ছবির উৎস: লিঙ্ক |
আসমুদ্র হিমাচল ভারতবর্ষ আবার উত্তাল। আণ্ণা হাজারের নেতৃত্বে
আবার একবার সবাই জন লোকপাল বিলের দাবীতে সরব। জয় গণতন্ত্র!
এই লেখা আপনারা পড়ার আগেই হয় তো একটা হেস্তনেস্ত হয়ে যাবে। অতঃপর বিলের আওতায় সমস্ত ভ্রষ্ট রাজনৈতিক নেতাদের বিচার এবং দুই বছরের মধ্যে শাস্তির বিধান। সুইস ব্যাঙ্কে জমে থাকা সমস্ত কালো টাকা ব্যাক টু দিল্লি। আর আমাদের ঠেকায় কে? স্বপ্ন দেখতে দোষ কি? স্বপ্ন নিয়েই তো আপনি – আমি বাঁচি! তা স্বপ্ন পূরণের জন্য কি করলেন আপনি? ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস আপডেট.........
বন্ধুমহলকে সগর্বে জানান দেওয়া যে আপনিও আছেন আণ্ণার ঠিক পাশেই। ব্যস? আবার কি? এরপর কোন একদিন হয় তো সতীর্থদের চাপে পড়ে মোমবাতি হাতে রাস্তায়! দাঁড়ান দাঁড়ান। দুর্নীতি দমনে নেমেছেন............ যাওয়ার আগে নিজের নীতিগুলো একবার ঝালিয়ে নিতে ভুলবেন না যেন। কাল আবার কোথাও কোন কাজে গিয়ে লম্বা লাইন দেখে কোন এক দালালকে ৫০ টাকা ‘বখশিস’ দিয়ে সামনে ঢুকে যেতে চাইবেন না তো? ট্রেনে বিনা টিকিটে ধরা পড়ে টিকিট চেকারকে যৎসামান্য ‘মিষ্টি কেনা’র টাকা দিয়ে মুক্তি পেতে চাইবেন না তো? বা কোন সরকারী অফিসে আরও দশটা ফাইলের তলায় চাপা পরে থাকা আপনার ফাইলটা কাকতালীয়ভাবে উপরে আনার জন্য জনৈক কর্মচারীকে কিছু ‘হাতখরচা’? মেরিট লিস্টের একেবারে তলানিতে পড়ে থাকা আপনার পুত্র/কন্যাটিকে শহরের কোন এক নামী কলেজে ভর্তি করানোর জন্য কোন এক ক্ষমতাবান নেতার দ্বারস্থ হবেন না তো? আরও বলব? থাক। হ্যাঁ, এসবই অতি ‘খুচরো’ পাপ। কিন্তু পাপ তো! আর কে না জানে, খুচরো জমেই একদিন নগদ হয়। দূর্ভাগ্যবশতঃ এই পোড়া দেশে পাপীদের সংখ্যাটাও তো নেহাত কম নয়।
এই লেখা আপনারা পড়ার আগেই হয় তো একটা হেস্তনেস্ত হয়ে যাবে। অতঃপর বিলের আওতায় সমস্ত ভ্রষ্ট রাজনৈতিক নেতাদের বিচার এবং দুই বছরের মধ্যে শাস্তির বিধান। সুইস ব্যাঙ্কে জমে থাকা সমস্ত কালো টাকা ব্যাক টু দিল্লি। আর আমাদের ঠেকায় কে? স্বপ্ন দেখতে দোষ কি? স্বপ্ন নিয়েই তো আপনি – আমি বাঁচি! তা স্বপ্ন পূরণের জন্য কি করলেন আপনি? ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস আপডেট.........
বন্ধুমহলকে সগর্বে জানান দেওয়া যে আপনিও আছেন আণ্ণার ঠিক পাশেই। ব্যস? আবার কি? এরপর কোন একদিন হয় তো সতীর্থদের চাপে পড়ে মোমবাতি হাতে রাস্তায়! দাঁড়ান দাঁড়ান। দুর্নীতি দমনে নেমেছেন............ যাওয়ার আগে নিজের নীতিগুলো একবার ঝালিয়ে নিতে ভুলবেন না যেন। কাল আবার কোথাও কোন কাজে গিয়ে লম্বা লাইন দেখে কোন এক দালালকে ৫০ টাকা ‘বখশিস’ দিয়ে সামনে ঢুকে যেতে চাইবেন না তো? ট্রেনে বিনা টিকিটে ধরা পড়ে টিকিট চেকারকে যৎসামান্য ‘মিষ্টি কেনা’র টাকা দিয়ে মুক্তি পেতে চাইবেন না তো? বা কোন সরকারী অফিসে আরও দশটা ফাইলের তলায় চাপা পরে থাকা আপনার ফাইলটা কাকতালীয়ভাবে উপরে আনার জন্য জনৈক কর্মচারীকে কিছু ‘হাতখরচা’? মেরিট লিস্টের একেবারে তলানিতে পড়ে থাকা আপনার পুত্র/কন্যাটিকে শহরের কোন এক নামী কলেজে ভর্তি করানোর জন্য কোন এক ক্ষমতাবান নেতার দ্বারস্থ হবেন না তো? আরও বলব? থাক। হ্যাঁ, এসবই অতি ‘খুচরো’ পাপ। কিন্তু পাপ তো! আর কে না জানে, খুচরো জমেই একদিন নগদ হয়। দূর্ভাগ্যবশতঃ এই পোড়া দেশে পাপীদের সংখ্যাটাও তো নেহাত কম নয়।
ছবির উৎস: লিঙ্ক |
আপনার আমার এই সমস্ত ‘খুচরো’ পাপ এতদিনে যে শিকড় গেড়েছে একা
আণ্ণার সাধ্য কি তা টেনে তোলেন? ডালপালা যতই ছাঁটুন, নতুন গজাতে আর কতদিন! যতদিন না
শিকড় উপড়ে ফেলছেন গাছ তো মরার নয়! আচ্ছা, একদিন একঘণ্টা বেশিক্ষণ লাইনে দাঁড়ালে কি
খুব বেশী ক্ষতি আপনার? বা, কোন কারণে টিকিট কাটতে না পারলে চেকারকে ঘুষ না দিয়ে না
হয় ফাইনটাই দিলেন। বাজে খরচা মনে করেই দিন না! অন্যান্য বাজে খরচা তো নেহাত কম করেন
না আপনি। নাহয় পরিচিত মহলে একটু হ্যাটা খেলেন! কিন্তু দেখবেন, সবার অলক্ষ্যে নিজের
পিঠটা একটু চাপড়ে নিতে ইচ্ছা করবে। কারও সুপ্ত বিবেকটাকে হয়তো নিজের অজান্তেই একটু
নাড়িয়েও দিতে পারবেন। আর আপনার ফাইল? কতদিন আর ফেলে রাখবে? একটু অপেক্ষা করতে হবে।
যেদিন আপনার দেখাদেখি বাকিরাও ওদের ‘হাতখরচা’ দেওয়া বন্ধ করবে, সেই দিনটার জন্য। ও।
আপনার তো আবার সময়ের অভাব! তার থেকে যদি কয়েকটা টাকা দিয়ে কাজটা মেটানো যায়.........।
তাহলে আবার বাড়ি ফিরে চিৎকার করে গলা ফাটান কেন? বিবেকটা একটু খুঁতখুঁত করতেই থাকে...তাই
না? তাই তো টিভিতে যেই আণ্ণাকে দেখলেন অমনি মনে হল, এই তো একটা মুরগি পাওয়া গেছে! এর
ঘাড়ে বন্দুক রেখে কর ফায়ার! বুড়ো হয়েছে। কোন কাজ তো নেই। নাহয় পুলিশের দুটো ডাণ্ডাই
খেল! আর কিছুদিন অনশনে থাকলেই বা কি হয়............ কাজ তো কিছু করতে হচ্ছে না। বাওয়ালটা
নাহয় আমরাই করলাম। কাজে ডুব দিয়ে বাওয়াল দিতে এদেশের পাবলিকের জুড়ি নেই। কি তাই তো?
একটু চুপ করে ভাবুন তো! ঐ ৭৪ বছরের বৃদ্ধ যদি সত্যিই স্বার্থহীনভাবে (আপাতত তাই ধরে
নিচ্ছি। মানুষের উপর বিশ্বাস রাখতে এখনও ইচ্ছা করে।) আপনার আমার ভবিষ্যৎ প্রজন্মের
কথা ভেবে এত কিছু করতে পারেন, আমরা কি পারি না শুধু নিজেদের মেরুদণ্ডটা একটু সোজা রেখে
চলতে! আর যদি আণ্ণাও না পারেন এ যাত্রা.........আপনার – আমার ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কিন্তু
জিজ্ঞাসা করবে, “পারো নি সে তো দেখতেই পাচ্ছি......... চেষ্টা করেছিলে?” তার চোখে চোখ
রাখতে পারবেন তো?
সম্পাদকের সংযোজন: এই লিঙ্কটি দেখুন, interesting!
http://www.readersdigest.co.in/anna-hazare