ব্যর্থ প্রেমিক/ নিরীহ স্বামীরা তাদের অনিদ্রার কারণে অভিযোগ করতে পারবেন প্রাক্তন প্রেমিকা/ দজ্জাল স্ত্রীদের বিরুদ্ধে। ঘুমের ওষুধ বিনামূল্যে পঞ্চায়েত থেকে বিলি করবে জাতীয় কুম্ভকর্ণ কমিটি। সংসদে অধিবেশন চলাকালীন সর্বাধিক ঘুমোতে পারলে তন্দ্রাশ্রী থেকে নিদ্রারত্ন ইত্যাদি বিভিন্ন পুরস্কার প্রাপ্তির সম্ভাবনাও উজ্জ্বল। 
‘যেতে পারি কিন্তু কেন যাব’ জাতীয় মিষ্টি আবদার ছেড়ে শেষ অবধি বঙ্গ থেকে বিদায় নিল শীত। প্রথম-দ্বিতীয়-চতুর্থ ইত্যাদি বিভিন্ন ‘ইনিংস’এ দুর্দান্ত পারদর্শিতা দেখানোর পর অবশেষে প্যাভিলিয়নে। ভাগে কম পড়ল বেচারা বসন্তের। সুয্যিঠাকুর ইতিমধ্যেই সেঞ্চুরির পথে। কলকাতা বোধহয় আর লণ্ডন হয়ে উঠলো না। বরং আবু-ধাবির সাথে মিল পাওয়া যাচ্ছে। তাতে কি? ‘মরূদ্যান’ তো এই রাজ্যের গর্ব। 
১০
পার্ক-স্ট্রীট কাণ্ডে শোরগোল। মেয়েরা কেন রাতে-বিরেতে ঘোমটা ছাড়া বাইরে? ভয় ডর প্রাণে নাইরে? মিডিয়াই মূল ষড়যন্ত্রী / জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। জনতা এমন ছ্যাঁচোড় জিনিস-উৎপাত করে মারল/ সত্য তেমনই বিষম বস্তু- প্রকাশ হয়েই ছাড়লো। তাই শিষ্টের পালন করে দুষ্ট দমন করলেন দময়ন্তী সেন। আর বিভিন্ন পচা-গন্ধা মন্তব্যে মুখ পুড়লো পচনন্দা বাহিনীর।

About Us | Site Map | Privacy Policy | Contact Us | Blog Design | কথা তো বলার জন্যেই