আমাদের বন্ধুমহলে ব্লগে লেখা নিয়ে যে craze শুরু হয়েছে তা নিয়ে
আমি কিছুদিন থেকেই হীনমন্যতায় ভুগছিলাম। সবাই অনেক কিছু লিখছে। কিন্তু আমার কলম (নাকি
keyboard?) থেকে
কিছুই বেরোচ্ছে না- কবিতা, আঁতেল, ‘চন্দ্রিল’- কোন type এর লেখাই আমার পক্ষে লেখা সম্ভব নয়। তাই কিছু গল্প শোনাব বলে ঠিক করলাম। তারপর সেটা নিয়ে এডিটর যা ইচ্ছে করুক
কিছুই বেরোচ্ছে না- কবিতা, আঁতেল, ‘চন্দ্রিল’- কোন type এর লেখাই আমার পক্ষে লেখা সম্ভব নয়। তাই কিছু গল্প শোনাব বলে ঠিক করলাম। তারপর সেটা নিয়ে এডিটর যা ইচ্ছে করুক
- কাটুক, ছাঁটুক, reject করুক......
ঘটনা: এক
আমি বহুবছর ধরে বেসরকারি সেক্টর-এ কর্মরত। মাইনেটাও বেশ মোটা
পাই। বাড়ি, গাড়ি সবই আছে। কিছুদিন আগে আমার শ্বশুরমশাই এলেন আমার বাড়ি। সরকারি চাকরি
থেকে সবে রিটায়ার করেছেন। ওনার মনে এমন একটি প্রশ্ন ঘোরে যেটা দু’টি নিষিদ্ধ প্রশ্নের
(মেয়েদের বয়স, ছেলেদের মাইনে) মধ্যে পড়ে। আমাকে অনেক ঘুরিয়ে জানতে চেয়েছিলেন- আমি বলি
নি- কি জানি কি মতলব।
তখন বঙ্গে সবে পরিবর্তন হয়েছে। খুব উৎসাহ নিয়ে মমতা’র বক্তব্য
শুনছিলাম টিভি-তে। তখন হঠাৎ করে শ্বশুরমশাই বললেন আমাদের ট্যাক্স দেওয়া ও সরকারের কাজ
না করা নিয়ে। আমিও খুব উত্তেজিত হয়ে বললাম- “হ্যাঁ প্রতিমাসে যে আমি ২৫০০০ টাকা ট্যাক্স
দিচ্ছি তাতেও সরকার আমার বাড়ির সামনে জল জমা আটকাতে পারল না”।
কথা বলার পর উনি মিনিট দুয়েক চুপ করে বসলেন। কিছুক্ষণ পর বললেন-
“বাবা তুমি বছরে ২০ লাখ পাও?”
আমি থ! জাস্ট ট্যাক্স থেকে ব্যাক ক্যালকুলেশন করে বের করে নিয়েছেন
আমার exact স্যালারি! এতটা তাও ঠিক ছিল,- পর মুহূর্তে বললেন- “বড্ড কম পাও বাবা, মোহিতের
ছেলে তো এখন ৪০ লাখ রোজগার করছে!”
ঘটনা: দুই
আমি ছুটিতে বাড়ি ফিরেছি। চাকরী করি সুইৎজারল্যান্ড-এ। একমাসের
ছুটিতে তিনজন বন্ধু মিলে আমরা বেড়াতে গেলাম তাজপুর সমুদ্রসৈকতে। তিন-চারটে ঘরওয়ালা
একটা হোটেলে উঠলাম। একদমই বাহুল্যবর্জিত। গ্রাম-এর মধ্যে ইলেকট্রিসিটি ও পৌঁছায়নি।
সেখানে কাজ করে মোট তিনজন- ম্যানেজার, কুক আর একজন যে বাকিসব করে। তৃতীয় ব্যক্তির সঙ্গে
আলাপ জমেছিল কারণ সেইই আমাদের মদ্যপানের জন্য যাবতীয় জিনিসপত্র জোগাড় করে দিয়েছিলো।
এনার নাম নারান। গ্রামের সরল সাদাসিধে মানুষ। হঠাৎ আমায় জিজ্ঞেস করলো- “দাদা, আপনারা
ইখানে কি পান? কি কি ভাল্লাগে আপনাদের ইখানে কি জানে?”
বললাম- “আমাদের ভালোই লাগে নির্জন সমুদ্র। আপনারা ছোট থেকে
সমুদ্র দেখেন বলে হয়তো আপনার এসব একঘেয়ে লাগে। কিন্তু আমাদের ভালোই লাগে।”
-“তা আমাদের বাংলায় সবথেকে সুন্দর জায়গা আপনার কি মনে হয়?”
-“দার্জিলিং পাহাড় বেশ সুন্দর লাগে।”
-“ও, সিঙ্গাপুর- উইখেনে।”
-অ্যাঁ-
-না, লোকজন ইখানে এসে বলে সিঙ্গাপুর খুব ভাল জায়গা- ওটা কি
দার্জিলিং এ?
-না, হ্যাঁ... মানে.........(কি বলব!)
-তা আপনি কোথায় কাজ করেন?
-(ইতস্তত করে) সুইৎজারল্যান্ড (মনে মনে ভাবলাম কি জানি এবার
কি বলবে)
-সে তো বহুদূর শুনেছি!!
-হ্যাঁ
-কিভাবে যান?
-প্রথমে তো দিল্লি যাই......(বলতে চাইছিলাম দিল্লি থেকে
change করি)
-অ্যাঁ, দিল্লি- সে তো অনেক দূর মশাই
-হ্যাঁ দিল্লি যাই, তারপর সেখান থেকে হাঁটা পথ... (মনে হল বেশী
বোঝানোর থেকে এখানেই শেষ করা ভালো)।